ঢাকা: গ্যাস-বিদ্যুতের অভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিনিয়োগ পরিস্থিতি। বিনিয়োগের অভাবে ব্যাংকে অলস পড়ে আছে ১২০ হাজার কোটি টাকার মতো।
অপরদিকে রপ্তানি আয় বাড়লেও তা একটি পণ্যকে কেন্দ্র করেই হচ্ছে। অপ্রচলিত পণ্যের রপ্তানি বাড়ছে না। উৎপাদন ক্ষেত্রে কম মজুরি ও কম উৎপাদনশীলতার মধ্যে রয়েছে দেশ। ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ ঋণ নেওয়া হচ্ছে তার একটি বড় অংশ খেলাপি থেকে যাচ্ছে। মূলত সার্বিক অর্থনীতি ধীরে ধীরে ভঙ্গুর হচ্ছে।
অর্থনীতির এ চিত্রকে ‘দুষ্ট চক্রের অর্থনীতি’ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা। তাদের মতে, দেশের প্রবৃদ্ধি এগিয়ে যাচ্ছে, মাথাপিছু আয় বাড়ছে। অথচ মাবনসম্পদ উন্নয়ন ও অর্থনীতির বহুমুখিকরণ হচ্ছে না। এতে দেশ অর্থনৈতিক দুষ্ট চক্রের মধ্যে পড়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ’র (সিপিডি) পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বাড়ছে। এ আয় বাড়ার কারণ রেমিটেন্স বৃদ্ধি ও টাকার মান বৃদ্ধি পাওয়া। তবে শুধু মাথাপিছু আয় বাড়া দিয়ে ভঙ্গুর দশা থেকে বাংলাদেশের পক্ষে বেরিয়ে আসা সম্ভব না। বেরিয়ে আসতে চাইলে করতে হবে কাঠামোগত পরিবর্তন।
এদিকে উদ্যোক্তারা বলেছেন, অর্থনীতিতে রক্ত সঞ্চালন করে থাকে বিনিয়োগ। বিনিয়োগ বাড়ানো ছাড়া অর্থনীতিকে গতিশীল করা সম্ভব না। কিন্তু ঋণের সুতের যে হার তাতে উদ্যোক্তাদের পক্ষে ঋণ নেওয়াই আর সম্ভব হচ্ছে না। এর সঙ্গে রয়েছে গ্যাস-বিদ্যুতের চরম সংকোট।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’র (ডিসিসিআই) পক্ষ থেকে বলা হয়, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অভাবে দেশের বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন হুমকির মুখে পড়েছে। গ্যাস-বিদ্যুতের অভাবে শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, খরচ বাড়ছে, প্রচুর শ্রম ঘণ্টা অপচয় ও শ্রমিক ছাঁটাই হচ্ছে। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে সামগ্রিক অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে।
আর ব্যাংক ঋণের বিষয়ে সংগঠটি বলে, শিল্প ও ব্যবসা খাতে ঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলো মাত্রাতিরিক্ত সুদ আদায় করছে। ফলে প্রকৃত সুদের হার কর্পোরেটের ক্ষেত্রে ১৭ থেকে ১৮ শতাংশে এবং এসএমই’র ক্ষেত্রে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশে দাঁড়াচ্ছে। ব্যাংকগুলো বর্তমানে ঋণের বিপরীতে প্রতি তিন মাস অন্তর চার দফায় ঋণ ও সুদের উপর সুদ আরোপ করছে। এতে মূল ঋণের পরিমাণ ও কিস্তির সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। ফলে বিনিয়োগকারী শিল্পোদ্যোক্তারা ঋণ গ্রহণে পিছু হটছেন।
এদিকে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থা (আইএফসি) তাদের গবেষণা রিপোর্টে বলেছে, বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে বাংলাদেশ। বিশ্বের অন্য কোনো দেশে বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে বাংলাদেশের মতো হয়রানি ও বিলম্ব হয় না।
বিনিয়োগ পরিস্থিতি:
রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল থাকায় বিদেশি ও যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগের প্রস্তাব বাড়ছে। তবে গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট আর অবকাঠামো সমস্যায় কারণে বিনিয়োগ প্রস্তাবের অধিকাংশই আলোর মুখ দেখছে না। চলতি বছরের জানুয়রি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শতভাগ বিদেশী অথবা যৌথ উদ্যোগে ৮১টি প্রতিষ্ঠান তিন হাজার ৩৮৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বিনিয়োগের জন্য নিবন্ধিত হয়। তবে এসব প্রস্তাবের বিপক্ষে বিনিয়োগ হয়েছে মাত্র এক হাজার কোটি টাকা।
বিনিয়োগ বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে শতভাগ বিদেশি প্রতিষ্ঠান ১২টি এবং যৌথ বিনিয়োগের জন্য ১৫টি। টাকার অঙ্কে এ বিনিয়োগের পরিমাণ এক হাজার ৭১১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
আগের তিন মাসে অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন –এই সময়ে ২৬টি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হয়। এর মধ্যে শতভাগ বিদেশি প্রতিষ্ঠান ১০টি এবং যৌথ বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ১৬টি। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর ৫০৭ কোটি ৫৮ লাখ দুই হাজার টাকা বিনিয়োগ করার কথা ছিল। আর চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি থেকে মার্চ) নিবন্ধিত হয় ৪০টি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠাগুলোর এক হাজার ১৬৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করার কথা ছিল।
চলতি বছর (২০১৪ সাল) সব থেকে বেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব নিবন্ধিত হয়েছে বস্ত্র খাতে। মোট নিবন্ধিত বিনিয়োগ প্রস্তাবের ৩৭ দশমিক ৩৪ শতাংশই এ খাতের। এছাড়া প্রকৌশল খাতে ২৯ দশমিক ৩১, রসায়ন শিল্প খাতে ১৩ দশমিক ৫৬, সেবা খাতে ৮ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং অন্যান্য শিল্প খাতে ১১ দশমিক ৫৩ শতাংশ বিনিয়োগ প্রস্তাব নিবন্ধিত হয়েছে।
আর্থিক খাত:
২০১২ সালে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনার পর দুই বছরেও আর্থিক খাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে ৮টি ব্যাংক। এ ব্যাংগুলোর মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা। আর সামগ্রিক ব্যাংক খাতে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৬ কোটি টাকা। অথচ গত ডিসেম্বরে সামগ্রিক ব্যাংক খাতে তিন হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত ছিল।
সরকারি চার বাণিজ্যিক ব্যাংকের মূলধনের ঘাটতি মেটাতে গত বছর সরকার চার হাজার একশ' কোটি টাকা দিয়েছিল। এতে বছর শেষে ব্যাংকগুলো ঘাটতি থেকে বেরিয়ে আসে। তবে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে এসে সরকারি চার ব্যাংকে এক হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা ঘাটতিতে রয়েছে। এরমধ্যে শুধু সোনালী ব্যাংকের ঘাটতি রয়েছে এক হাজার ৭৩০ কোটি টাকা।
ঘাটতিতে থাকা বিশেষায়িত ব্যাংকের মধ্যে বেসিক ব্যাংক দুই হাজার ২৫৮ কোটি টাকা, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ছয় হাজার ৯০ কোটি টাকা ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ৬৫০ কোটি টাকা ঘাটতিতে রয়েছে।
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ঘাটতি ৮০ কোটি টাকা, আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ঘাটতি এক হাজার ৪২৫ কোটি টাকা এবং প্রিমিয়ার ব্যাংকের ঘাটতি ৫০ কোটি টাকা।
অপরদিকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোর শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৭ হাজার ২৯১ কোটি টাকা। গত জুনের তুলনায় যা পাঁচ হাজার ৯৪৭ কোটি টাকা বেশি। আর ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় বেড়েছে ১৬ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা।
ব্যাংকিং খাতে এতো সব দু:সংবাদের মধ্যেও কিছুটা আশার আলো জাগিয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। ২৩ ডিসেম্বরের হিসাব অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৩২৪ দশমিক ৫৩ মিলিয়ন ইউএস ডলার। যদিও অর্থনীতিবিদদের মতে, দেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতি নাজুক হওয়া এবং ডলারের দাম পড়ে যাওয়ার কারণে বৈদেশিক মুদ্রায় রিজার্ভ বেড়েছে।
মূল্যস্ফীতি: আর্থিক খাতে দুরাবস্থা ও বিনিয়োগে মন্দা বিরাজ করলেও রাজনৈতিক সহিংসতা ও অস্থিরতা বন্ধ হওয়ার কারণে বছরের শুরু থেকে মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করেছে। বিশেষ করে জুন মাস থেকে উল্লেখ্যযোগ্য ভাবে কমে এসেছে মূল্যস্ফীতি।
১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরের তথ্যকে ভিত্তি ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা গেছে, ২০১৪ সালের শুরুতে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারী) মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। জুনে তা কমে দাঁড়ায় ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এরপর অক্টোবরে ৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ এবং নভেম্বর শেষ তা আরও কমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ২১ শতাংশে।
তবে অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমানে পণ্যদ্রব্যের যে দাম সে হিসেবে মূল্যস্ফীতির এ হার কতোটা সঠিক তানিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
জিডিপি প্রবৃদ্ধি:
সবদিক বিবেচনায় চলতি অর্থবছর (২০১৪-১৫) কাঙ্ক্ষিত মোট দেশজ উৎপদান (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে কিনা- তা একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে থাকবে। অর্থবছরটির বাজেটে ডিজিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। বিশ্ব ব্যাংক বলছে, চলতি অর্থবছরে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে ৩৪ থেকে ৩৫ শতাংশ বিনিয়োগ দরকার।
তবে বর্তমানে বাংলাদেশে জিডিপির ২৮ শতাংশ বিনিয়োগ হচ্ছে। সুতরাং অর্থবছর শেষে এ হার ৩৪ শতাংশে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব বলেই ধরে নেওয়া যায়।
বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রাক্কলন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ২ শতাংশ। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলেছে, প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে।
রাজস্ব খাত:
ভালো অবস্থানে নেই রাজস্ব আদায়ের পরিস্থিতি। চলতি অর্থবছরে এনবিআরের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। এরমধ্যে জুলাই থেকে অক্টোবর সময়ে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয় ৩৯ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা। তবে এ সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩৭ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রথম চার মাসেই লক্ষ্যমাত্র চেয়ে রাজস্ব আদায় কম হয়েছে ২ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা।
এনবিআর কর্মকর্তাদের মতে, রাজস্ব আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে অর্থবছর শেষে তা অসম্ভবই থেকে যেতে পারে। আর রাজস্ব আদায়ের এ অবস্থা চলতে থাকলে ব্যাংক ঋণের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে পারে সরকার বাজেট অর্থায়ন।
রপ্তানি আয়:
তাজরীনে আগুন, রানা প্লাজা ধস, স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের পোশক কারখানার আগুনের ঘটনায় পোশাক খাতে রপ্তানি আয়ে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও তা অনেকটায় কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়েছে। গত অর্থবছর (২০১৩-১৪) শেষে দেশে প্রথম বারের মতো তিন হাজার কোটি ডলার রপ্তানি আয় হয়। চলতি অর্থবছরে নভেম্বর শেষে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭ কোটি ডলার। অর্থবছর শেষে এর পরিমাণ তিন হাজার ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তবে রপ্তানি আয় বাড়লেও তা মূলত একটি খাতের (তৈরি পোশাক) উপর নির্ভশীল। চলতি অর্থবছরের মোট রপ্তানি আয়ের ৮১ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। দেশের অর্থনীতির অগ্রগতির জন্য এটিকে বাঁকা চোখে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, বহুমুখিকরণ ছাড়া অর্থনীতিকে টেকসই অবস্থায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব না।
শেয়ারবাজার:
একে একে ৪টি বছর পার হয়ে গেলেও ২০১০ সলে ঘটে যাওয়া মহাধসের রেশ থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি দেশের শেয়ারবাজার। আগের তিন বছরের মতো চলতি বছরেও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলেছে। বছরের শেষ সময়ে এসে নভেম্বর থেকে কিছুটা স্থিতিশীলতার আভাস দিলেও, ডিসেম্বর মাসে এসে আবারও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে শেয়ারবাজার। তাছাড়া অর্থনীতির অন্যখাতের যে অবস্থা তাতে খুঁড়িয়ে চলা শেয়ারবাজরকে সহসা শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করানো যাবে কিনা এ-নিয়ে সংশয়ী বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৪