ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

প্রবল বৃষ্টিতে পশ্চিমবঙ্গের জনজীবন বিপর্যস্ত

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১২

কলকাতাঃ শুক্রবার সকাল থেকে প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত পশ্চিমবঙ্গ। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে বজ্রগর্ভ মেঘে ঢেকে যায় গোটা আকাশ।

তারপর শুরু হয় বৃষ্টি। দু’ঘন্টা ধরে প্রবল বৃষ্টি চলে।

দক্ষিণবঙ্গের সব জেলা যেমন হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, বর্ধমান, বীরভূম, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রবল বৃষ্টি হয়। কয়েকটি জায়গায় শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। এদিন বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৫৮ মিলিমিটার।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর থেকে জানানো হয়েছে ছত্রিশগড় থেকে সৃষ্টি হওয়ায় ঘূর্ণাবর্তের ফলে এই বৃষ্টি। শুক্রবার সারাদিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে। হাওড়ার শালিমারে বজ্রাঘাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম মহম্মদ মুন্না(১৮)।

এদিন কলকাতা অনেক জায়গায় পানি জমে যায়। তবে ছুটির দিন থাকায় যানবাহন কিছুটা হলেও রাস্তায় কম নেমেছে।

উত্তর কলকাতার স্ট্যান্ড রোড, আর্মাহস্ট্রিট, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, মহাত্মাগান্ধী রোড, এপিসি রোড, গিরিশপার্ক সহ দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়া, পঞ্চাননতলা, নাকতলা, বাঁশদ্রোনী, বেহালা, খিদিরপুর, বালিগঞ্জ জল মগ্ন হয়ে পড়ে।

বাইপাসের কিছু অংশ পানি জমে যান চলাচল বিঘ্নিত হয়। পৌর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরাদ হাকিম বলেন, পৌরসভার কর্মীরা তাদের কাজ শুরু করেছে। ঘণ্টা খানেকের মধ্যে শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

এদিন হাওড়া ও শিয়ালদা শাখায় ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়। রেলের জনসংযোগ আধিকারিক জানান, ওভারহেড তারে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং অটোমেটিক সিগন্যালিং সমস্যার সৃষ্টি হয়। ফলে লোকাল ট্রেন চলাচলে বিশেষ করে ব্যহত হয়। তবে দূরপাল্লার ট্রেনের তেমন কোনো অসুবিধা হয়নি।

মৌসুমের প্রথম ব্যাপক বৃষ্টিতে হাওড়া ও শিয়ালদহ ডিভিশনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ট্রেন পরিষেবা। ফলে নাকাল হন ট্রেন যাত্রীরা। শিয়ালদহ মূল, শিয়ালদহ দক্ষিণ, হাওড়া পূর্ব এবং দক্ষিণ পূর্ব শাখায় মূলত এর ব্যাপক প্রভাব পড়ে।

সিগন্যালিংয়ের সমস্যা, লাইনে জল জমে যাওয়া ও ওভারহেড তারে মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়াতেই এই ঘটনা বলে রেলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।

শিয়ালদা দক্ষিণ শাখায় বেশ কয়েকটি স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়ে যায়৷ শিয়ালদহ মূল শাখায় শ্যামনগর ও নৈহাটির মধ্যে সিগন্যালে সমস্যা দেখা দেওয়ার পর সব স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে ট্রেন।

এই লাইনে প্রতিটি লোকাল ট্রেন প্রায় ২ ঘণ্টা দেরিতে চলতে থাকে। বেশ কয়েকটি লোকাল ট্রেন বাতিলও করা হয়৷ বনগাঁ ও হাসনাবাগ রুট ও লক্ষ্মীকান্তপুর শাখার ট্রেন চলাচলে বৃষ্টির আংশিক প্রভাব পড়েছে।

এদিকে প্রবল বর্ষণ এবং ঝড়ের জন্য এদিন সকাল ৭টা থেকে হাওড়া পূর্ব এবং দক্ষিণ পূর্ব শাখায় বেশ কিছু সময় ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল৷ বৃষ্টিতে হাওড়ার সিগন্যালিং ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দেওয়ায় বেশ কয়েকটি লোকাল ও দূরপাল্লার ট্রেন ছাড়তে দেরি হয়েছে।

ইন্টারলকিং সিস্টেমে সমস্যার কারণে হাওড়ামুখী বেশ কিছু দূরপাল্লার ট্রেন বালি, ডানকুনি ও অন্যান্য স্টেশনে দাঁড়িয়ে যায়।

রেলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এদিন মূলত লোকাল ট্রেন চলাচলেই সমস্যা দেখা দেয়। প্রায় সব দূরপাল্লার ট্রেন ঠিক সময়ে হাওড়া ও শিয়ালদহ থেকে ছেড়েছে। দ্রুত ট্রেন পরিষবা স্বাভাবিক করতে রেলের কর্মীরা সচেষ্ট হয়েছে বলে জানানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১২

আরডি
সম্পাদনা: আবু হাসান শাহীন, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।