রাজশাহী: কলা মানবদেহের জন্য পুষ্টিকর একটি সহজলভ্য ফল। দামে সস্তা বলে হাতের নাগালেই পাওয়া যায় বিভিন্ন নাম ও জাতের কলা।
রমজান উপলক্ষে কলার বাজারে যেন আগুন লেগেছে। রমজানের প্রথম দিনই রাজশাহীতে কলার দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
এক সপ্তাহ আগেও যে কলা বিক্রি হয়েছে প্রতি হালি ১৬ থেকে ২০ টাকা। অথচ শুক্রবার (২৪ মার্চ) থেকে এক লাফেই কলার দাম হালি (মাঝারি আকৃতির) প্রতি ১৫ থেকে ২৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪৫ টাকা। প্রতিটি কলা ৮ থেকে ১০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। তবে সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে এবং লক্ষ্মীপুর মোড়ে এর চেয়েও বেশি দামে কলা বিক্রি হচ্ছে। রমজানের প্রথম দিন থেকে হঠাৎ এত দাম বাড়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ভোক্তা ও ক্রেতারা। চড়া দামের জন্য রোজায় দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষদের নাগালের বাইরে চলে গেছে কলা।
বিক্রেতাদের দাবি, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেশি। তবে ভোক্তাদের অভিযোগ, এক সপ্তাহ আগেও বাজারে কলার সরবরাহ পর্যাপ্ত ছিল। দাম বাড়ানোর উদ্দেশেই কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। যেন হঠাৎই দুষ্প্রাপ্য হয়ে গেছে কলা। রমজানের দ্বিতীয় দিনের ইফতারের জন্য অনেকেই আজ কলা কিনতে ভিড় জমান সাহেববাজারে। তবে তাদের কাছ থেকে কলা ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দাম নিচ্ছেন।
পবিত্র রমজান উপলক্ষে শনিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে মহানগরীর সাহেববাজার করিম সুপার মার্কেটের সামনে, জিরোপয়েন্টে ও মাস্টারপাড়া এলাকার সড়কে ভ্যানে করে অনেক ব্যবসায়িকে কলা বিক্রি করতে দেখা গেছে। এছাড়া কাঁচাবাজারের ভেতরে থাকা পাইকারি আড়ত ও খুচরা দোকানেও কলা বিক্রি হচ্ছে।
মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট সড়কে কলা বিক্রি করছিলেন জব্বার আলী। জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরবরাহ কম এ কথা পুরোপুরি সঠিক না হলেও আংশিক সত্য। আসলে এখন কলা উৎপাদনে কৃষকদের আগের চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে বলেই দাম বেশি। তাই কলা চাষে বর্তমানে আগ্রহ হারাচ্ছেন প্রান্তিক কৃষকরা। তাই বাজারে কলার সরবরাহ একটু কম। এজন্য দামও বেড়েছে।
সাহেববাজারে কলা কিনতে আসা শাহীন আলী নামে এক ক্রেতা বলেন, ইফতারে অন্যান্য ফলের সঙ্গে কলা খুবই জনপ্রিয় ও নিয়মিত একটি ফল। কিন্তু কলা কিনতে এসে দেখি দাম দ্বিগুণ। আগে দাম কম থাকলেও রোজা আসতে না আসতেই দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সব ধরনের পাকা কলার। ইফতারের কয়েক ঘণ্টা আগে কলা এনে অনেক ব্যবসায়ীই বেশি দামে তা বিক্রি করছেন। বছরের অন্য সময় ১৬/২০ টাকা হালি কলা পাওয়া গেলেও এবার দ্বিগুণ দাম গুণতে হচ্ছে।
আরেক ক্রেতা আরিফ ইসলাম। তিনি বলেন, এ সময় কলার এত দাম হাওয়ার কথা নয়। গরমে কলা দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য বেশি দিন রাখা যায় না। কালো হয়ে যায়। তাই আগে গরমে কলার দাম কম থাকতো। কিন্তু এখন দেখছি সব উল্টো। শীতেও দাম বেশি, গরমেও দাম বেশি। আর রোজার জন্য আরও বেশি।
এখানে পুঠিয়া উপজেলা থেকে আসা কলা ব্যবসায়ী জালাল উদ্দীন জানান, বর্তমানে বাজারে সবরি কলা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, সাগর কলা (বড়) ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মাঝারি ৪৫ থেকে ৪০ টাকা, আনাজি কলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা ও বিচি কলা ৫০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মোটামুটি কলা এখন একদামেই বিক্রি হচ্ছে। দরদাম করলেও কোনো কলার দাম কমানো যাচ্ছে না। বেশি দামে কেনা। তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন এ ব্যবসায়ী।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৩
এসএস/আরবি