কলকাতা: ভেজাল দুধে ছেয়ে গেছে ভারত। আর এর প্রথম সারিতেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।
ভারতের একটি জাতীয় পর্যায়ের জরিপে উঠে এসেছে এই ভয়াবহ তথ্য।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাণদায়ী দুধই এখন হয়ে উঠেছ প্রাণঘাতী। বস্তুত, বাজারের দুধ এখন শিশুদের খাওয়াতেই বারণ করছেন তারা।
চোখ বন্ধ করে দুধের গ্লাসে চুমুক দেওয়ার দিন আর নেই। আসলে খাদ্য নিরাপত্তা আইনের তোয়াক্কা না করে দুধে যে সমস্ত ভেজাল দ্রব্য মেশানো হচ্ছে তা প্রাণ হরণের পক্ষে যথেষ্ট।
একটা সময় ছিল যখন দুধের ওজন বাড়াতে বিক্রেতা পানি মিশাতেন। তাতে ওজন বাড়লেও পেটের অসুখ বা ওজনে ঠকা ছাড়া বিশেষ ক্ষতি হতো না ক্রেতার। কিন্তু সেই দিন আর নেই, এখন এসেছে উন্নত প্রযুক্তি। তৈরি হচ্ছে সিনথেটিক(কৃত্তিম) দুধ, যার ঘনত্ব বাড়ানোর জন্য সাদা তেল, সাদা রঙের জন্য খড়িমাটি, এমন কি ফেনা বাড়ানোর জন্য ডিটারজেন্ট পাউডারও মেশানো হচ্ছে দুধে।
এর ফলে আর্সেনিক, ক্যাডমিয়ামের মতো মানবদেহের পক্ষে মারাত্মক ধাতুর উপস্থিতি এখন নিতান্ত স্বাভাবিক ঘটনা। ইকোলাই, স্ট্যাফাইলোকক্কাসের মতো ব্যাকটেরিয়াও মিলছে আকছারই।
এমনকি ক্যান্সারের প্রবণতা বৃদ্ধিকারী `আইজিএফ ওয়ান` নামে একটি যৌগের উপস্থিতিরও প্রমাণ মিলেছে ভেজাল দুধে। তথাকথিত `ব্র্যান্ডেড` কোম্পানিগুলোর দুধও এ তালিকার বাইরে নয়।
তাছাড়া উৎপাদন বাড়ানোর উদ্দেশ্যে গরুকে নিষিদ্ধ অক্সিটোসিন ইঞ্জেকশন দেওয়ার প্রবণতাও এখন ক্রমবর্ধমান।
এর ফলে দৃষ্টিশক্তি হারানো, গর্ভপাত, বন্ধ্যাত্বজনিত সমস্যা কিংবা দেহে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে প্রবলভাবে।
ফুড সেফটি অ্যান্ড স্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়া`র সাম্প্রতিক এই জরিপে প্রমাণিত হয়েছে এ মারাত্মক ভেজালের উপস্থিতি।
ভারতের ৩৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নানা শহর ও গ্রাম থেকে খোলা ও প্যাকেটজাত দুধের ১ হাজার ৭৯১টি নমুনা পরীক্ষা করে ১ হাজার ২২৬টি অর্থাৎ ৬৮ দশমিক ৪ শতাংশ নমুনাতেই মিলেছে মারাত্মক ভেজালের উপস্থিতি। আর বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়ের সঙ্গেই ভেজাল দুধের নমুনা মেলার ক্ষেত্রে প্রথম সারিতে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, ফেব্র“য়ারি ০৯, ২০১২