ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

'বাঙ্গালিয়ানা ও বৈশ্বিকতা' নিয়ে আলোচনা জমে উঠল কলকাতা বইমেলার মঞ্চ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৬
'বাঙ্গালিয়ানা  ও বৈশ্বিকতা' নিয়ে আলোচনা জমে উঠল কলকাতা বইমেলার মঞ্চ ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কলকাতা: বাঙলা ভাষার শুদ্ধতা রক্ষা করার দায় কি সঠিক ভাবে পালন করে আপামর বাঙালি। নাকি বাঙলা ভাষার সঙ্গে মিশছে অন্য ভাষা।



আগামী দিনে কি বাংলাভাষা তার শুদ্ধতা বজায় রাখতে পারবে? নাকি নানা ভাষা মিশে একটা সম্পূর্ণ অন্য রূপ নেবে বাঙলা ভাষা।

মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) কলকাতা বইমেলার এসবিআই অডিটোরিয়ামে জমজমাট আলোচনায় কখনও উত্তাপ বাড়ল কখনও কমল। যুক্তি পাল্টা যুক্তির নির্যাস থেকে যেটা বেড়িয়ে এলো সেটা এক মাত্রিক সিদ্ধান্ত নয়। বরং বলা ভালো বাঙলা ভাষা নিয়ে এ এক বহুমাত্রিক চিন্তা।

শুধু বাঙলা ভাষা নয় বইয়ের পাইরেসি নিয়েও একই মঞ্চে উঠে এলো অভিযোগ। এই অভিযোগের জবাব দিলেন কলকাতা বইমেলার অন্যতম সংগঠক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। অভিযোগ ছিল বাংলাদেশের কিছু বই কলকাতা বই মেলায় পাইরেসি করে বিক্রি হচ্ছে।

এর জবাবে ত্রিদিব বাবু বলেন, একই লেখকের একই লেখা ভিন্ন প্রকাশক ছাপালে তাকে পাইরেসি বলা যায় না। ধরে নেওয়া হয় দুই প্রকাশকের কাছেই লেখকের অনুমতি আছে। তিনি এর সঙ্গে যোগ করেন এর পরেও যদি কেউ মনে করেন কোন বইতে পাইরেসি হচ্ছে, এবং সেই বই কলকাতা বইমেলায় বিক্রি হচ্ছে তবে সেটা আলোচনা সভায় না বলে সঠিক পদ্ধতিতে অভিযোগ জানালে সে ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

'বাঙ্গালিয়ানা  ও বৈশ্বিকতা' বিষয়ে বলতে উঠে নাট্যকার তথা পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, কোট প্যান্ট পরে ধুতি পাঞ্জাবীর বাঙলা বললে সেটা মোটেই মানানসই হবে না। বাঙলা ভাষার সঙ্গে বহু আগে থেকেই আরবি, ফার্সি ইত্যাদি ভাষা মিশে ছিল। বর্তমানে যদি অন্য কোন ভাষা মেশে তাকে জোর করে আটকানো যাবে না। ব্রাত্য বসু বলেন কোন বাঙালি যদি কলকাতা বইমেলায় এসে বাঙলা বই না কিনে ইংরেজি বই কেনেন , সেটা তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা এবং পছন্দ, তাকে জোর করে বাঙলা বই কিনতে বাধ্য করা সম্ভব নয়।

সমরেশ মজুমদার বলেন , আমাকে কলকাতার লেখক বলা হয়েছে। আমি কলকাতার লেখক নই, পৃথিবীর যে প্রান্তে বসে কোন বাঙালি আমার বই পড়েন আমি সেই বাঙালির লেখক। তিনি বলেন বাঙলা ভাষা নিয়ে দুশ্চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। ভাষা তার নিজের গতিতে এগোবে বা পিছোবে।

কলকাতা বইমেলার অন্যতম আয়োজক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়  কলকাতা বইমেলায় বাঙলা ভাষার হেডিং, ব্যানার কম এই অভিযোগের জবাবে বলেন, মনে রাখতে হবে কলকাতা বইমেলায় নানা ভাষার বই পাওয়া যায়। তবে হয়তো বেশি রাখলে ভালো হতো। বাস্তবিক ক্ষেত্রেও দেখা গেছে কলকাতা বই মেলায়, যে বাঙলা ভাষায় কথা বলেন এমন মানুষের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য ভাষায় কথা বলেন এমন পাঠকের সংখ্যাও যথেষ্ট।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন আকতারী  মমতাজ সচিব সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। আরও উপস্থিত ছিলেন ইমদাদুল হক মিলন, ব্রাত্য বসু, ড. আবদুল নাসের চৌধুরী (সিনিয়র সচিব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়), অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, সমরেশ মজুমদার এবং কলকাতায় বাংলাদেশের উপ হাইকমিশনার জকি আহাদ, কলকাতা উপ হাইকমিশনের কর্মকর্তারা এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৬
ভিএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।