ঢাকা: ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার অগ্রিম পরিকল্পনা প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, আশা করা হচ্ছে, আগামী তিন বছরের মধ্যে নগরীর পূর্বাচল হবে বাণিজ্য মেলার স্থায়ী প্রাঙ্গণ।
তিনি বলেন, এছাড়া অন্যান্য ছোটখাট মেলাগুলোও পূর্বাচলেই হবে।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৫ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ তথ্য দেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমি মঙ্গলবার পূর্বাচলে গিয়েছিলাম। অনেক ভালো প্রকল্প এলাকা হচ্ছে এটা। তবে প্রকল্পের কাজ এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি। কাজ পুরোপুরি শেষ হলে সেখানে বারো মাস মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, এছাড়া আরো সুদূর প্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পদ্মার কোনো এক পাড়ে মেলার আয়োজন করা হবে।
এবারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় (ডিআইটিএফ) আরো বেশি রফতানি আদেশ পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য মেলায় ২০১০ সালে ২২ কোটি ৮৬ লাখ, ২০১১ সালে ২৫ কোটি, ২০১২ সালে ৪৩ কোটি ১৮ লাখ, ২০১৩ সালে ১৫৭ এবং ২০১৪ সালে মেলা থেকে ৮০ কোটি টাকার রফতানি আদেশ পাওয়া গেছে। তবে এবার আরো বেশি রফতানি আদেশ পাওয়া যাবে।
মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের নাম উল্লেখ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, চারটি মহাদেশের (এশিয়া, উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপ) মোট ১৫টি দেশ মেলায় অংশগ্রহণ করবে। এতে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জার্মানি অংশ নেবে।
তিনি বলেন, মেলায় প্রদর্শনযোগ্য পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে- মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিকস, ইলেট্রনিকস, পাটজাত পণ্য, লেদার, লেদার অ্যান্ড গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ঘড়ি, জুয়েলারি, সিরামিকস, দেশীয় বস্ত্র, ক্যাবল, মোবাইল ফোন, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, আসবাবপত্র ও হস্তশিল্প বিক্রি হবে।
মেলা প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এর মাধ্যমে দেশি-বিদেশি ভোক্তাকে বিভিন্ন পণ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে। বাংলাদেশের সুবিধা সম্পর্কে বিদেশি অংশগ্রহণকারী ও পরিদর্শনকারীদের নতুন নতুন শিল্প স্থাপনে উৎসাহী করা হবে।
মেলার সার্বিক নিরাপত্তা সম্পর্কে তিনি জানান, সরকারি আইন-শৃঙ্খলার পাশাপাশি প্রাইভেট সিকিউরিটি ফার্ম এবং বিজিবি নিয়োগ করা হবে। এছাড়া ওয়াচ টাওয়ার, মেটাল আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও আন্ডার ভেহিকেল ব্যবহার করা হবে। মেলার গেট, পার্কিং এরিয়ার চারপাশে ৮০টি সিসিটিভি থাকবে।
তিনি আরো বলেন, দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে প্রশস্ত ওয়াকওয়ে তৈরি করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে আমব্রেলা স্পট নির্মাণ করা হয়েছে।
এছাড়া চারটি মা ও শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মেলার সৌন্দর্যবর্ধনে ফুলের বাগান, ফোয়ারা, ইকোপার্ক থাকবে। বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া হবে। সেই লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন’ নামে একটি প্যাভিলিয়ন থাকবে।
তিনি জানান, মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এবারের মেলায় প্রবেশ মূল্য ধরা হয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের জনপ্রতি ৩০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ২০ টাকা। ভিআইপি গেটে আগমন ও নির্গমনের জন্য পৃথক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোট প্যাভিলিয়ন সংখ্যা ৯৭টি, মিনি প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৫৮টি, স্টলের সংখ্যা ৩৫১টি ও রেস্তোরাঁ থাকবে ১০টি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েত উল্লাহ আল মামুনসহ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) অন্যান্য কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৪