ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সরকারকে চাপে ফেলতে পোশাক শিল্প নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা!

ঊর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৫
সরকারকে চাপে ফেলতে পোশাক শিল্প নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা! ফাইল ফটো

ঢাকা: দেশের পোশাক শিল্প নিয়ে নেতিবাচক প্রচরাণা চালাচ্ছে বিশেষ একটি মহল। বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনাকে পুঁজি করে এই মহল এখন সরকারকে চাপে ফেলতে চাইছে।

এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কয়েকজনও জড়িয়ে পড়েছেন বলে জানা যায় বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সূত্রে।

বিজিএমইএ সূত্রে জানা যায়, ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজার ও জাপানি নাগরিক হোশি কনিও নিহত হওয়ার পরবর্তি পাঁচদিনে পূর্ব নির্ধারিত সূচীতে যেসব ক্রেতার বাংলাদেশে আসার কথা ছিল, তাদের মধ্যে ১০ শতাংশেরও কম তাদের সফর বাতিল বা বৈঠকের স্থান পরিবর্তন করেছেন। আর ক্রেতাদের যে অঘোষিত সংগঠনটি বৈঠক বাতিল করেছে, তার কারণ সম্পূর্ণই ভিন্ন।

সূত্র জানায়, বৈঠকের আগে বিজিএমইএ’র নবনিযুক্ত সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ইউএন মিশনে ছিলেন। বৈঠকে তিনি উপস্থিত থাকতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয়ের জেরেই তা বাতিল করা হয়। কিন্তু একই সময়ে যেহেতু বিদেশি নাগরিক হত্যার ইস্যুটি সামনে ছিলো, তাই সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তৎপর ওই মহল ইস্যুটিকে ব্যবহার করে।   

বাংলাদেশ রফতানিকারক সমিতির (ইএবি) সভাপতি ও বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী এ ব্যাপারে বাংলানিউজকে বলেন, বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনায় পোশাক শিল্পের ক্রেতারা বাংলাদেশে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন, এ তথ্য সঠিক নয়। কিছু ক্রেতা তাদের বৈঠক স্থান পরিবর্তন করেছেন হত্যার ঘটনার পরপরই। সে পরিস্থিতিও এক সপ্তাহের মধ্যেই ঠিক হয়ে গেছে। কিন্তু দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এই ইস্যু নিয়ে যেভাবে নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হয়েছে, তাতে করে আমাদের ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়তে হতে পারে।

অন্যদিকে ১৭ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে এই বিষয়ে কথা বলেন বিজিএমইএ’র সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশেও ঘটে। এটা পোশাক খাতে প্রভাব ফেলার কোনো কারণ নেই। বর্তমানে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো আছে। সরকার সার্বিক নিরাপত্তায় বিশেষ নজর দিচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজিএমইএ’র সাবেক এক সহ-সভাপতি বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় হাতিয়ার এখন পোশাক শিল্প। একদিকে দেশীয় কর্মসংস্থান চাহিদার বড় অংশ পূরণ, অন্যদিকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এই শিল্প। তার থেকেও বড় কথা, পোশাক শিল্পের মাধ্যমে বিশ্বে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং হচ্ছে। পোশাক রফতানিতে চীনের পরেই বিশ্ব বাজারে এখন বাংলাদেশের অবস্থান।

তিনি বলেন, পোশাক শিল্পে কোনো ধাক্কা আসা মানেই তা পুরো দেশকে নাড়া দেয়া। নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে এই শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মাধ্যমে সরকারকে চাপে ফেলাই স্বার্থান্বেষী ওই মহলের উদ্দেশ্য। আর এই ফাঁদে পা দিচ্ছেন পোশাক শিল্পের অনেক ব্যবসায়ী। সরকারকে চাপে ফেলে কিছু সুবিধা আদায়ের কথা তারা ভাবলেও এতে যে পোশাক শিল্প ইমেজ সংকটে পড়বে সেদিকে খেয়াল নেই কারোর।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৫
ইউএম/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।