ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মমতার প্রতি শাহরিয়ার কবিরের আহ্বান

রক্তিম দাশ, ব্যুরো চিফ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১২
মমতার প্রতি শাহরিয়ার কবিরের আহ্বান

কলকাতা: তিস্তার পানি বন্টন চু্ক্তি না হওয়ার কারণে আওয়ামী লীগ সরকার প্রবল বিরোধিতার সম্মুখিন। আর এই কারণে সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে ৭১ এর পরাজিত শক্তি।

তাই শনিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় এক আলোচনা সভায় মমতার কাছে বাংলাদেশ-কে নতুন করে পাকিস্তান করতে না দেওয়ার আহ্বান জানালেন শাহরিয়ার কবির।

এদিন কলকাতার আইসিসি আরের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মিলনায়তনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪১ বছন উপলক্ষে ‌‌ ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতি ‘নবপ্রেক্ষিতে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী বন্ধন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করে।

ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সামসুল হক টুকু, সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, সাবেকমন্ত্রী প্রবোধ চন্দ্র সিংহ, বিধায়ক পরশ দত্ত, বাংলা দৈনিক স্টেটশম্যানের সম্পাদক মানস ঘোষ, কলকাতার উপ-হাইকমিশনার তারেক মুহম্মদ আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।

এদিনের অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকারের ২ মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি ও মানস ভুইঁয়ার আসার কথা থাকলেও তারা আসেননি।

এদিন সাবেকমন্ত্রী প্রবোধ চন্দ্র সিংহ দু`দেশের মৈত্রীর ক্ষেত্রে বর্তমানে তিস্তা, বাণিজ্য ঘাটতি ও ছিটমহল সমস্যাকে উল্লেখ করে বির্তক উস্কে দেন।

শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘তিস্তার ইস্যুতে দু`দেশের সর্ম্পকের চিড় ধরেছে। এই ভুল বোঝাবুঝির কারণে জামাত-বিএনপি সুযোগ পেয়ে গেছে। আমরা মমতা ব্যানার্জিকে মুখ্যমন্ত্রী নয় একজন সুহৃদ হিসাবে দেখি। কিন্তু আমরা বিব্রত তার পদক্ষেপে। তার ওপর সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যায় আরো জটিলতা বেড়েছে। ’

ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্বর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এমন কিছু করবেন না যাতে ২০১৪ সালে মহাজোট সরকার পরাজিত হয়। তাহলে ২০০১ এ বিএনপি-জামাত জোট যা করেছে তার দশগুন করবে। ’

তিনি বলেন, ‘আমরা তার কাছে (মমতা) রাষ্ট্রনায়োকচিত প্রজ্ঞা আশা করি। আপনি বাংলাদেশকে পাকিস্তান করতে দেবেন না। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মতো বাংলাদেশের মানুষের কাছে আপনার দায় আছে। ’

মানস ঘোষ বলেন, ‘আমি শাহরিয়ার কবিরের বক্তব্যকে সমর্থন করেই বলছি, বাংলাদেশ আজ গভীর সঙ্কটে। এপারের বাঙালিরা তা জানেনা। কলকাতার কোন বড় কাগজ তা ছাপে না। ’

তিনি বলেন, ‘প্রচুর ভাল কাজ করলেও আওয়ামী লীগের মধ্যে শেখ হাসিনা ছাড়া আর কোন প্রচারের লোক নেই। ’

তিনি আরও বলেন, এটা সত্যি যে তিস্তার কারণে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যাকফুটে আওয়ামী লীগ। আমি আশাবাদি মমতা এটা বুঝবেন। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে গেলে এই বছরই তিস্তা চুক্তি করতে হবে।

সামসুল হক টুকু বলেন, ‘আমি এনাদের বক্তব্য সমর্থন করি। তবে আশাবাদি আমরা এটা কাটিয়ে উঠতে পারবো। ’

তৃণমুল বিধায়ক পরশ দত্ত বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী আলাদা করে ভাবতে হতো না যদি না পাকিস্তান থাকতো। এখন চীন সবচেয়ে বড় বিপদ। ব্রহ্মপুত্রের জল কেড়ে নিচ্ছে ওরা। এদের বিরুদ্ধে ভারত-বাংলাদেশকে রুখে দাঁড়াতে হবে। ’

তিনি বলেন, তিস্তার সমাধান হবে। আমার নেত্রী (মমতা) পশ্চিমবঙ্গকে যতটা ভালোবাসেন ঠিক ততটাই বাংলাদেশকে ভালোবাসেন। এখন অনেক জল কম আছে তাই এখনই চুক্তি করা যাচ্ছে না। এনিয়ে দু`দেশের আধিকারিক মহলে সমস্যা আছে। তারাই চাইছিলেন দ্রুত চুক্তি করতে। এটা হলে যারা এখন চুক্তি হয়নি বলে সরকারকে দোষ দিচ্ছে, তারাই তখন বলতো ভারত জল কম দিয়েছে। মৈত্রীর জন্য জল কোন বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।

বাংলাদেশ সময়: ০১৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩১,২০১২

সম্পাদনা: নজরুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।