ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

১৪৯ পরিবারের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিলো ছিটমহলবাসী

শিলিগুড়ি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৯ ঘণ্টা, মে ৪, ২০১২

শিলিগুড়ি: ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি মেনে ভারত ও বাংলাদেশের ছিটমহল বিনিময় হলে বাসিন্দা আদানপ্রদান বা পুনর্বাসনের সমস্যা নিজেরাই মিটিয়ে ফেলার আশ্বাস দিয়েছে ছিটমহলবাসী।

আন্তর্জাতিক এই চুক্তির বাস্তবায়ন হলেই নাগরিকত্বই পাল্টে যাবে ভারতীয় ছিটমহলের ৩৭ হাজার এবং বাংলাদেশি ছিটমহলের ১৪ হাজার বাসিন্দার।



কিন্তু বাসিন্দারা যদি এই নাগরিকত্ব পরিবর্তনে রাজি না হন? ১৯৭৪-এর এই চুক্তিতে বলা হয়েছে, তাঁরা চাইলে আগে যে দেশের নাগরিক ছিলেন, সে দেশে পুনর্বাসন পেতে পারেন।

আর জটিলতা শুরু এই বিষয়টি থেকেই। ছিটমহল বিনিময় হলে কত জন নাগরিক এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে চান, ছিটমহলবাসীর সংগঠন ‘ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি’-র কাছে তার একটা সাধারণ হিসাব জানতে চায় বাংলাদেশ প্রশাসন।

এর পরেই কমিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষায় নামে। সমীক্ষা হয় ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশি ছিটমহলগুলিতেও। দেখা যায়, বাংলাদেশের মধ্যে থাকা ভারতীয় ছিটমহলগুলির ১৪ হাজার বাসিন্দার মধ্যে মাত্র ৭৪৩ জন বাংলাদেশের নাগরিকত্বের বদলে ভারতে পুনর্বাসন চান।

আর ভারতের মধ্যে থাকা বাংলাদেশি ছিটমহলগুলির ৩৭ হাজার বাসিন্দার এক জনও বাংলাদেশে ফিরতে চান না।

বাংলাদেশে ছিটমহল বিনিময় কমিটির সম্পাদক গোলাম মুস্তাফা জানিয়েছেন, তারা ১৬২টি ছিটমহলের প্রতিটি পরিবারের কাছে গিয়েছিলেন। ১৭টি ভারতীয় ছিটমহলের ১৪৯টি পরিবার ভারতে ফিরতে চান।

মুস্তাফা জানিয়েছেন, ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের কাছে এরই মধ্যেই এই রিপোর্ট পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার একযোগে ভারতে কোচবিহার জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশে পঞ্চগড়, লালমণির হাট ও কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের হাতে এই রিপোর্ট তুলে দেওয়া হবে।

গত বছরই প্রথম দুই ছিটমহলে সরকারি ভাবে জনগণনা করা হয়। সমন্বয় কমিটির সহযোগিতায় মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই সে কাজ সারা হয়।

ভারতে ছিটমহল বিনিময় কমিটির সহসম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বাংলানিউজকে বৃহস্পতিবার বলেন, ‘আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, পুনর্বাসন চাওয়া ছিটমহলবাসীর দায়িত্ব কে নেবে, কেন্দ্রের কাছে সে প্রশ্নেরই জবাব চেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। ’

তিনি বলেন, ‘তার পরেই ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশি ছিটমহলের বাসিন্দারা সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে বসে না থেকে নিজেরাই বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ছিটমহল থেকে আসা ১৪৯টি পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ’

তিনি আরো বলেন, ‘তাদের জন্য ৭টি ছিটমহলে ২৩ একর জমিও নির্দিষ্ট করে ফেলেছে সমন্বয় কমিটি। ১৩টি ছিটমহলের বাসিন্দা এই বসত জমি দান করেছেন। এই জমিতে তারা বাড়ি করলে অর্থ-সাহায্য দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। ’

দীপ্তিমান বলেন, ‘ছিটমহল বিনিময়ের জন্য এখানকার বাসিন্দারা কতটা মরিয়া, এই পদক্ষেপই তার প্রমাণ। দু’দেশের সরকার এ বার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি বাস্তবায়নে তৎপর হোক। ’

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৫ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১২
আরডি/ সম্পাদনা: জাকারিয়া মন্ডল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।