ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ছিটমহলে অনশনের ১৮ দিন : ঢাকা সফরে প্রণব

নয়াদিল্লি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১২

নয়াদিল্লি : দু’পারের ছিটমহলবাসীর অনশনের কাছে কী নতিস্বীকার করতে চলেছে সাউথ ব্লক? দিল্লির রাজনৈতিক মহলে ধারণা তাই। ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির আলোকে পরবর্তীতে মনমোহন-হাসিনার চুক্তি হওয়ার ৭ মাস পরেও তা কার্যকার হয়নি।

এনিয়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে মনমোহন সরকার।

আর এরই মধ্যে দুই পারের ছিটমহলবাসীর আমরণ অনশন কেন্দ্রীয় সরকারকে চাপে ফেলে দিয়েছে। আর এই জট কাটাতেই আগামী ৫ এপিল ঢাকা সফরে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি।

তিস্তার পানি বণ্টন ইস্যুর কারণেই সমাধান হয়ে যাওয়া ছিটমহলের সমস্য অধরা থেকে গেছে। এই ইস্যুর প্রধান বাধাদানকারী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবার ছিটমহল নিয়ে ভারতের বেশি পরিমাণ জমি বাংলাদেশে চলে যাওয়ার কথা বলে নতুন করে বির্তক উস্কে দিয়েছেন।

যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বলা হয়েছে,  রবীন্দ্রনাথের সার্ধশতবর্ষ উৎসবের সমাপ্তি অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রণব মুখার্জির সফর।

কিন্তু সেই সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অন্য শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করবেন তিনি। আর এই বৈঠকগুলোতে অবধারিতভাবেই ওঠে আসবে ছিটমহল আর তিস্তা ইস্যু।

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে যাতে পাকাপাকি কোনো চিড় না ধরে, তার জন্য বরাবরই সচেষ্ট থেকেছে কেন্দ্র। বকেয়া বিষয়গুলোর সমাধানে চেষ্টা চালাচ্ছে মনমোহন সরকার।

বাংলাদেশ নীতি নিয়ে শরিক দলগুলোর মধ্যে (মূলত তৃণমূল) ঐকমত্য গড়ে তোলারও চেষ্টা চলছে। মাস দেড়েক আগেই প্রণব মুখার্জির বাংলাদেশে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ‘খালি হাতে’ তা করতে চায়নি কেন্দ্র।

ঢাকার দাবি মেনে সব চুক্তি রূপায়িত হওয়ার মতো পরিস্থিতি এখন তৈরি হয়ে গেছে, বিষয়টি এমন নয়। কিন্তু ২০১০-এ হাসিনার ঐতিহাসিক দিল্লি সফরের সময়ে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘকাল পরে যে ইতিবাচক কূটনৈতিক বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল, তার রেশ অক্ষুণ্ণ রাখাটাও ভারতের জন্য জরুরি।

তাই আর দেরি না করে তার ঢাকা সফর চূড়ান্ত করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ১৮ দিন ধরে আমরণ অনশনরত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্তর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক অবনতি ঘটেছে। তিনি বৃহম্পতিবার দৃঢ়তার সঙ্গে বাংলানিউজকে বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমি অনশন চালিয়ে যাবো’।

দীপ্তিমানের বাবা প্রয়াত দীপক সেনগুপ্তর হাত ধরে এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল।

তিনি ছিলেন কুচবিহারের সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রর জনপ্রিয় বিধায়ক। ফরোয়ার্ড ব্লকের এই নেতা দিল্লিসহ রাজ্যের রাজনীতি একজন শ্রদ্ধেয় মানুষ। তার মৃত্যর পর এই আন্দোলনের নেতৃত্ব তুলে নেন দীপ্তিমান।

এই আমরণ অনশনে বসা দীপ্তিমানের কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বা এই অনশন তিনি দীর্ঘদিন চালিয়ে গেলে আফসা আইনের বিরুদ্ধে অনশনরত কবি শমির্লা চানুর মতো তিনিও ভারত সরকারের আরও একটা মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়াবেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে সর্ম্পক, দীপ্তিমানের আমরণ অনশন একদিকে, অন্যদিকে মমতা অনড় মনোভাব সব মিলিয়ে ভারত সরকারের এখন শ্যাম রাখি না কূল রাখি অবস্থা।

বাংলাদেশ সময় : ২১০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১২

আরডি

সম্পাদনা : কাজল কেয়া, নিউজরুম এডিটর; আহমেদ জুয়েল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর


বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।