ঢাকা: দেশের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে পবিত্র রমজান মাসে সাশ্রয়ী মূল্যে (মিলগেট মূল্যে) পণ্য বিক্রি শুরু করেছে দেশের অন্যতম বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ। 'বসুন্ধরার পণ্য, ভোক্তার জন্য' স্লোগানকে সামনে রেখে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবনের সামনে সাশ্রয়ী মূল্যের এ ট্রাকসেল কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার ও বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উদ্বোধন শেষে জতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ডিজি বলেন, এবারের রমজান আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের ছিল। কিছু কিছু নিত্যপণ্যের দাম আগে বেড়েছিল। যা রমজানের সময় কিছুটা স্বস্তির জায়গায় এসেছে। এবার রমজানে ব্যবসায়ীরা আমাদের সাহায্য করেছে।
তিনি আর বলেন, আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় রমজানে নিত্যপণ্য ছাড়ে বিক্রি করা হয়। আমরাও এ বছর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুরোধ করেছিলাম, তারাও যেন রমজানের সময় ট্রাকসেলের মাধ্যমে তাদের পণ্যগুলো সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি করে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে দেশবন্ধু গ্রুপ ও টিকে গ্রুপ সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রি শুরু করেছে। মেঘনা ও সিটি গ্রুপও সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রির পরিকল্পনা করছে। আজকে বসুন্ধরা গ্রুপ তাদের ট্রাকসেল কার্যক্রম শুরু করেছে।
এজন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ সারাদেশে ৮টি বিভাগে ১০টি ট্রাকের মাধ্যমে ১৯-২০টি পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে (মিলগেট দামে) বিক্রি শুরু করেছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষ কিছুটা স্বস্তির বাজার করতে পারবে। এ উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।
এ সময় তিনি শুধু রমজান নয়, অন্যান্য সময় যখন নিত্যপণ্যের দাম যখন অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়, তখন এসব বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের পাশে এসে দাঁড়াবে সে প্রত্যাশা করেন। তিনি বলেন, জনগণ বাঁচলে, তারাও (শিল্প প্রতিষ্ঠান) বাঁচবে। অর্থাৎ, জনগণের কষ্টের সময় তারা যদি এসব কার্যক্রমগুলো চালায়, তাহলে জনগণ কিছুটা হলেও স্বস্তির জায়গা পাবে।
বসুন্ধরা গ্রুপের এক্সিকিউটিভ (ব্র্যান্ড) মাহমুদুল হাসান নাদিম বলেন, সাধারণ মানুষ যেন রমজান মাস জুড়ে সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপণ্য কিনতে পারে, সেজন্য আমরা এ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। কারণ রমজান মাসে বাজারে অরাজকতা সৃষ্টি হয়। খুচরা বা পাইকারী বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজার অস্থিতিশীল করেন। তাই সাধারণ মানুষ যাতে পণ্যের সঠিক মূল্যটা জানতে পারে এবং প্রয়োজন অনুসারে পণ্যটা কিনতে পারে, সেজন্য আমাদের এ উদ্যোগ।
বসুন্ধরা গ্রুপ পুরো রমজান মাসে দেশের ৮টি বিভাগে ১০টি ট্রাকে করে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রি করবে। রাজধানী ঢাকায় কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনের সামনে এবং সচিবালয়ের সামনে এ ট্রাকসেল কার্যক্রম চালাবে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে পণ্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে।
বসুন্ধরা গ্রুপ এই ট্রাকসেল কার্যক্রমের মাধ্যমে ২৩টি পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি করবে। এর মধ্যে আটা (১ কেজি) ৬৮ টাকার পরিবর্তে ৬০ টাকা, সয়াবিন তেল (১ লিটার) ১৮৭ টাকার পরিবর্তে ১৭৯ টাকা, মহারাজ পাম ওয়েল (১ লিটার) ১৩৭ টাকার পরিবর্তে ১৩২ টাকা, ময়দা (১ কেজি) ৮০ টাকার পরিবর্তে ৭৫ টাকা, সুজি (৫০০ গ্রাম) ৫৪ টাকার পরিবর্তে ৪৪ টাকা, সেমাই (২০০ গ্রাম) ৪৫ টাকার পরিবর্তে ৩৮ টাকা, লাচ্ছা সেমাই (২০০ গ্রাম) ৫৫ টাকার পরিবর্তে ৪২ টাকা, মুড়ি (২৫০ গ্রাম) ৩৫ টাকার পরিবর্তে ৩০ টাকা, মুড়ি (৫০০ গ্রাম) ৬৫ টাকার পরিবর্তে ৫২ টাকা, ইনস্ট্যান্ট মাসালা নুডুলস (৪ প্যাকেট) ৭৫ টাকার পরিবর্তে ৬০ টাকা, ইনস্ট্যান্ট মাসালা নুডুলস (৮ প্যাকেট) ১৪০ টাকার পরিবর্তে ১১৫ টাকা, স্টিক এগ নুডুলস (১২৫ গ্রাম) ২০ টাকার পরিবর্তে ১৬ টাকা, সি-শেল পাস্তা (২০০ গ্রাম) ৪৫ টাকার পরিবর্তে ৩২ টাকা, ম্যাকারনি ওয়েস্টার (২০০ গ্রাম) ৪০ টাকার পরিবর্তে ৩০ টাকা, হালিম মিক্স (২০০ গ্রাম) ৬৬ টাকার পরিবর্তে ৫০ টাকা, মুরগির মসলা (১০০ গ্রাম) ৭৮ টাকার পরিবর্তে ৬২ টাকা, বিরিয়ানি মসলা (৪০ গ্রাম) ৬৬ টাকার পরিবর্তে ৫০ টাকা, গরুর মাংসের মসলা (১০০ গ্রাম) ৮৪ টাকার পরিবর্তে ৭০ টাকা, হলুদ (১০০ গ্রাম) ৬০ টাকার পরিবর্তে ৪৫ টাকা, মরিচ (১০০ গ্রাম) ৭০ টাকার পরিবর্তে ৬০ টাকা, ধনিয়া (১০০ গ্রাম) ৪০ টাকার পরিবর্তে ৩২ টাকা, জিরা (১০০ গ্রাম) ৯৬ টাকার পরিবর্তে ৮০ টাকা ও ম্যাজিক পটেটো (১৭ গ্রাম) ১০ টাকার পরিবর্তে ৯ টাকায় বিক্রি করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৩
এসসি/জেএইচ