ঢাকা: ফেব্রুয়ারির প্রথম শুক্রবারে (০৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর খুচরা বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। সঙ্গে ব্রয়লার মুরগির প্রতিকেজিতে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা।
ক্রেতারা বলছেন, সপ্তাহ ব্যবধানে এভাবে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের বেশ বিপাকে পড়তে হচ্ছে। অন্যান্য খাতে খরচের কমিয়ে সবজি বাজারের খরচে যোগ হতে হচ্ছে।
ছুটির দিন সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেল।
সরেজমিনে জানা যায়, গত সপ্তাহে রাজধানীর বাজারে কেজিপ্রতি দুই থেকে তিন টাকা দাম কমেছিল পেঁয়াজ ও আলুর। ওই সময় নতুন দেশীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয় কেজিপ্রতি ২৮ টাকায়।
কিন্তু এ সপ্তাহে অর্থাৎ শুক্রবারে কেজিপ্রতি পেঁয়াজ দুই টাকা বেড়ে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে মালিবাগ কাঁচাবাজারের বিক্রেতা সজীব মিয়া বলেন, এতোদিন নতুন পেঁয়াজ ক্ষেত থেকে সরাসরি বাজারে এসেছে।
এখন পেঁয়াজ বাছাই করে হালকা শুকিয়ে বাজারে আনা হয়, এ কারণে দাম কিছুটা বাড়তির দিকে। পেঁয়াজের মৌসুম এখন তবুও দাম বাড়ছে।
তবে আগামী সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহ থেকে প্রতিকেজি আলুর দাম পাঁচ টাকা কমেছে। বাজারভেদে এ সপ্তাহে আলু প্রতিকেজি ১৫ থেকে ১৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ২০ থেকে ২২ টাকা।
এদিকে এ সপ্তাহে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির মাংসের দামও। টানা দু’সপ্তাহ অপরিবর্তিত দামে রাজধানীর বাজারে মুরগির মাংস বিক্রি হলেও শুক্রবার কেজিপ্রতি পাঁচ থেকে ১০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা।
বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৬০ টাকায়। তবে অপরিবর্তিত দামে বিক্রি হচ্ছে লেয়ার মুরগি, প্রতিকেজি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুগদা কাঁচাবাজারের একাধিক বিক্রেতা জানান, ছুটির দিনে চাহিদা বেশি থাকায় বিক্রেতারা ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে পরিচিত ও নিয়মিত ক্রেতাদের বেলায় দাম কিছুটা কম রাখা হচ্ছে।
বিগত তিন মাসের বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রতি শুক্রবার (বাজার ও আকারভেদে) ফার্মের মুরগির ডিম হালিপ্রতি এক থেকে দু’টাকা বাড়তি দামে কেনেন ক্রেতারা।
এ সপ্তাহেও সেই ধারা অব্যাহত রেখেছেন ডিম বিক্রেতারা। গত পরশু ফার্মের মুরগির ডিম হালিপ্রতি বিক্রি হয়েছে (বাজার ও আকারভেদে) ৩২ থেকে ৩৩ টাকায়, যা গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় ৩৪ থেকে ৩৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এদিকে রাজধানীর খুচরা বাজারে দেড় মাস ধরে ঊর্ধ্বমুখী রসুনের দাম। দেড় মাস আগে দেশি রসুনের দাম ছিল প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১১০ টাকা।
টানা দুই সপ্তাহ ধরে দেশি রসুন ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা রসুন বাজারভেদে কেজিপ্রতি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় ৫ টাকা দাম বেড়েছে বিভিন্ন সবজির। ফুলকপি, বাঁধাকপি প্রতিপিস ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। দাম কমে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজিতে।
অপরিবর্তিত রয়েছে কাঁচামরিচ ও শালগমের দাম। কাঁচামরিচ কেজিপ্রতি ৬০ টাকা, শালগম ২০ টাকা, বেগুন জাতভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শিম প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।
এদিকে গত সপ্তাহ থেকে বাড়তি দামে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫২ টাকা কেজিতে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চিনি আমদানিতে শুল্কারোপ করায় খোলা বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। ২২ ডিসেম্বর পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ট্যারিফ মূল্য বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
তবে চিনির আগের মজুদ থাকলেও দেশের বাজারে শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণার পর থেকেই দাম বাড়িয়ে দেন বিক্রেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৬
এফবি/এমএ