ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মৌসুমী ব্যবসায়ীদের দখলে খুলনার চামড়া ব্যবসা

মাহবুবুর রহমান মুন্না, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৫
মৌসুমী ব্যবসায়ীদের দখলে খুলনার চামড়া ব্যবসা ছবি: মাঞ্জারুল ইসলাম/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: কোরবানির ঈদে খুলনার চামড়ার বাজার দখল করে নিয়েছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। সিন্ডিকেটের কারণে বেশিরভাগ চামড়াই কিনতে পারেননি প্রকৃত ব্যবসায়ীরা।



তাদের অভিযোগ, সরকারের নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে ফরিয়া ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনেছেন। এছাড়া ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা না পাওয়ায় অর্থাভাবে অনেকেই চামড়া কিনতে পারেননি।

চামড়া কেনাবেচার মৌসুমে প্রতিবারের মতো এবারও অসহায় হয়ে পড়েছেন প্রকৃত চামড়া ব্যবসায়ীরা। এবার পাড়ায় পাড়ায় মৌসুমী ব্যবসায়ীদের তৎপরতা বেশী থাকায় প্রকৃত চামড়া ব্যবসায়ীরা ছিলেন অসহায়।

কোরবানির প্রথম দিন শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ও শনিবার (২৬ সেপ্টম্বর) নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র ধরা পরে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুলনা মহানগরীর শেখপাড়া, শেরে বাংলা রোড, ফেরিঘাট মোড়,  খালিশপুর, দৌলতপুর ও ফুলবাড়িগেট এলাকায় চামড়া ব্যবসার প্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ৩০টি। এখানকার ব্যবসায়ীরা ঢাকা ও যশোরের নওয়াপাড়ার ট্যানারি মালিকদের কাছে গরু-ছাগলের চামড়া বিক্রি করে থাকেন।

কিন্তু ট্যানারি মালিকদের কাছে বিগত বছরের বিপুল অংকের টাকা পাওনা থাকায় খুলনার ব্যবসায়ীরা পুঁজি সংকটে এবার অনেকে চামড়া কিনতে পারেননি। আর এ সুযোগ নিয়েছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।
khulna_leather_bg
কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়া জানান,  দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে চামড়া ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কিন্তু ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা না পাওয়ায় এ ব্যবসায়ী এবার নিজের দোকানটিও খোলেননি। কিছু ব্যবসায়ী লোন নিয়ে পুঁজি যোগাড় করে ফের চামড়া কিনলেও ফরিয়া ও মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা টিকতে পারছেন না বলে জানান তিনি।
 
সেলিম নামের এক কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, অন্যান্য বছরের ন্যায় এবছরও চামড়া পাচার হবে।

তিনি জানান, অ্যাসোসিয়েশনের বেধে দেওয়া মূল্যের চেয়ে কয়েকগুন বেশি মূল্য, ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা না পাওয়ার পাশাপাশি ফরিয়া আর মৌসুমী ব্যবসায়ীদের আধিপত্যের কারণে খুলনায় একাধিক চামড়া ব্যবসায়ী এবারের কোরবানি ঈদে তেমন চামড়াই কেনেননি।

নগরীর শেরে বাংলা রোডের চামড়া ব্যবসায়ী মনু দাস জানান, ফরিয়া ও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কারণে এবারও স্থায়ী ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়েছে।

তিনি জানান,  ট্যানারি মালিকরা ব্যাংক থেকে ঋণ পেলেও কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীরা ঋণ পান না। বাধ্য হয়ে তাদেরকে ধার-দেনা অথবা চড়া সুদে বাইরে থেকে ঋণ নিতে হয়। এরপর চামড়া কিনে ট্যানারি মালিকদের কাছে চামড়া বিক্রি করে পাওয়া টাকা বকেয়া থেকে যায়।

খুলনা জেলা কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আমান উল্লাহর দাবি, এ অঞ্চলে ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে ট্যানারি মালিকদের দ্রুত পাওনা পরিশোধের।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৫
এমআরএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।