ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রাজবাড়ী শিল্পনগরীতে গরুর বিচরণ, ৯০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বন্ধ 

কাজী আব্দুল কুদ্দুস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৪
রাজবাড়ী শিল্পনগরীতে গরুর বিচরণ, ৯০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বন্ধ  রাজবাড়ী শিল্পনগরীর ৯০ ভাগ প্রতিষ্ঠানই বন্ধ এখন, তাই সেখানে গরু চড়ান স্থানীয়রা 

রাজবাড়ী: প্রতিষ্ঠার পর ৬০ বছর পেরিয়ে গেলেও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি রাজবাড়ী বিসিক শিল্পনগরী। ৯০ শতাংশ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, এসব প্রতিষ্ঠানের জমিতে গরু-ছাগল চড়াচ্ছেন স্থানীয়রা।

 

সুষ্ঠু পরিকল্পনা, অব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোগত সুবিধা না পাওয়া এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে লোকসানের মুখে একের পর এক বন্ধ হয়ে গেছে এ শিল্প নগরীর বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান। কাগজে কলমে ৭৭টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া থাকলেও বর্তমানে অধিকাংশ প্লটই বন্ধ রয়েছে এ নগরীতে।  

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিসিক শিল্প নগরীর বিভিন্ন জায়গা ময়লা আবর্জনা আর আগাছায় ভরে গেছে। সেসব জায়গায় গরু চড়ানো হচ্ছে। ড্রেনগুলোর ভেতর ময়লার স্তূপ জমে গেছে।  

১৯৬৪ সালে সদরের রামকান্তপুর এলাকায় প্রায় ১৬ একর জমির ওপর গড়ে ওঠে এ শিল্প নগরী। শুরুতে এর কার্যক্রম শুরু হয় ৭৭ টি প্লট দিয়ে। এসব প্লটে গড়ে তোলা হয় ৫৩ টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এরপর এ নগরীতে আর নতুন করে গড়ে ওঠেনি কোনো প্রতিষ্ঠান। বরং বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানির সংকট, ড্রেনেজ ও বর্জ্য অব্যবস্থাপনা আর নিরাপত্তাহীনতাসহ নানা কারণে লোকসানের মুখে বন্ধ হতে থাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।  

বর্তমানে এ শিল্প নগরীতে ৯০ ভাগ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কোনোরকমে সচল রয়েছে রয়েছে বেকারি, সিলভার পণ্য তৈরির কারখানা, চাল ও স্বয়ংক্রিয় ময়দার মিল, তেলের মিল ও ডালের মিলসহ ১০ থেকে ১২ টি শিল্প প্রতিষ্ঠান।  

প্রতিষ্ঠার ৬০ বছরেও কোনো উন্নয়ন না হওয়ায় এমন বেহাল অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে দাবি এখানকার উদ্যোক্তাদের।

রাজবাড়ী বিসিক ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী বেনজীর আহমেদ বলেন, বিসিকের ব্যবসায়ীদের জন্য সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। বিশেষ করে জমি ট্যাক্সের টাকা কয়েক গুণ বেড়েছে। যে কারণে বেশিরভাগ ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন।

সাগর ফুড প্রোডাক্টসের ম্যানেজার ফরিদ হোসেন বলেন, বিসিকে ড্রেনের পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। বৃষ্টি হলে পানি জমে থাকে। চারপাশে ময়লা আবর্জনায় ভরে গেছে। বিসিক কর্তৃপক্ষের এসব বিষয়ে কোনো নজরদারি নেই। তাদের অবহেলার কারণে আজ বিসিকের এই বেহাল অবস্থা।  

বন্ধ প্রতিষ্ঠানের খোলা জায়গায় কাপড় রোদে দেন স্থানীয়রা।

বর্ষণ-বর্ণ ফুড প্রোডাক্টসের পরিচালক আসাদুজ্জামান বলেন, শুধু সরকারি সুযোগ-সুবিধা না থাকায় রাজবাড়ী বিসিক শিল্প নগরীর আজ এই বেহাল দশা। ছোটবড় সব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিককে ব্যাংক লোন সুবিধা, নতুন উদ্যোক্তা তৈরি ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ালে এ শিল্প নগরী আবারও প্রাণ ফিরে পাবে।

বরাবরের মতো সমস্যা সামাধানের দায়সারা আশ্বাস বিসিক কর্তৃপক্ষের।  

রাজবাড়ী বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক চয়ন বিশ্বাস বলেন, বিসিক শিল্পনগরীতে সীমানাপ্রাচীর, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে বিসিক হেড অফিসে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী অর্থ বছরে কিছু বরাদ্দ পাওয়া যেতে পারে। বরাদ্দ পেলে সমস্যাগুলো কিছুটা হলেও সমাধান হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬,  ২০২৪
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।