ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মায়াবতী সিকিমের উপত্যকা জীবন

মাজেদুল নয়ন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৫
মায়াবতী সিকিমের উপত্যকা জীবন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

গ্যাংটক থেকে ফুয়েনতসলিংয়ের পথে: এখানে সকালে হাড়কাঁপুনি শীত। মোটা জ্যাকেট আর মাথায় টুপি, হাতে গ্লাভস পরেই শীত ঠেকাচ্ছে মানুষ।



হিমালয়ের পাদদেশে তিব্বত ঘেঁষা ভারতের প্রদেশ এটি। বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ছোট্ট এ প্রদেশটি। এখানে মোড়ে মোড়ে পানাহারের দোকান থাকলেও ধূমপানে কিন্তু বেশ কড়াকড়ি।

সিকিমের মানুষের জীবনমানও বেশ আধুনিক। সকালে স্কুল বা কলেজে যাওয়া শিক্ষার্থীদের আধুনিক পোশাকে বোঝা যায় এরা স্বতন্ত্র। এখানে সালোয়ার কামিজ বা শাড়ি পরিহিত নারীর দেখা মিলবে না। বরং জিন্স, থ্রি কোয়ার্টার, স্কার্ট আর শার্ট বা টি-শার্ট পরা নারীই বেশি। সঙ্গে থাকা ভারতীয় রাইডাররা সবাই একমত, সিকিমের মেয়েরা পৃথিবীর যে কোনো কোনার মেয়েদের চেয়ে আকর্ষণীয়!

হাজার মিটার উঁচু পাহাড় ঘুরে ঘুরে গড়ে উঠেছে জনপদ। পাহাড়ের গায়ে যেন আটকে আছে ঘর-বাড়িগুলো। বাড়ির ছাদ কৌণিক। বরফ যেন আটকে না থাকে। তাই ইট সিমেন্টের ছাদ হলেও, এর ওপরে বিশেষ ছাদ নির্মাণ করা হয়। ডিসেম্বরের শুরু থেকেই এখানে তুষার পড়তে থাকে।

বাংলাদেশের পাহাড়ি মানুষের মতোই পেছনে বড় ঝুড়ি নিয়ে পাহাড়ে ওঠে নামে তারা। পিঠে লাকড়ি নিয়ে পাহাড় থেকে নেমে আসেন।

পাহাড়ের উপত্যকায় বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ধানের চাষ। উৎপাদন হচ্ছে অন্যান্য ফসল আর মশলাজাতীয় খাবার।

এখন ট্যুরিস্ট সময়। তাই জিপগুলোর ওপরে লাগেজ ভরা। এখানে শহরের হোটেলগুলো সব ভর্তি ট্যুরিস্টে।

সিকিমকে উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিম এ চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। চারটি দরজা রয়েছে সিকিমে প্রবেশের।

এখানে একটিই রাস্তা। যেটা পুরো সিকিমকে কাভার করেছে। রাস্তাগুলো পাহাড়ের উপরে নয়, বরং পাহাড়ের ঢালে। এক পাশে তিস্তার হ্রদ, পাথরের গায়ে ছিটকে পড়ছে স্রোত।   অন্যপাশে সুউচ্চ পাহাড়। আর কয়েকশ মিটার পরপরই পাহাড়ের গাঁ বেয়ে ঝরে পড়ছে ঝরনার পানি। অপরূপ সৌন্দর্যে আবিষ্ট পুরো শহর। মায়াবতী বলতেই হবে সিকিমকে।

এখানে লোকাল বাসগুলো বেশ ছোট। সেগুলো সিকিম ট্রান্সপোর্ট অথরিটির অধীনে। তবে সংখ্যায় কম।

জিপ গাড়িই বেশি ব্যবহৃত হয় লোকাল ট্রান্সপোর্ট হিসেবে। পেছনে বসা থাকে হেলপার, টাকা গুনে গুনে নেয় যাত্রীদের কাছ থেকে। তবে সকালে অফিস আওয়ারে বেশ ট্রাফিক মোকাবেলা করতে হলো। সরু পথে ধীরে ধীরে যেনো ঠেলে চলছে গাড়িগুলো।

পাহাড়ের ঢাল বেয়ে উঠছে-নামছে এখানকার মানুষ। হিমাচলের অর্জুন জানালেন, সিকিম প্রদেশের আলাদা কিছু রীতি রয়েছে। যেটা সবাইকে মানতে হয়। ভারতের অন্য প্রদেশের মানুষকেও অনেক সময় সিকিমে প্রবেশে বাধার সম্মুখীন হতে হয়।

অর্জুন জানান, সিকিমের জনসংখ্যা ৫ লাখ ৪০ হাজার ৪৯৩ জন। সিকিম ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি রাজ্য ও উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্র। ভারতের আয়তনে দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম প্রদেশ এটি।

১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর, সিকিমে রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রচুর জনমতের পরও, ভারতভূক্তি হয়নি। কিন্তু পরে জওহর লাল নেহেরুর ইচ্ছাতে সিকিমকে ভারতের সংরক্ষিত ক্ষেত্রে পরিণত করা হয়। যার ফলে ভারত সিকিমের সংরক্ষণের দায়িত্ব পায়। পরে ১৯৭৫ সালে প্রচণ্ড রায়ট শুরু হয় এবং পূর্ণ জনমতের পর ১৬ মে ১৯৭৬ সালে সিকিমকে ২২তম ভারতীয় পূর্ণ অঙ্গরাজ্যের সম্মান দেওয়া হয়।

সিকিমের অধিবাসীরা অর্থাৎ, লেপচা ও ভুটিয়ারা বৌদ্ধধর্মাবলম্বী। এখানে মূলত মহাযান মতে তিব্বতি বৌদ্ধধর্ম চর্চিত হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৫
এমএন/এএ

** বাই বাই সিকিম....

** শুধু র‌্যালি নয়, বন্ধুত্বের বিনিময়
** আর যদি কখনো যাও আমার কালিম্পং...
** রাইডারস আর ওয়ে টু গ্যাংটক
** দীর্ঘতম পথ পাড়ি দিয়ে শিলিগুড়িতে রাইডাররা
** হাওটায় সূর্যস্নান
** নেতা হতে আসতে হবে গান্ধী ময়দান
** ছট পূজার মধ্যে গঙ্গা পেরোলো র‌্যালি
** র‌্যালি পৌঁছালো পাটনা
** বিহারের পথে ধাবায় চা
** দ্রৌপদী মুরমু’র অাশীর্বাদ নিয়ে রাঁচি ছাড়লো র‌্যালি
** ওড়িষ্যা-ঝাড়খণ্ডের ঐতিহ্যবাহী ৫ নাচ (ভিডিও)
** ৫৩৪ কিমি পাড়ি দিয়ে র‌্যালি এখন রাঁচিতে
** মহারাজার পথে পথে সংবর্ধনা
** তাদের জন্য যত ভক্তি
** ভুবনেশ্বর থেকে রাঁচির পথে মোটর র‌্যালি
** মন্দিরের শহরে...
** ওড়িশায় বিবিআইএন র‌্যালির উদ্বোধন
** পুরির বাতাসে....
** ১৯ দিনে ৩ দেশে ৪২২৩ কিলোমিটার মোটর র‌্যালি
** বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল মৈত্রী মোটর র‌্যালিতে মাজেদুল নয়ন
** আই.আই..আই...চেন্নাই এক্সপ্রেস!
** রামহরি মিস্ত্রী লেনের কথা
** রাস্তায় দাঁড়িয়ে স্যান্ডউইচ আর ভেলপুরি
** নিউমার্কেটে হ্যাপি দিওয়ালি
** পুরুষ প্রবেশ নিষেধ
** ‘আমি সীমানায় বিশ্বাসী নই’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।