সাতক্ষীরা: ভোরের আলো ফুটতেই সাতক্ষীরা শহরের করিম সুপার মার্কেটে পৌঁছাতে থাকে কক্সবাজারের রেণু পোনা বহনকারী মিনি ট্রাকগুলো। একইভাবে রেণু কিনতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের ঘের মালিকেরা ছুটে আসেন সেখানে।
ব্যবসায়ীরা জানান, রেণু পোনা বিক্রির জন্য সাতক্ষীরা শহরের করিম সুপার মার্কেট প্রসিদ্ধ হয়ে উঠেছে। এ মার্কেটে প্রতিদিন কক্সবাজারের ১৫-২০টি কোম্পানির রেণু আসে। ব্র্যান্ডের ভিন্নতায় দামেও থাকে পার্থক্য। যে যার পছন্দ মতো রেণু কিনে নিয়ে যান করিম সুপার মার্কেট থেকে।
করিম সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী আইয়ুব হোসেন জানান, ভালোমানের বাগদা চিংড়ির রেণুর মূল্য হাজার প্রতি ৩৮৫ টাকা থেকে ৪০০ টাকা। এছাড়া নন ব্র্যান্ডের রেণুর মূল্য ২৮৫ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
সাতক্ষীরা থেকে এ রেণু পোনা চলে যায় জেলার শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ, দেবহাটাসহ পাশের জেলা খুলনার পাইকগাছা ও কয়রার বিভিন্ন অঞ্চলে।
আগে স্থানীয় নদ-নদী থেকে সংগৃহীত রেণু পোনা দিয়ে চাহিদা মিটলেও বর্তমানে সাতক্ষীরা অঞ্চলে চিংড়ি চাষ বাড়ায় রেণু পোনার চাহিদাও বেড়েছে কয়েকগুণ। এজন্য কক্সবাজারের রেণুর ওপরই নির্ভর করেন ঘের ব্যবসায়ীরা।
তবে, রেণু ঘেরে ছাড়ার পর অনেক সময় বাঁচে না বলে জানিয়েছেন ঘের ব্যবসায়ীরা।
আশাশুনির ঘের ব্যবসায়ী আজিজ মোল্লা জানান, যে পরিমাণ রেণু ঘেরগুলোতে ছাড়া হয়, তার প্রায় অর্ধেক টিকে থাকে আর অর্ধেক মারা যায়। কক্সবাজার থেকে আসা এসব রেণু একদিন আগে গাড়িতে লোড হয়, যা ঘেরে ছাড়তে পরদিন বেলা ১২টা/১টা বেজে যায়। এতে অক্সিজেন সংকটে অনেক রেণু পোনা মারা যায়। এছাড়া নন ব্র্যান্ডের রেণুও প্রায় অর্ধেক মারা যায়।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জি. এম. সেলিম বলেন, সাতক্ষীরা জেলার প্রায় ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে সাদা সোনা খ্যাত বাগদা ও গলদা চিংড়ি উৎপাদন হয়। এজন্য ৩৫০ কোটি রেণুর চাহিদা রয়েছে। এসব রেণু কক্সবাজারের হ্যাচারিগুলো থেকে আসে। সাতক্ষীরায় পোনার দুটি মার্কেট রয়েছে- একটি সাতক্ষীরা শহরে, অন্যটি শ্যামনগরের বংশীপুরে। চাষিদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে মান ও লেবেলহীন ভেজাল পোনা বিক্রি বন্ধে মৎস্য বিভাগ সব সময় তৎপর থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০২ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২৫
এসআই