ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

সিপিএম নেতা ও সাবেক বিধায়কের খুনের ঘটনায় বর্ধমানে হরতাল

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১২

কলকাতা: সিপিএম নেতা ও সাবেক বিধায়কের খুনের প্রতিবাদে কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া বামফ্রন্টের ডাকা বর্ধমান জেলায় হরতাল শান্তিপূর্ণ ভাবে শেষ হয়েছে।

বৃহস্পতিবার এই হরতালের জেরে স্তব্ধ জনজীবন।

বর্ধমান শহরে এর সর্বাত্মক প্রভাব পড়েছে। জেলার স্কুল-কলেজ, অফিস, আদালত প্রায় সবই বন্ধ। যেখানে খোলা আছে তাতে হাজিরার হার খুবই নগন্য। বন্ধ রয়েছে প্রায় সব দোকান-বাজার।

সড়কে বেসরকারি যানবাহনের সংখ্যা খুবই কম। তবে সরকারি বাস ও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক আছে।

হরতালের প্রভাব পড়েছে শিল্পনগরী আসানসোল-দুর্গাপুরেও। দুর্গাপুরে সরকারি ও বেসরকারি কলকারখানাগুলো খোলা থাকলেও কর্মীদের উপস্থিতির হার বেশ কম।

এদিকে হরতালকে ঘিরে বর্ধমান জেলা জুড়ে কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। পুলিশ জেলা জুড়ে টহলদারি চালাচ্ছে। বুধবার বর্ধমানের কিছু জায়গায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে পথে নেমে বনধের বিরোধিতা করা হলেও যে কোন রকম গোলমালের ভয়ে হরতালকে কেন্দ্র করে জনজীবন বিপর্যস্ত হয় পড়ে ।

বুধবারের পর এদিনও সিপিএমের পক্ষ থেকে দেওয়ানদিঘিসহ কয়েকটি এলাকায় হরতালের সমর্থনে মিছিল বের হয়।

তবে বেশ কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনায় উত্তপ্ত হয়েছে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল। কাটোয়ায় ১৩৫ জন হরতাল সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাণ্ডবেশ্বরে বন্ধ দোকানপাট জোর করে খোলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

এই ঘটনায় সংঘর্ষ বাঁধে সিপিএমের সঙ্গে। শ্যামলা নামক এলাকায় সিটু কার্যালয়ে হামলা চালায় তৃণমূল সমর্থকেরা। ত্রিশগণ্ডা গ্রামে তৃণমূল পার্টি অফিসে ভাঙচুর করা হয়।

এদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে বর্ধমান আদালতে অভিযুক্ত ৮ তৃণমূল কর্মীকে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজত দেন বিচারক। বুধবার সকালে দেওয়ানদিঘিতে ২ সিপিএম কর্মীকে খুনের ঘটনায় তারা গ্রেফতার হন। এর হলেন- পতিত পাবন তা, ভূপাল
গোস্বামী, সুরজিত দাস ও ছোটন চক্রবর্তী।

এদিন অভিযুক্তদের আইনজীবী জামিনের আবেদন জানায়। পুলিশ এদিন গাছের ডাল ও বাঁশ ছাড়া আর কিছুই হত্যার হাতিয়ার হিসেবে দেখাতে পারেন নি। সরকারি পক্ষ জামিনের বিরোধিতা করলে তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়।

বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র এদিন আদালতের এই নির্দেশকে সমলোচনা করে বলেছেন, ‘অভিযুক্তদের পুলিশ হেফাজত নয়। কারণ, গতকালই তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এরই মধ্যে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হয়ে গেছে? `গ্রামবাসী` বা `জনরোষ` হলে বহুলোক এতে জড়িত। বহুলোক এর সঙ্গে জড়িত থাকলে ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই তো তাদের হদিস পাওয়া যেত। তবে জেল হেফাজত কেন দেওয়া হল। ’

গতকাল প্রকাশ্য দিবালোকে দেওয়ানদিঘিতে ১ জন  সাবেক সিপিএম বিধায়ক ও  ১ জন নেতাকে চাপাতি ও পাথর দিয়ে খুন করেন তৃণমূলের কয়েকজন কর্মী। তাদের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হলেও এখনও কয়েকজন বাকি আছে বলেও এদিন তিনি
দাবি করেন।

উল্লেখ্য, বুধবার বর্ধমানের দেওয়ানদিঘিতে তৃণমূল সমর্থকদের হাতে সাবেক বিধায়ক প্রদীপ তা ও জেলা কমিটির সদস্য গায়েনের মৃত্যু হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।