ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

যমুনা ব্যাংকের মুনাফায় শুভঙ্করের ফাঁকি

শাহেদ ইরশাদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৬
যমুনা ব্যাংকের মুনাফায় শুভঙ্করের ফাঁকি

ঢাকা: বেসরকারিখাতের যমুনা ব্যাংক আন্তর্জাতিক লেনদেনে অতিরিক্ত চার্জ আদায় করে প্রায় দুই কোটি টাকা মুনাফা বেশি দেখিয়েছে। তাদের বিধিবহির্ভূত চার্জ আদায় ও বেশি মুনাফা দেখানোর কারণ জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।



সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথমার্ধে যমুনা ব্যাংক সুইফট লেনদেনে ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা নির্ধারিত চার্জের অতিরিক্ত আদায় করেছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনের নির্দেশ অনুযায়ী, সুইফট চার্জের সঙ্গে গ্রাহকের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কোন সুযোগ নেই।  

দেশীয় ব্যাংকগুলোর আন্তর্জাতিক লেনদেনে সুইফট ব্যবহারে সুইফট কোম্পানিকে দেওয়া চার্জের অতিরিক্ত গ্রাহকের কাছ থেকে না নিতে ২০০৯ সালে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে অতিরিক্ত চার্জ নিয়ে মুনাফা বেশি দেখানোর বিষয়টি উঠে এসেছে।

সুইফটের মাধ্যমে লেনদেনের ধরন ও পরিমান ভেদে ২০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা চার্জ নির্ধারিত রয়েছে। কিন্তু যমুনা ব্যাংক সুইফটের নির্ধারিত চার্জের চেয়ে বেশি আদায় করেছে। সেখান থেকেই অতিরিক্ত আয় দেখানো হয়েছে।

যমুনা ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, লেনদেন করতে গিয়ে সুইফট কর্তৃপক্ষকে নির্ধারিত চার্জ পরিশোধ করতে হয়। এছাড়াও ব্যাংকের টেলিফোন, ইন্টারনেট বিলসহ বিভিন্ন ধরনের খরচ রয়েছে। লেনদেন সম্পন্ন করতে আলাদা কর্মকর্তাও রয়েছেন। এজন্য নির্ধারিত চার্জের চেয়ে ব্যাংকের খরচ বিবেচনা করে সাম‍ান্য বেশি হারে চার্জ আদায় করা হয়েছে।

সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফিন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশনস (সুইফট) হচ্ছে আর্ন্তজাতিক লেনদেন সংস্থা। বিশ্বের ২শ’ দেশের প্রায় ১১ হাজার আর্থিক প্রতিষ্ঠান সুইফট’র মাধ্যমে আর্থিক তথ্য আদান প্রদান করে থাকে। এর মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য ও সেবা সংক্রান্ত তথ্য যেমন আদান প্রদান করা যায়, তেমনি স্বল্প খরচে মুহূর্তের মধ্যেই আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করতে পারে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, একই সময়ে যমুনা ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ১৪৬ কোটি টাকা। প্রায় দু’কোটি বাদ দিলে হবে ১৪৪ কোটি। এতে প্রকৃত মুনাফাও কমে যাবে। ব্যাংকের হিসেবে নিট মুনাফা হয়েছে ৪৭ কোটি টাকা। ব্যাংকের মূল আয় সুদ থেকে। কিন্তু ব্যাংকগুলো এখন ব্যবসা ভালো করতে পারছে না। তাই বিভিন্ন খাত থেকে চার্জ আদায় করছে।

অতিরিক্ত চার্জ আদায় বিষয়ে ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে সম্প্রতি চিঠি দিয়ে কারণ জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া অতিরিক্ত টাকা কেন ফেরত দেওয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে যমুনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল আলম বলেন, লেনদেনের জন্য নির্ধারিত চার্জ সুইফটকে দিতে হয়। এই খাত থেকে আয়ের সুযোগ নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক ভুল বুঝে চিঠি দিয়েছিল। চিঠির জবাব দিয়েছি।  

বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৬
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।