ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ত্রিপুরায় ফুল-সবজি দিয়ে তৈরি হচ্ছে ভেষজ আবির!

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২২
ত্রিপুরায় ফুল-সবজি দিয়ে তৈরি হচ্ছে ভেষজ আবির! সবজি ও ফুল থেকে বানানো আবির।

আগরতলা, (ত্রিপুরা): কথায় আছে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। এর মধ্যে রয়েছে ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং সামাজিক উৎসব।

হিন্দু বাঙালিদের এই উৎসব-অনুষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয় আবির। আর সবচেয়ে বেশি পরিমাণ আবিরের ব্যবহার হয় দোল ও হোলি উৎসবের সময়। রঙের এই উৎসবে যেন আবির ছাড়া অসম্পূর্ণ। কিন্তু অনেকে রংখেলা থেকে নিজেকে আড়ালেই রাখেন রাসায়নিক রঙের ভয়ে। কারণ রাসায়নিক সামগ্রী দিয়ে তৈরি আবিরের কারণে এলার্জি থেকে শুরু করে ত্বকের নানা উপসর্গ দেখা দেয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে এবার ত্রিপুরায় তৈরি হচ্ছে ভেষজ আবির। রাজ্যের সিপাহীজলা জেলার বিশালগড় মহকুমার পূর্ব লক্ষ্মীবিল গ্রামের কয়েকজন নারী মিলে তৈরি করছেন এই আবির। গাঁদাফুল, গোলাপের পাপড়ি, গাজর, পালংশাক, বিট ইত্যাদি সবজি থেকে তৈরি হচ্ছে এই আবির।

সম্প্রতি সিপাহীজলা জেলার লক্ষ্মীবিল গ্রাম রাজ্যের মধ্যে ফুল চাষের জন্য বিখ্যাত। এই গ্রামে প্রচুর পরিমাণে ফুল চাষ হয়। তারা এই ফুলগুলো রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে।  কিন্তু এক্ষেত্রে তাদের কিছু সমস্যা হচ্ছে।  

জানা গেছে, গ্রামে এমনকি আশেপাশের এলাকায় কোন হিমঘর নেই। যাতে করে অবিক্রিত ফুল এই হিমঘরে রেখে চাহিদা অনুসারে বিক্রি করতে পারেন। এই সুবিধা না থাকায় অবিক্রিত ফুল ফেলে দেওয়া ছাড়া তারা কোন কাজে লাগাতে পারতেন না। তাই তারা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিল যে, তাদের উৎপাদিত ফুল দিয়ে যাতে বিকল্প কিছু করতে পারেন।  অবশেষে এলাকার আগ্রহী নারীদের ত্রিপুরা সরকারের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের বিশালগড় অফিসের পক্ষ থেকে ভেষজ আবির তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এলাকার একটি নারী স্বনির্ভরগোষ্ঠীকে শেখানো হয়েছে এই ভেষজ আবির বানানো পদ্ধতি। তাদের তৈরি আবির ইতোমধ্যে সাড়া ফেলে দিয়েছে গোটা রাজ্যে।  এমনকি তারা প্রশংসা কুড়িয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের কাছ থেকেও। তাদের বানানো এই আবির রাজধানী আগরতলাসহ স্থানীয় বিভিন্ন বাজারে বাজারজাত ও বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ নেওয়া এই দলের নেত্রী পূরবী দেবনাথ জানান, কৃষি ও কৃষক দপ্তরের সেক্টর অফিসার দেবব্রত পালের প্রচেষ্টায় লক্ষ্মী সেলফ হেলফ গ্রুপের প্রায় ৩০ জন নারীকে কৃষি দপ্তরের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এখন বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা হচ্ছে এই আবির। বাণিজ্যিকভাবে আবির উৎপাদনের ফলে তারা আর্থিক স্বনির্ভরতা এসেছে।  উৎপাদন শুরুর কিছুদিনের মধ্যে তাদের আবির ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ফলে নিশ্চিতভাবে বলা যায় আগামীতে গ্রামীণ নারীদের এই আবিরের বাজার আর সম্প্রসারিত হবে। তারাও এই প্রত্যাশা নিয়ে কাজ করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১১ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২২
এসসিএন/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।