ঢাকা: ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি, ডিটেইল ডিজাইন, অতিরিক্ত জমি অধিগ্রহণ, ফেরিঘাট স্থানান্তরসহ ছয় কারণে বেড়ে গেছে স্বপ্নের পদ্মাসেতুর ব্যয়। তবে নির্ধারিত সময়েই শেষ হবে দেশের সবচেয়ে বড় এই প্রকল্পের কাজ।
সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, প্রায় ৪ বছর বিলম্বের কারণে প্রকল্পের প্রতিটি খাতেই ব্যয় বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মূল সেতু ও নদীশাসন ব্যয় প্রকল্পে। এর মধ্যে মূল সেতুতে ব্যয় বেড়েছে ২ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা ও নদীশাসনে ৩ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা। আর জাজিরা ও মাওয়া সংযোগ সড়ক এবং সার্ভিস এলাকা নির্মাণেও ব্যয় বেড়েছে ২২৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সম্প্রতি সেতু ভবনে এক অনুষ্ঠানে জানান, ডলারের বিনিময় হার ৬৯ টাকা থেকে ৭৮ টাকা হয়েছে। ২০১০ সালে ডিপিপি করার সময় ডিটেইল ডিজাইন সমাপ্ত হয়নি। ২০১০ সালের পর কন্ট্রাক্ট অ্যাওয়ার্ড করতে ৪ বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। ৫০০ একর অতিরিক্ত জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। মাওয়া প্রান্তে ১.৩ কিলোমিটার অতিরিক্ত নদীশাসন কাজ করা হচ্ছে। উভয় প্রান্তে ফেরিঘাট স্থানান্তরের জন্য সড়ক নির্মাণ ও প্রশস্তকরণ কাজ করা হচ্ছে।
সেতু প্রকল্প সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে পুরো প্রকল্পে একটি স্তরে পরামর্শক ধরা হলেও এখন দুই স্তরে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে পরামর্শক ব্যয়ও বেড়েছে ১৭১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। পাশাপাশি মাওয়া প্রান্তে নদীতীর রক্ষায় অতিরিক্ত ৬৭২ কোটি টাকা ও ফেরিঘাট স্থানান্তরে ১২৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। আর জমি অধিগ্রহণে ২১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ও পুনর্বাসন খাতে ৯১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয় বাড়বে।
এদিকে আন্তর্জাতিক দরপত্র হওয়ায় প্রতিটি প্যাকেজে ঠিকাদারদের বিল ডলারে পরিশোধ করতে হবে। তবে তিন বছরে ডলারের বিনিময় মূল্য বেড়ে গেছে। ২০১১ সালে সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) ডলারের বিনিময় মূল্য ধরা হয় ৬৯ টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮ টাকা ৪০ পয়সায়।
সেতু প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, পদ্মাসেতুর কাজের অগ্রগতি মার্চেই ২০ শতাংশে পৌঁছে যাবে। ইতোমধ্যে মূল সেতুর ১০টি টেস্ট পাইলের মধ্যে চারটি টেস্ট পাইল ড্রাইভ, ভায়াডাক্টের ১৬টি টেস্ট পাইলের মধ্যে আটটি টেস্ট পাইল ড্রাইভ এবং ৬৪টি অ্যাংকর পাইলের মধ্যে ৩০টি অ্যাংকর পাইল ড্রাইভ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
সব মিলিয়ে মূল সেতুর ভৌত অবকাঠামোর অগ্রগতি হয়েছে ১৭ শতাংশ। গত মাসে যা ছিল ১৬ শতাংশ।
এছাড়া নদীশাসন কাজ হয়েছে ১৪ শতাংশ, গত মাসে যা ছিল মাত্র ১২ শতাংশ। এ কাজের জন্য প্রতিদিন ২০ হাজার ৩০০টি ব্লক তৈরি হচ্ছে। এছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যেমন অফিস ল্যাবরেটরি, ওয়ার্কশেড, স্টোর হাউজ, লেবারশেড, জেটি ইত্যাদি নির্মাণ কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে সেতু বিভাগের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে(এডিপি) মোট বরাদ্দ ছিল ৮ হাজার ৮৭১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে অর্থাৎ ২০১৫ সালের ডিসেম্বর নাগাদ খরচ হয়েছে ১ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা।
** মূল সেতুর অগ্রগতি ১৭, নদীশাসনের ১৪ শতাংশ
বাংলাদেশ সময়: ০০০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৬
এসএ/এএসআর