ঢাকা: বস্ত্র ও পাট এবং জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগের জন্য কোরিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) উপদেষ্টার সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ সাক্ষাতের সময় তিনি এ আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, একসময় জুটমিলগুলো সরকারিভাবে পরিচালিত হতো। এখন মিলগুলোকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে লিজ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান আছে। বর্তমান সরকার পরিবেশ দূষণ রোধে পলিথিনের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ চালুর পদক্ষেপ নিয়েছে। এছাড়া পাট থেকে তৈরি ‘সোনালি ব্যাগ’ উৎপাদনের কার্যক্রম চলমান আছে। পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা দেশে ও বিদেশে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা পরিবেশবান্ধব কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করছি। বহুমুখী ব্যবহার উপযোগী পাটজাত পণ্য উৎপাদনে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) কাজ করছে।
গবেষণা কার্যক্রমের মাধ্যমে পাট ও টেক্সটাইল খাতকে আরও সমৃদ্ধ করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এটিকে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় খাত উল্লেখ করে উপদেষ্টা দেশের পাটজাতখাতে কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের কাছে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
উভয় দেশের সম্পর্ক তুলে ধরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে কোরিয়া থেকে ক্রুড অয়েল ট্যাংকার ক্রয় সংশ্লিষ্ট একটি প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আরও প্রকল্প চলমান আছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের দেশের জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগ করার উদাত্ত আহ্বান জানান।
বর্তমান সরকারের পরিবেশ দূষণরোধে পলিথিন বন্ধ করার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক বলেন, পরিবেশ দূষণ বৈশ্বিক সমস্যা। প্রাকৃতিক তন্তু হিসেবে পাট পরিবেশবান্ধব। বাংলাদেশের পাটখাত উন্নয়নে কোরিয়া সহযোগিতা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক আরও জানান, প্রায় দুই বছর আগে কোরিয়ান বিনিয়োগকারী একটি প্রতিনিধিদল এদেশে বিনিয়োগের সুযোগ ও সম্ভাবনা দেখতে পরিদর্শনে আসেন। তখন মাতারবাড়ি বন্দরও পরিদর্শন করেন। আগামীতে এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
রাষ্ট্রদূত জাহাজ শিল্পে বাংলাদেশের উজ্বল সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান।
আলাপকালে দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ ও শৃঙ্খলাসহ অন্যান্য বিষয়ে নিয়ে আলোকপাত করলে উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত বলেন, দেশে বিনিয়োগের জন্য বর্তমান সময় অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে নিরাপদ। বর্তমান সরকার দুর্নীতি, ঘুষ ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলার পরিবেশও উন্নত হচ্ছে। একটি রাজনৈতিক দল দীর্ঘদিন শাসন করেছে, বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশ থেকে পাচার করেছে। যা দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতি করেছে। বর্তমান সরকার দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হয়ে কাজ করছে।
এ সময় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব দেলোয়ারা বেগম, নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তাসলিমা কানিজ নাহিদা, উপসচিব আসমা আরা বেগম, দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাসের কনসাল কিম জিয়ং কি উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২৪
এসকে/এএটি