ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বরগুনায় পশুর হাটে গরুর দাম চড়া

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৫
বরগুনায় পশুর হাটে গরুর দাম চড়া ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বরগুনা: ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বরগুনার বিভিন্ন এলাকায় কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। তবে এ বছর গরুর দাম বেশ চড়া।



প্রতিদিনই ট্রলার, ট্রাক ও ট্রলিতে করে দূর-দূরান্ত থেকে আসছে গরু। সেইসঙ্গে প্রতিদিনই বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। ফলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের আনাগোনায় সরগরম হয়ে উঠছে বরগুনা সদরসহ ৬টি উপজেলার ৪৭টি গরুর হাট।

সকাল-থেকে সন্ধ্যা অবধি এসব হাটে আসছে-যাচ্ছে নানা জাতের গরু। তবে ক্রেতাদের ভিড় বাড়লেও বিক্রি সমানতালে বাড়েনি। গরুর দাম বেশি হওয়ায় অনেকেই দরদামে না মেলায় ফিরে যাচ্ছেন।

জেলার কয়েকটি গরুর হাট ঘুরে দেখা যায়, এবার বিদেশি গরুর চেয়ে দেশীয় জাতের গরুর প্রতি ঝোঁক বেশি ক্রেতাদের। তবে দেশি গরুর চাহিদা তুঙ্গে থাকলেও দাম অনেক বেশি বলে মনে করছেন ক্রেতারা।

দাম বেশি হওয়ার কারণে তাই অনেকেই একাধিকবার হাটে এসেও গরু না কিনেই ফিরে যাচ্ছেন বলে জানা যায়।

গরু কিনতে বরগুনা পৌর গরুর হাটে এসেছেন চাকরিজীবী  আবুল কালাম আজাদ। তার অভিযোগ, এ বছর গরুর দাম আকাশ ছোয়া। যে গরু গত বছর ৫০ হাজারে বিক্রি হয়েছে, এবার তার দাম হাঁকা হচ্ছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এতো বেশি দামে মধ্যবিত্ত মানুষদের গরু কেনা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, তারপরও কোরবানি যেহেতু এসেছে গরু কিনতেই হবে। বেশ কয়েকটি হাট আছে, কিনব যেকোনো হাট থেকে।

হাটে আসা তরুণ সাইফুল ইসলাম রাসেল জানান, তিনি এবার প্রথম গরু কিনতে এসেছেন। কিন্তু বাজেটের চেয়ে গরুর দাম অনেক বেশি।

তবে বিক্রেতারা বর্তমান অন্যান্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সাপেক্ষে গরুর দাম বৃদ্ধিকে স্বাভাবিক মনে করছেন। তাদের মত, যেভাবে খরচ হয় সেভাবেই দাম নির্ধারণ করা হয়। তবে আরও গরু আসা শুরু হলে এ দাম একটু কমে যাবে বলে তাদের ধারণা।

বরগুনা সদর উপজেলার বাশবুনিয়া থেকে ৮টি গরু হাটে তুলেছেন আবজাল হোসেন। পেশায় গরু ব্যবসায়ী আবজাল প্রতিবছর কোরবানি জন্য ১০০/১৫০টি গরু কিনে রাখেন। তার লোকজন আরও গরু নিয়ে জেলার অন্যান্য হাটে গেছেন।

আবজাল তার প্রতিটি গরুর দাম চাইছেন ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার পর্যন্ত। কিন্তু এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা দাম উঠেছে। তবে নিজের দামে অনঢ় এ ঝানু ব্যবসায়ী।

বরগুনার বেতাগী উপজেলার সরিষামুড়ি গ্রামে গরু ব্যবসায়ী জয়নাল মুন্সিও এসেছেন পৌর হাটে। তিনি জানান, পশুর খাদ্যসহ নানা কারণে এবার গরুর দাম বেশি।

এদিকে, গরুর দাম বেশি হওয়ায় বিপাকে রয়েছেন হাটের  ইজারাদাররাও। দিন-দিন ক্রেতা সমাগম বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত ব্যবসা হচ্ছে না ‍তাদের।

বরগুনা হাটের আউয়াল নামে এক ইজারাদার বলেন, প্রতিবছর এই সময়ের জন্য অপেক্ষা করি। কিন্তু এ বছর এই ডাল সিজন মনে হচ্ছে। বেচা-বিক্রি নাই বললেই চলে। তবে এখনো সময় আছে।

অপরদিকে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। গরুর হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তার জন্যও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া হাটে জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন দেওয়া হয়েছে।

বরগুনা পুলিশ সুপার (এসপি) বিজয় বসাক বাংলানিউজকে বলেন, ৪৭টি গরুর হাটের মধ্যে যে হাটগুলো গুরুত্বপূর্ণ সেখানে স্থায়ী পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অন্য হাটগুলোতে পুলিশের টহল টিম কাজ করছে। টাকা চেক করে নিতে মাইকে সচেতন করা হচ্ছে।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, এবার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হবে না। তবে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রস্তুতি রয়েছে তাদের।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৫
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।