ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

চিনির দাম কেজিতে ২৫ টাকা বাড়াচ্ছেন মিল মালিকরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৭ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
চিনির দাম কেজিতে ২৫ টাকা বাড়াচ্ছেন মিল মালিকরা -ফাইল ছবি

ঢাকা: আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণ দেখিয়ে পবিত্র ঈদুল আজহার আগে চিনির দাম আরেক দফা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মিল মালিকরা। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খুচরা বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনি সর্বোচ্চ ১৪০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনি সর্বোচ্চ ১৫০ টাকায় বিক্রি করা হবে।

অর্থাৎ প্রতি কেজি চিনিতে দাম বাড়ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা।

আগামী বৃহস্পতিবার (২২ জুন) থেকে নতুন এই দাম কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। চিনির দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্তের কথা সোমবার (১৯ জুন) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেও সংগঠনটি।

সেই চিঠির ভাষ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণে সরকার নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি করতে গিয়ে লোকসান গুণতে হচ্ছে কোম্পানিগুলোকে। তাই তারা দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সাধারণত সরকার বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের মাধ্যমে চিনির দাম নির্ধারণ করে। সর্বশেষ, খুচরা বাজারে বিক্রির জন্য প্রতি কেজি খোলা চিনি সর্বোচ্চ ১২০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনি ১২৫ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এতে না পোষানোয় চিনির দাম আরও বাড়াতে গত ৬ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে নতুন করে আর দাম না বাড়ানোয় এখন নিজেরাই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মিল মালিকরা।

এদিকে, গত বেশ কিছুদিন ধরে বাজারে সরকার নির্ধারিত দামের থেকে বেশি দামেই চিনি বিক্রি হচ্ছে। সোমবার (১৯ জুন) রাজধানীর বেশকিছু বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি খোলা চিনি ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা এবং প্যাকেটজাত লাল চিনি ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এমনকি বেশিরভাগ বাজারে প্যাকেটজাত চিনি মিলছেই না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর মগবাজারের নয়াটোলা এলাকার মুদি দোকানদার মো রিপন বলেন, গত এক মাসের বেশি সময় ধরে প্যাকেটজাত চিনির সরবরাহ নেই। খোলা চিনিও কিনতে হচ্ছে ১২৬ টাকায়। তার ওপর আমাদের পরিবহনসহ অন্যান্য খরচ আছে। তাহলে আমরা কত টাকায় বিক্রি করব? আমাদের তো বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে। তাই সরকার নির্ধারিত দামের থেকে ৫-১০ টাকা বেশিতে বিক্রি করতে হচ্ছে।

মালিবাগ বাজারের মুদি দোকানদার মো. মাসুদ রানা বলেন, অনেকের কাছে প্যাকেট চিনি আছে। কিন্তু সরকার নির্ধারিত দামের থেকে বেশিতে বিক্রি করতে হচ্ছে বিধায় তারা সবার কাছে চিনি বিক্রি করে না। ঝামেলা এড়াতে শুধু পরিচিত ক্রেতার কাছেই প্যাকেটের চিনি বিক্রি করে।

দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের ৫০ কেজির চিনির বস্তা কিনতে খরচ হয় ৬ হাজার ২৩০ টাকা। পরিবহন খরচ হয় আরও ২০ টাকা। অর্থাৎ ৫০ কেজির এক বস্তা খোলা চিনি আমাদেরই কিনতে হচ্ছে ৬ হাজার ২৫০ টাকা দিয়ে। কেজিতে যা ১২৫ টাকা। তাহলে আমরা সরকার নির্ধারিত দামে কীভাবে বিক্রি করব? আমরা যে দামে কিনে আনি, তার থেকে একটু বেশি দামেই তো বিক্রি করব।

চিনির নতুন দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানতে চাইলে সাইদুল হক জনি নামে এক ক্রেতা বলেন, সাধারণ জনগণের কথা কেউ চিন্তা করে না। যার যখন মন চায়, দাম বাড়িয়ে দেয়। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে না হয় চিনির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মিল মালিকরা। তাহলে এতদিন কাদের সিদ্ধান্তে ১৪০-১৪৫ টাকা করে চিনি বিক্রি হয়েছে। সরকারের তদারকির অভাবে যে যার মতো দাম বাড়িয়ে বিক্রি করেছে এতদিন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
এসসি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।