কলকাতা থেকে: পশ্চিমবঙ্গে ভোটে হেরে সদ্য সাবেক হওয়া বাম জোট সরকারের মন্ত্রীরা এরই মধ্যে পুরনো পেশায় ফিরতে শুরু করেছেন। রাজনীতির বাইরে যারা অন্য পেশা থেকে এসেছিলেন, তারা এরই মধ্যে মন্ত্রী হওয়ার আগে যা যা করতেন তাই করা শুরু করে দিয়েছেন।
বিশেষ করে শিক্ষক, চিকিৎসক ও আইনজীবী মন্ত্রীরা ফিরে গেছেন তাদের পুরনো পেশায়।
২০০৬-২০১১ মেয়াদে তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী ছিলেন দেবেশ দাশ। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক। বুদ্ধদেবের মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লিয়েন নেন।
দেবেশ দাশ এবারের বিধানসভা নির্বাচনে মধ্য কলকাতার এন্টালি আসন থেকে পরাজিত হয়েছেন। এরই মধ্যে তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন।
তথ্য ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ছিলেন সৌমেন্দ্রনাথ বেড়া। মন্ত্রিসভায় ঢোকার আগে তিনি ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক।
হুগলির পুরশুড়া আসনে তৃণমূল প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়ে সৌমেন্দ্রনাথ বেড়া এরইমধ্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি শুরু করেছেন।
বামফ্রন্ট সরকারের সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন আব্দুস সাত্তার। মন্ত্রী হওয়ার আগে তিনি ছিলেন কলকাতার ‘নব বালিগঞ্জ মহাবিদ্যালয়ে’র বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষক।
উত্তর ২৪ পরগণার আমডাঙা আসনে পরাজিত হয়ে তিনি এরইমধ্যে স্কুলেও যাওয়া শুরু করেছেন।
বুদ্ধদেবের মন্ত্রিসভার আরেক সদস্য শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায় ছিলেন অসামরিক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। অবশ্য গত ১৫ ধরেই মন্ত্রী ছিলেন শ্রীকুমার। এবারের নির্বাচনে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহাটা আসন থেকে পরাজিত হন তিনি।
তিনি মালদহ কলেজের গণিত বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন দীর্ঘদিন। কলেজ ও এলাকার ছাত্রদের কাছে ‘ভালো’ শিক্ষক হিসেবে তার সুনাম রয়েছে। তাই এলাকাবাসী ও কলেজ কর্তৃপক্ষ অনুরোধ করেছে, শ্রীকুমারবাবু যেন আবারো কলেজে এসে শিক্ষার্থীদের অঙ্ক পড়াতে শুরু করেন!’
শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায় তাই ফিরছেন তার নিজ কলেজে, পুরনো পেশায়।
বাম সরকারের মন্ত্রী ছিলেন মোর্তজা হোসেন। উত্তর ২৪ পরগণার দেগঙ্গা আসনে তিনি পরাজিত জন।
মন্ত্রী হওয়ার আগে মোর্তজা হোসেন উত্তর ২৪ পরগণার বাদুড়িয়ার বাগজোলা গ্রামে চেম্বার খুলে নিয়মিত রোগী দেখতেন। মন্ত্রিত্বের ৫ বছর অবশ্য তিনি প্র্যাকটিস করেননি।
মোর্তজা হোসেন এলাকাবাসীকে জানিয়েছেন, তিনি খুব শিগগির সকালে একবেলা করে রোগী দেখা শুরু করবেন।
বুদ্ধদেবের মন্ত্রিসভার আইন ও বিচারবিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন রবিলাল মৈত্র। এবারের নির্বাচনে পশ্চিম মেদিনীপুরের গোপীবল্লভ আসন থেকে পরাজিত হন তিনি।
পেশায় আইনজীবী রবিলাল আবারো পুরনো পেশায় ফিরবেন। কলকাতা হাইকোর্টে গ্রীষ্মকালীন অবকাশ শেষে তিনিও ফিরে যাবেন কালো গাউন পরে। বাড়িতেও চেম্বারে মক্কেলদের আইনি পরামর্শ দেওয়া শুরু করবেন। যা মাঝের ৫ বছর হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১১