ঢাকা : আটমাস আগে মধ্যরাতে নয়াদিল্লি রামলীলা ময়দান থেকে রামদেবকে উৎখাতের জন্য বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশকে দায়ী করল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি রেহাই পেলেন না রামদেবও।
এ ঘটনার পিছনে তারও দায়িত্ব আছে, এই কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শীর্ষ আদালত বলেছে, রামদেব তখন যে সব সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাও সঠিক ছিল না।
শীর্ষ আদালতের এই রায়ে পুরোপুরি ‘সন্তুষ্ট’ নন রামদেব। তিনি রায় পর্যালোচনার আবেদন জানাচ্ছেন। তবে একই সঙ্গে তিনি এবং তার আইনজীবী রাম জেঠমলানী জানিয়েছেন, জয় তাদেরই হয়েছে।
বিদেশ থেকে কালো টাকা উদ্ধারের দাবিতে গত বছর ৪ জুন অবস্থান কর্মসূচিতে বসা রামদেব ও তার অনুগামীদের হঠাতে মাঝরাতে পুলিশি অভিযান চালানো হয়। এই ঘটনায় রাজবালা নামে এক মহিলা নিহত হন।
সুপ্রিম কোর্টের দু’ বিচারপতির বেঞ্চের বক্তব্য, রামলীলা ঘটনা থেকে সরকার ও মানুষের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাসের প্রমাণ পাওয়া যায়। দিল্লি পুলিশও ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে।
মানুষের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে । শীর্ষ আদালত জড়িত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরুর নির্দেশ দিয়েছে। দিল্লি পুলিশকে দায়ী করার পাশাপাশি রামদেবও সঠিক সিদ্ধান্ত নেননি বলে মনে করে শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের মতে, রামদেবের অনেক আগেই ধরনা তুলে নেওয়া উচিত ছিল। দিল্লি পুলিশের রিপোর্টের ভিত্তিতে আদালত মনে করছে, রামদেবের কিছু অনুগামী হিংসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন।
তাদের বিরুদ্ধেও মামলা শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিহত রাজবালার পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। ঘটনায় গুরুতর আহতদের জন্য ৫০ হাজার ও অপেক্ষাকৃত কম আহতদের জন্য ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ধার্য করা হয়েছে।
এই ক্ষতিপূরণের ৭৫ ভাগ দেবে দিল্লি পুলিশ। বাকি ২৫ ভাগ দেবে রামদেবের ট্রাস্ট। দিল্লি পুলিশ প্রত্যক্ষভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে।
তাই এ ব্যাপারে পি চিদম্বরমকে টেনে আনার সব রকম চেষ্টা করেছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব এবং রামদেব। কিন্তু বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশ সম্পর্কে কড়া ভাষা ব্যবহার করলেও চিদম্বরম সম্পর্কে শীর্ষ আদালত সরাসরি কিছু বলেননি।
এটা যে কংগ্রেস তথা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে স্বস্তির বিষয়, সেটা অনেকেই মেনে নিয়েছেন। উল্টো দিকে, এই ঘটনায় বিজেপি কিছুটা হলেও ‘হতাশ’।
এর আগে টুজি কেলেঙ্কারি নিয়ে তারা চিদম্বরমকে কাঠগড়ায় তোলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আদালত সেখানে স্পষ্ট করে দিয়েছে, পুরো বিষয়টির পিছনে ছিলেন আন্দিমুথু রাজা। সেই রায়ের বিরুদ্ধে অবশ্য শুক্রবার শীর্ষ আদালতে যান সুব্রহ্মণ্যম স্বামী।
বাংলাদেশ সময় : ১২১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১২