বেনাপোল (যশোর): ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী সংগঠনের ডাকা ধর্মঘটে বেনাপোল বন্দর দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে ‘ইনটিগ্রেটেড চেকপোস্টের (সুসংহত চেকপোস্ট)’ ট্রাক পার্কিংয়ে চার্জ বৃদ্ধির প্রতিবাদে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠন এ পথে বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়।
এর আগে একই অভিযোগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ছয় ঘণ্টা বাণিজ্য বন্ধ ছিল।
এদিকে বাণিজ্য বন্ধের কারণে দু’পারের বন্দরে আমদানি-রপ্তানি পণ্য নিয়ে পাঁচ শতাধিক ট্রাক আটকা পড়ে আছে। এসব পণ্যের মধ্যে মাছ, পেঁয়াজ, ফুলসহ বিভিন্ন প্রকারের কাঁচামাল রয়েছে। দ্রুত ধর্মঘট প্রত্যাহার না হলে ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
পেট্রাপোল বন্দরের আমদানি রপ্তানিকারক রেজাউল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ভারতের পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় ‘ইনটিগ্রেটেড চেকপোস্টে (সুসংহত চেকপোস্ট) আমদানি-রফতানি পণ্যের ট্রাক পার্কিং চার্জ হঠাৎ করে অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এছাড়া বাণিজ্যিক কাজে সেখানে ব্যবসায়ীদের প্রবেশের উপর নানা বিধি-নিষেধ ও নিয়ম-কানুন বেধে দেওয়া হয়েছে। এতে একদিকে দ্রুত বাণিজ্যে বাধা সৃষ্টি হবে অন্যদিকে অতিরিক্ত খরচ পড়বে। এসব অনিয়মের প্রতিবাদে সভা ডেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রাখা হয়।
এসময় বন্দর কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছিলেন দু’দিনের মধ্যে সন্তোষজনক সমাধান দেওয়া হবে। ব্যবসায়ীরাও জানিয়ে দেন ১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরের মধ্যে সমাধান না হলে লাগাতার ধর্মঘট ডাকা হবে। বিষয়টি নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো সমাধান না দেওয়ায় অবশেষে ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার এ ধর্মঘট ডাকে। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার ধর্মঘট চলবে বলেও জানান তিনি। বর্তমানে উভয়ের মধ্যে আলোচনা চলছে।
জানা যায়, পেট্রাপোল বন্দর টার্মিনালে আগে পণ্যবাহী চার চাকা লরীর (ট্রাক) প্রতিদিনের পার্কিং চার্জ ৮০ রুপি ছিল। এখন তা বাড়িয়ে ২৭০ রুপি করা হয়েছে। আর ১৬ চাকা লরীর (ট্রাক) পার্কিং চার্জ ১২০ রুপি থেকে ৫৬০ রুপি করা হয়েছে।
এছাড়া বাণিজ্যিক কাজে ‘ইনটিগ্রেটেড চেকপোস্টে ঢুকতে ঘণ্টা প্রতি চার্জ নির্ধারণ করা হচ্ছে। এতে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে খরচ বাড়লে তার প্রভাবও পড়বে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের উপর।
বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হাসাবুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ওপারে ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটের কারণে এখনও পর্যন্ত কোনো পণ্য বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেনি।
উল্লেখ্য, শুত্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় ভারতের ল্যান্ডপোর্ট অথরিটির চেয়ারম্যান ওয়াইএস সেরওয়াত ও বাংলাশের স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তপন কুমার চৌধুরী ফিতা কেটে ‘ইনটিগ্রেটেড চেকপোস্টের (সুসংহত চেকপোস্ট) শুভ উদ্বোধন করেন। ৩ বছর আগে এ চেকপোস্টের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৬
আরএ