কলকাতা: সম্প্রতি কলকাতায় শেষ হয়েছে বাংলাদেশ বইমেলা। এবার শুরু হয়েছে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব।
একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশকেই চারটি ছবির জায়গা দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে দারুণ খুশি কলকাতার সিনেপ্রেমীরাও।
বিশেষ করে মেজবাউর রহমান পরিচালিত ‘হাওয়া’সিনেমার জয়জয়কার।
সম্প্রতি কলকাতায় ৪র্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবের পর কলকাতা ফ্লিম ফেস্টিভালেও আলোড়ন তুলেছে ‘হাওয়া’। পশ্চিমবঙ্গের ৩৪ টি হলে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি।
ভারতের অন্যান্য রাজ্যে মুক্তি পাবে ৩০ ডিসেম্বর। যা নিয়ে খুশি অভিনেতা থেকে ছবির প্রযোজক ও পরিচালক।
অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবে আমি একা এসেছিলাম। এবার কলকাতায় ছবির সবাই আছেন। তাই এবার বেশি ভালো লাগছে। বাংলাদেশের সিনেমা কলকাতা এবং সারা ভারতবর্ষে, এভাবে কখনো রিলিজ হয়নি। আমার মনে হয় এটাই বাংলা সিনেমার জয়। আমাদের বাংলা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ুক। কারণ, আমরা সব সময় চাই বাংলা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ুক।
পরিচালক মেজবাউর রহমান বলেন, কলকাতা দর্শকের প্রতি আমার একটা আলাদা অনুভূতি আছে। আমি ছোটবেলা থেকে শহরটাকে চিনি। নবারুণ ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে কবীর সুমন, রামকিঙ্কর থেকে গণেশ পাইন সকলেই আমার মনের মধ্যে। ছোটবেলা থেকে কলকাতার অলিগলির নাম জেনে গেছি সাহিত্য থেকে। সেই শহরে সিনেমা হলে হাওয়া দেখানো হচ্ছে। পাশাপাশি কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভালে এসেছে এটা আমার জন্য খুবই আনন্দের।
ছবির প্রযোজক অজয় কুন্ডু বলেন, কলকাতায় বাংলাদেশের সংস্কৃতি নিয়ে আমরা রীতিমতো একটা উৎসব করছি। যে উৎসবে নন্দনে শো হচ্ছে পাশাপাশি কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সিনেমা হলে ছবিটি রিলিজ হয়েছে। এটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের এবং অনেক গর্বের।
কলকাতার চলচ্চিত্র উৎসবে ঘিরে সেজে উঠেছে নন্দন রবীন্দ্রসদন চত্বর। আর তাই উৎসবের উপভোগ পেতে অনেকেই কলেজ এবং কাজের ফাঁকে একবার ঢু মেরে যাচ্ছেন নন্দন চত্বরে।
শনিবার ছুটির দিনে বাড়তি ভিড় চোখে পড়ার মতন। অনেকে নন্দনে বাংলাদেশি সিনেমা দেখতে আসেন।
কলকাতাবাসী সুপ্রকাশ দত্ত বলেন, আমি বাংলাদেশের ভালো সিনেমার দারুণ ফ্যান। বাংলাদেশের নাটক নিয়মিত দেখি। আমি চাই বাংলাদেশের সিনেমা কলকাতায় আরও বেশি করে দেখানো হোক।
কলকাতার নাটক চর্চা করেন সাগ্নিক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সিনেমার দুজন অভিনেতার নাম না করলে বর্তমানে বাংলাদেশ সিনেমা নিয়ে আলোচনা করা যায় না। এক, চঞ্চল চৌধুরী দুই, মোশারফ করিম। এই দুইজন কি লেভেলের অভিনেতা তা, চঞ্চলের হাওয়া দেখে যেমন বোঝা যায় আর মোশারফ করিমের বেশ কিছু নাটক তো আছে। এতো সুন্দর এতো স্বাভাবিক অভিনেতা ওনারা, এটাই তো দর্শকরা চায়, একজন পরিচালক চায়। যেটা উত্তম কুমার দেখিয়ে গেছেন, কিভাবে স্বাভাবিক অভিনয় করতে হয়। তো এই বাংলাদেশের চলচ্চিত্রগুলো কলকাতায় মুক্তি পাচ্ছে, আমি আশা করি আগামী দিনে বাংলাদেশের থেকে আরও ভালো চলচ্চিত্র আসুক। শহরবাসী বাংলাদেশকে চেনার এটা ভালো একটা মাধ্যম। এজন্য বাংলাদেশ সরকারকে আমি ধন্যবাদ জানাই।
গত ১৫ ডিসেম্বর ২৮তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব উদ্ধোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিগবি অমিতাভ, বলি বাদশা শাহরুখ খান, প্রসেনজিৎ, চঞ্চল চৌধুরীসহ একঝাঁক তারকা উপস্থিত ছিলেন এদিন।
এবারে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে মোট ৪২টি দেশের ১৭৮টি ছবি প্রদর্শিত হবে নন্দনসহ কলকাতার ১০টি প্রেক্ষাগৃহে। উৎসব চলবে আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আর তাই শীত মৌসুমে উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছেন বঙ্গবাসী।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২২
ভিএস/এসএএইচ