পার্বতীপুর (দিনাজপুর): দীর্ঘ সাত মাস পর দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে পুনরায় কয়লা বিক্রি শুরু হয়েছে।
প্রথম পর্যায়ে ৫৯৪টি প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে প্রায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) থেকে তাদের মধ্যে কয়লা সরবরাহ করা হবে। ১০/১২ দিন পর পুনরায় কয়লা বিক্রি শুরু হবে বলে খনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এদিকে কয়লা বিক্রি শুরু হওয়ায় ইটভাটা ও বয়লার চালিত শিল্প প্রতিষ্ঠান মালিকদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।
জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া খনি কর্তৃপক্ষ কয়লা বিক্রির জন্য ১৬ ডিসেম্বর কয়েকটি জাতীয় এবং স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কয়লা ব্যবহারকারী ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদনপত্র আহ্বান করে।
এ সময়ের মধ্যে কয়লা ক্রয় করার জন্য ৪ হাজার ৮০০টি প্রতিষ্ঠান ১০০ টন থেকে ৫ হাজার টন পর্যন্ত চাহিদা উল্লেখ করে আবেদনপত্র জমা দেয়। এতে কয়লার চাহিদা দাড়ায় প্রায় ৭ লাখ টন।
সূত্র মতে, খনি কর্তৃপক্ষের কাছে বিক্রিযোগ্য কয়লার মজুদ মাত্র ৬০ হাজার টন থাকায় কয়লা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকার তদবির শুরু হয়। কিন্তু খনি কর্তৃপক্ষ সব ধরনের তদবির উপেক্ষা করে বিক্রয়যোগ্য কয়লার মজুদ অনুযায়ী বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) পার্বতীপুর, ফুলবাড়ী ও দিনাজপুর জেলার ইটভাটাগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে সারাদেশের ৫৯৪টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটিকে ১০০ টন হিসেবে ৫৯ হাজার ৪০০ টন কয়লা বরাদ্দ দেয়।
বরাদ্দ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওইদিনই ৩৫টি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ব্যাংকে বরাদ্দের বিপরীতে টাকা জমা দিয়েছে। ২৮ ডিসেম্বর থেকে তাদের মধ্যে কয়লা সরবরাহ শুরু করা হবে বলে খনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আমিনুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, খনি ইয়ার্ডে বর্তমানে ১ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা মজুদ রয়েছে। এরমধ্যে পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ৬৫ হাজার টন মজুদ রেখে প্রথম পর্যায়ে ৬০ হাজার টন কয়লা খোলাবাজারে বিক্রি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিপুল পরিমাণ কয়লার চাহিদা থাকায় পার্বতীপুর, ফুলবাড়ী ও দিনাজপুর জেলার ইটভাটাগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে এবং ‘আগে এলে আগে পাবেন’ এ নীতিতে সারাদেশের ৫৯৪টি প্রতিষ্ঠানে প্রতিটিকে ১০০ টন করে কয়লা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
খনিতে প্রতিদিন উৎপাদন হচ্ছে সাড়ে ৪ হাজার টন কয়লা। ১০/১২ দিন পর আবারও কয়লা বিক্রির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে কয়লা বিক্রি করা হবে বলে তিনি জানান।
১০মে খনি ভূ-গর্ভে ১২০৫ নম্বর কোলফেজে অস্বাভাবিক পানি প্রবাহের ফলে কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া ২৫০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু রাখতে জ্বালানি সংকট এড়াতে জুন মাস থেকে খোলাবাজারে কয়লা বিক্রি বন্ধ করে দেয় খনি কর্তৃপক্ষ।
পরবর্তীতে ১২১২ নম্বর কোলফেজ উন্নয়ন করে ১৫ নভেম্বর পরীক্ষামূলকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু করা হয় এবং ৩০ নভেম্বর থেকে খনি পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৪