ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

সিপিএমের মিছিলে তৃণমূলের হামলা: সাবেক বিধায়ক নিহত

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১২
সিপিএমের মিছিলে তৃণমূলের হামলা: সাবেক বিধায়ক নিহত

কলকাতা: ২৮ ফেব্রুয়ারি শ্রমিক ধর্মঘটের দাবিতে রক্তাক্ত হল বর্ধমান। বুধবার সিপিএমের কর্মীরা হরতালের সমর্থনে একটি মিছিল বার করে বর্ধমানের দেওয়ানদীঘি এলাকায়।

এর ওপর হামলা চালায় তৃণমূলের কর্মীরা। এই ঘটনায়
বর্ধমানের উত্তরের সাবেক বিধায়ক, রাজ্য কমিটির সদস্য প্রদীপ তা সিপিএম নেতা কমল গায়েন নিহত হন।

এছাড়া অনুপ মল্লিক আরও একজন গুরুতর আহত হন বলে জেলা সম্পাদক অমল হালদার জানান। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছেছে। এপর্যন্ত চারজন তৃণমূল সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এদিন সকালে প্রদীপ তা ও কমল গায়েনর নেতৃত্বে বনধের সমর্থনে মিছিল বের হয়। মিছিলের ওপরে তৃণমূলের কর্মীরা রড-চাপাতি নিয়ে হামলা চালায়। ফ্ল্যাগ ও ফেস্টুন নিয়ে সংঘর্ষ বেধে যায়। তারপরে তৃণমূলের কর্মীরা বিধায়ক প্রদীপ
তা’কে পাথর দিয়ে  থেতলে মেরে ফেলে।

এছাড়া অনেকেই গুরুতর আহত হন। তাদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে কলকাতা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় কমল গায়েনের মৃত্যু হয়।

সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদক অমল হালদারের বলেন, ১৯ ফেবরুয়ারি ব্রিগেডে বামপন্থীদের সভায় জনজোয়ার দেখে ভীত তৃণমূল নেতৃত্ব প্রতিহিংসা চরিচার্থ করার জন্য পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে।

এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফেই হিংসার প্ররোচণা দেওয়া হয়েছে।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যও দুই সিপিএম নেতার হত্যার ঘটনার তীব্র নিন্দা করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন।

তিনি বলেছেন, অবিলম্বে নরহত্যার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে এই সরকারকে। অন্যদিকে, বর্ধমানে দুই সিপিএম নেতার হত্যা এবং রাজ্যজুড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে রাজ্যপালের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বৃহম্পতিবার সভাপতি
রাহুল সিনহার নেতৃত্বে রাজ্য বিজেপি`র এর প্রতিনিধি দল রাজভবনে যাচ্ছে।

এই ঘটনার বৃহস্পতিবার ১২ ঘণ্টার বর্ধমান জেলায় হরতালের ডাক দিয়েছে বামফ্রন্ট। এদিনই বাম পরিষদীয় দলের প্রতিনিধিরা বর্ধমানের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব এই হত্যাকাণ্ডের দায় অস্বীকার করলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, বামেদের মিছিলের উপর সংগঠিত হামলার নেতৃত্বে ছিলেন শান্তনু গড়াই, বাপ্পা তা, পতিত পাবন তা, বাবু হালদারের মতো স্থানীয় তৃণমূল নেতারাই।

এদিনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া চার অভিযুক্তের মধ্যে রয়েছেন, পতিতপাবন তা। তা ছাড়া অন্য তিন ধৃত- ছোটন চক্রবর্তী, সুরজিত তা এবং ভূপাল গোস্বামীও এলাকায় তৃণমূল সমর্থক হিসেবেই পরিচিত।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে ২৯ জুন বীরভূমের নানুরে সশস্ত্র তৃণমূল সমর্থকদের আক্রমণে নিহত হয়েছিলেন এলাকার সাবেক সিপিএম বিধায়ক আনন্দ দাস।

ভারতীয় সময়: ১৬৪৫ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।