ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

কলকাতা বই মেলায় বাংলাদেশ দিবসের আলোচনা সভা

রক্তিম দাশ, কলকাতা ব্যুরো চিফ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১২
কলকাতা বই মেলায় বাংলাদেশ দিবসের আলোচনা সভা

কলকাতা: ৩৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় শনিবার পালিত হল বাংলাদেশ দিবস। এই উপলক্ষে বইমেলার ইউবিআই অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘বিজ্ঞানমনস্ক প্রজন্ম গঠনে গ্রন্থ: পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনায় সভা অনুষ্টিত হল।



এদিনের আলোচনা সভার আয়োজক ছিল কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপহাইকমিশন। মূল প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিদ্যার অধ্যাপক ও ইউজিসি প্রফেসার ড. অজয় রায়। প্রবন্ধটির উপর আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, বিশিষ্ট তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বর, বাংলাদেশ সংস্কৃতি মন্ত্রকের উপঅধিকর্তা মোশারফ হোসেন, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য  দিলীপ সিনহা ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য ধ্রুবজ্যোতি চ্যাটার্জি। আলোচনা সভার সভাপতি ছিলেন কলকাতার ভারপ্রাপ্ত উপহাইকমিশনার তারেক মো: আরিফুল ইসলাম।

এদিনের মূল প্রবন্ধ পাঠ করতে গিয়ে অধ্যাপক ড. অজয় রায় বলেন, বিজ্ঞানমনস্ক হতে গেলে বিজ্ঞানি হতে হবে এমন কোন কথা নেই। তাকে হতে হবে যুক্তিবাদী ও মুক্তবুদ্ধির মানুষ। আর তার জন্য প্রয়োজন গ্রন্থের।
এদিন তিনি বিট্রিশ ভারতে মুসলিম সমাজকে শিখা গোষ্ঠির কেন্দ্র করে যুক্তিবাদি চিন্তার উন্মেষ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

বাংলাদেশের স্বশিক্ষিত দার্শনিক আরুজ আলী মাতুব্বরের জীবনের বিভিন্ন দিক তার আলোচনায় বলেন। তিনি বলেন, জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

মোস্তাফা জব্বর বলেন, ধর্মভিত্তিক জাতীয়তার বিরুদ্ধে বিজ্ঞানমনস্ক বাঙালি লড়াই করে আজকের বাংলাদেশ অর্জন করে। এখানে গ্রন্থ একটি বড় ভূমিকা নিয়েছিল।

তিনি বলেন, ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদ ভিত্তি নয়, ভাষা, সাহিত্য আর বিজ্ঞানমনস্কতাই জাতীয়তাবাদের ভিত্তি।

মুনতাসীর মামুন বলেন, ধর্মের সঙ্গে বিরোধ আছে বিজ্ঞানমনস্কতার। আমাদের জন্ম ধর্ম, বিবাহে ধর্ম, মৃত্যু ধর্মে। এর মধ্যে বিজ্ঞানমস্কতা চর্চা করাটা খুব কঠিন। নাস্তিক মানুষ মাত্রই যুক্তিবাদী হবেন এমনটা ঠিক নয়, আবার ধর্মীয় মানুষ যুক্তিবাদী হবেন না এমনটাও ঠিক নয়।

তিনি পাকিস্তানের উদাহরণ দিয়ে বলেন, কায়দে আজম বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন গবেষণা চলছে ‘জীনভূত’কে বোতলে বন্দী করা যায় কীনা। কতটা অবৈজ্ঞানিক চিন্তা। এর থেকেই প্রমাণ হয় আমাদের সমাজ, পরিবেশ সবকিছু মিলিয়ে বিজ্ঞানমনস্ক হওয়া কতটা কঠিন।

তিনি বলেন, বর্তমানের রাজনীতির সাথে জ্ঞানের কোন যোগাযোগ নেই। রাজনীতিবিদদের সাথে গ্রন্থের কোন সর্ম্পক নেই। তাইতো উপমহাদেশে এখনও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি চলছে। বাংলাদেশ শুধু নয় ভারতও এর বাইরে নয়। তাহলে এখানে বিজেপি থাকে কী করে। এই উপমহাদেশে যুক্তিবাদী সমাজ চাই আর তা আসবে গ্রন্থ পাঠ ও তার প্রয়োগের মধ্য দিয়ে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।