ঢাকা: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নিয়ে টেকসই করতে হলে ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ১১টি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
চ্যালেঞ্জগুলো হলো- উৎপাদনশীলতা বাড়াতে শ্রম দক্ষতা বৃদ্ধি, চাহিদা আছে এমন কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা, গ্যাস-বিদ্যুতের যোগান, দেশব্যাপী রেল ও সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, মানসম্মত গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া, পরিবেশ বাঁচিয়ে শিল্পায়ন করা, ঢাকাকেন্দ্রিক নগরায়ন ও শিল্পায়ন পরিহার করে একে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া, রাজস্ব আহরণ বাড়ানো, আয়-বৈষম্য কমিয়ে দারিদ্র্যের হার হ্রাস করা, প্রয়োজনীয় ভর্তুকি বজায় রাখা, স্বচ্ছতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।
বুধবার (১৪ জানুয়ারি) পরিকল্পনা কমিশনের আয়োজনে ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা দলিল প্রণয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিষয়গুলো ওঠে আসে।
পরিকল্পনা কমিশনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতেই পরিকল্পনা মন্ত্রী উপস্থিত শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ ও পরিকল্পনা কমিশন পরস্পর পরস্পরের পরিপূরক হিসেবে বিভিন্ন অর্থনৈতিক পরিকল্পনা তৈরি ও গবেষণা কাজ করবে। ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।
টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিক্সের উদাহরণ তুলে ধরে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, উন্নত বিশ্বে রাষ্ট্র বিভিন্ন পরিকল্পনা ও গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভরশীল থাকে। আমি আশা করছি আমাদের এখানেও এখন থেকে এ ধরনের ধারা অব্যাহত থাকবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আলী তসলিম বলেন, চাহিদা মোতাবেক শিক্ষা দিতে পারলে জনগোষ্ঠী দক্ষ হয়ে উঠবে। তখন উৎপাদন এমনিতেই বেড়ে যাবে। মনে রাখতে হবে রাস্তা-ঘাট ইত্যাদি হলো ভৌত অবকাঠামো। আর শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য হলো সামাজিক অবকাঠামো। এ দু’টো খাতকে সমান গুরুত্ব দিতে হবে। তবেই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে ও টেকসই হবে।
অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ গুরুত্ব দিলেন রাজস্ব আহরণ, শিক্ষা ও পরিবেশের মতো বিষয়গুলোকে। তিনি বলেন, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গেলে যে সম্পদ দরকার তার আহরণের দিকেও আমাদের নজর দিতে হবে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে আমার ধারণা ৫ থেকে ৬ লাখ কোটি টাকা লাগবে। এজন্য ট্যাক্স, জিডিপি অনুপাত বাড়াতে হবে।
গুলশান, বারিধারা, ধানমন্ডির মতো এলাকায় ফ্ল্যাট ক্রয়ের ক্ষেত্রে ট্যাক্স আরোপের পক্ষপাতি এই অধ্যাপক।
অধ্যাপক ড. নাজমা বেগম বলেন, অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা স্বচ্ছতা ও সুশাসনের অভাব। এগুলো ঠিক থাকলে জিডিপি’র প্রবৃদ্ধির হার এমনিতেই বেড়ে যেত।
মতবিনিময় সভায় পরিকল্পনা বিভাগের সচিব, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৫