ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহে পুরো মাত্রায় জমে উঠেছে এসএমই মেলা। মেলার চতুর্থ দিন শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।
নগরীর টাউন হল মাঠে মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) শুরু হওয়া ৫ দিনব্যাপী মেলা শনিবার (৩০ জানুয়ারি) শেষ হবে। মেলায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ৫০টি স্টল স্থান পায়।
মেলায় উৎপাদিত পাটজাত পণ্য, খাদ্য ও কৃষিজাত পণ্য, চামড়াজাত সামগ্রী ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য, হস্তশিল্প, ফ্যাশন ও ডিজাইনসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের পণ্য প্রদর্শিত হচ্ছে।
মেলায় ক্রেতাদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী নকশি কাঁথা ও মেয়েদের নানা ডিজাইনের থ্রি-পিস। দেশি কাপড়ের নকশা করা পোশাকও রয়েছে পছন্দের তালিকায়। নিরাপদ পরিবেশে ক্রেতারা তাদের পছন্দের পোশাক কিংবা জিনিসপত্র কেনাকাটা করতে পারছেন।
মেলায় নজর কেড়েছে চাপাইনবাবগঞ্জের ঐত্যিহ্যবাহী নকশি কাঁথা। রাজশাহী নকশি ঘর নামে একটি স্টলে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায় মিলছে মোলায়েম নকশি কাঁথা। এখানে আলাপ হয় স্টল মালিক পারভীন আক্তারের সঙ্গে। প্রায় ৮ বছর যাবত তিনি এ পেশায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, কানসাট, টিকটিকিপাড়া, গজগজাপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামে তার নারী কর্মী বাহিনী বাহারি ডিজাইনের নকশি কাঁথা তৈরি করে। সেখানে প্রতিদিন ৮৫ জন নারী শ্রমিক কাজ করেন। বাড়ির কাজের ফাঁকে ফাঁকে তারা একেকজন হয়ে উঠেছেন ‘সেলাই দিদিমণি’।
পারভীন আক্তারের নকশি কাঁথা শিল্পে জড়িয়ে নারীরা তাদের ভাগ্য বদলও করছেন। একেকটি নকশী কাঁথা তৈরির জন্য তারা পাচ্ছেন ১ হাজার ২’শ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত।
স্বাবলম্বী নারী উদ্যোক্তা পারভীন আক্তার জানান, দেশের যে কোন প্রান্তে এসএমই মেলা হলেই তিনি অংশ নেন। ময়মনসিংহের এ মেলাতেও বিকিকিনি বেশ ভালো হওয়ায় তৃপ্তির হাসি হেসে পরিশ্রমী এ উদ্যোক্তা জানান, নকশি কাঁথা যুগ যুগ ধরে চলে আসা ঐতিহ্য। দেশীয় এ ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতেই আমার এ প্রয়াস।
পারভীন আক্তারের এ স্টলে নকশি কাঁথা ছাড়াও পাওয়া যাচ্ছে কুষণ কাবার, বুটিকের থ্রিপিস, চাদর, রানারমেট ও টেবিলের কথ।
মেলার আরেকটি স্টলে পাওয়া যাচ্ছে নানা রকমের হস্তশিল্প। এ স্টলের নাম নতুনত্ব বুটিকস ও হস্তশিল্প। এ স্টলের কর্ণধার হাসিনা মুক্তা। উদ্যমী এ নারী ১৪ বছর যাবত নিজেকে জড়িয়েছেন এ পেশায়। তার স্টলে মিলছে বিভিন্ন রকমের থাই ফুল, বনসাই, নেট ফুল, চাবির রিং প্রভৃতি।
নিজেকে এ পেশায় নিবেদিত করার বিষয়ে হাসিনা মুক্তা জানান, শৈশব থেকেই সৃষ্টিশীল কিছু করার ইচ্ছা ছিল। বিয়ের পর পরই বুটিকসের ব্যবসা শুরু করি। প্রথমে তাকে সহায়তা করতেন ২৫ জন নারী কারিগর। বর্তমানে তার এখানে বেতনভুক্ত নারী শ্রমিকের সংখ্যা ১০ জন। ২০১৪ সালে শ্রেষ্ঠ আত্মকর্মী হিসেবে তিনি পেয়েছেন জাতীয় যুব পুরস্কার।
এ মেলায় আগত ক্রেতারা জানান, এখানে তুলনামূলক কম দামেই পণ্য বিকিকিনি হচ্ছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৬
এমজেএফ/