ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

বিহার ভোটের ফল নিয়ে অঙ্ক শুরু পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১৫
বিহার ভোটের ফল নিয়ে অঙ্ক শুরু পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে

কলকাতা: বলা হয় রাজনীতিতে কোন স্থায়ী বন্ধু এবং শত্রু হয় না। খানিকটা সেই রকমই প্রবণতা দেখা গেল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে।

বিহারে নীতিশ কুমার আর লালু প্রসাদের জয়ে একই সঙ্গে খুশি প্রকাশ করলেন রাজনীতির বিপরীত মেরুতে অবস্থান করা সিপিএম এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিহারে ২৪৩ টি বিধান সভা আসনের মধ্যে  বিজেপি এবং তার সঙ্গী দলগুলি মিলে পেয়েছে মাত্র ৫৯টি আসন যেখানে ‘মহাজোট’ পেয়েছে ১৭৮টি আসন। ৬টি আসন পেয়েছে অন্যান্য প্রার্থীরা।

যেমন আগেই আন্দাজ করা হয়েছিল বিহারের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল যথেষ্ট আলোড়ন ফেলবে আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন হতে চলা রাজ্যগুলিতে। ঠিক সেই ভাবে বিহারে নীতিশ কুমার এবং লালু প্রসাদের মহাজোটকে স্বাগত জানিয়েছে একদিকে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস অন্যদিকে বিরোধী দল সিপিএম।

দুই দলের তরফ থেকেই নীতিশ কুমার এবং লালু প্রসাদকে অভিনন্দন জানা হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে এই নির্বাচনের ফলাফল ভারতীয় রাজনীতিতে প্রাদেশিক দলগুলির শক্তির আরও একটি প্রমাণ পাওয়া গেল। এই কারণেই ভারতের প্রায় সব কটি বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দল এই ফলাফলকে স্বাগত জানিয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও প্রকাশ্যে এই জয়কে স্বাগত জানিয়েছেন দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এই প্রসঙ্গে অবশ্যই আবার ও ভারতের রাজনীতিতে প্রাদেশিক দলগুলির প্রাসঙ্গিকতা উঠে আসছে।

অন্যদিকে আলোচনা শুরু হয়েছে ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভার নির্বাচনের বিধেয় নিয়ে। খুব স্বাভাবিক ভাবে এই ফলাফল উৎসাহিত করেছে পশ্চিমবঙ্গে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। এর একটি কারণ যেমন বিহারে ‘মোদি হাওয়া’ ধাক্কা খাওয়া তেমন অপর কারণে প্রাদেশিক দলগুলির ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায়।

যদিও বিহারের মতো পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি বিরোধী সব দলের একটি জোটে আসার কোন সম্ভাবনা নেই। তবুও ২০১৪ সালের ‘মোদি হাওয়া’ স্তিমিত সে কথা অবশ্যই খুশি করেছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলকে।

যদি পাশের রাজ্যে বিহারের এই প্রবণতা পশ্চিমবঙ্গেও অব্যাহত থাকে তবে ২০১৪ সালে হারানো জমি কিছুটা ফেরত পাবে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।

অন্যদিকে বামেদের খুশির কারণ একটু আলাদা। ২০১৪ সালের বিজেপি-এর উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে ভোট কমেছিল বামেদের। বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছিল বিজেপি-এর ভোট বেড়েছিল বামেদের ভোট ব্যাঙ্কে ধাক্কা মেরেই। সেক্ষেত্রে আগামী ২০১৬ নির্বাচনে বামেদের ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও ভালো ফল করার একটা আসার আলো দেখা দিচ্ছে।

বিহারে বিরোধী জোটে থাকা জাতীয় কংগ্রেসেরও খুশি হবার কারণ আছে। গোটা দেশে মোদি হাওয়ায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তারা। ‘মোদি হাওয়া’-এর জোর কমলে আখেরে তাদের লাভ বলে মনে করছে জাতীয় কংগ্রেস।

যদিও রাজনীতিতে বলা হয় জনতার রায় সবসময়ই অনিশ্চিত। তাই প্রতিটি নির্বাচনেই আলাদা আলাদা প্রবণতা পাওয়া যায়। তবুই রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এইটুকু খুব সহজেই বলা যায় বিহারের ভোটের ফল নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি যথেষ্ট আন্দোলিত। তবে এই ফলাফল সঠিক ভাবে কার সুবিধা করবে সেটা বলার সময় জন্য এখন অপেক্ষা করতে হবে প্রায় ছয় মাস।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৫
ভি.এস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।