ঢাকা: শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে তৈরি পোশাক খাতে এক হাজার ৫৫০টি কারখানা কমপ্লায়েন্স নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। একই সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে আহত হওয়ার ঝুঁকি থেকে সুরক্ষার জন্য ‘এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি ইন্স্যুরেন্স’ স্কিম পাইলট ভিত্তিতে চালু করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৬ জুন) বেলা ৩টায় জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। এ দিন স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৪তম বাজেট উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। এটি অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রথম বাজেট।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন সফল করতে হলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষায় উপযুক্তভাবে গড়ে তুলতে হবে। এ প্রেক্ষাপটে বিজ্ঞানভিত্তিক, প্রযুক্তিনির্ভর, দক্ষতাবর্ধক ও সৃজনশীলতা বিকাশে সহায়ক শিক্ষার পরিবেশ তৈরি এবং কর্মোপযোগী শিক্ষা ও যুবকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণকে আমাদের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্যতম বিশেষ অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, উচ্চতর কারিগরি দক্ষতা উন্নয়নসহ শিল্প খাতে কর্মরত ব্যবস্থাপকদের দক্ষতা, গবেষণা ও উন্নয়ন তাড়িত উদ্ভাবন এবং দক্ষতা বৃদ্ধিতে শিল্প প্রতিযোগিতা এবং উদ্ভাবন প্রোগ্রামের জন্য দক্ষতা প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, কর্মক্ষেত্রে আহত হওয়ার ঝুঁকি থেকে সুরক্ষার জন্য ‘এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি ইন্স্যুরেন্স’ স্কিম পাইলট ভিত্তিতে চালু করা হয়েছে। এছাড়া শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তৈরি পোশাক সেক্টরে ১ হাজার ৫৫০টি কারখানার কমপ্লায়েন্স নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রবাসী কর্মীদের প্রেরিত রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিকে স্বাবলম্বী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রবাস আয়ের পরিমাণ ছিল ১০.৯৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে দ্বিগুণ হয়ে ২১.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। এজন্য বিদেশ ফেরত কর্মীদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের অনুকূলে সরকার ৫০০ কোটি টাকার বরাদ্দ দিয়েছে।
এবারের বাজেটের প্রতিপাদ্য হলো ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’। প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৪.২ শতাংশ। এটি চলতি বাজেটের তুলনায় ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি। টাকার অংকে বাড়ছে ৩৫ হাজার ২১৫ কোটি টাকা। যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। আর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরে ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা।
নতুন বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ৮৩ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধরণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছর ছিল ৫ লাখ কোটি টাকা।
আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। পরে তা কমিয়ে সাড়ে ৬ শতাংশ করা হয়। মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশের মধ্যে আটকে রাখা হবে বাজেটে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০২৪
জিসিজি/এমজেএফ