ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ইন্টারনেট ব্যবহারে ভ্যাট কমানোর প্রস্তাব অ্যামটবের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৬
ইন্টারনেট ব্যবহারে ভ্যাট কমানোর প্রস্তাব অ্যামটবের ছবি: বাংলানিউজটোেয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: আসন্ন বাজেটে ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর ভ্যাট কমানোর প্রস্তাব করেছে মোবাইল অপারেটদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (অ্যামটব)।  

 

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অ্যামটবের পক্ষে থেকে এ প্রস্তাব করা হয়েছে।


 
বর্তমানে মোবাইল ও মডেমে ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর বা মূসক) আরোপিত রয়েছে।
 
অ্যামটবের সাধারণ সম্পাদক টিআইএম নুরুল কবির বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ৯০ শতাংশ মানুষ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এ ব্যবহারের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোবাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনেক সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ভ্যাট কমালে ব্যবহারকারী বাড়বে এবং এ ব্যবহারের ফলে সরকার অন্যান্য দিক থেকে বেশি রাজস্ব পাবে।
 
তিনি বলেন, বর্তমানে ল্যাপটপের চেয়ে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। ইন্টারনেট ব্যবহার আরো সহজ ও সব মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ভ্যাটে ছাড় দেওয়া দরকার। ব্যবহার বাড়লে অন্যান্য সেবা থেকে কর পাবে সরকার।
 
স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনা সব প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টাও বলেছেন, মোবাইল অপারেটদের অবদানের ফলে ৯৫ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে সেবা পাচ্ছেন।
 
সিম ট্যাক্স কমানোর প্রস্তাব করে তিনি বলেন, বর্তমানে মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ মানুষ মোবাইল ব্যবহার করেন। সিম ট্যাক্স কমানো হলে এর আওতার বাইরে থাকা ৬০ শতাংশ চলে আসবে। এতে সরকারের রাজস্ব বাড়বে। বর্তমানে প্রতিটি সিম ও রিম বিক্রির ওপর ৩৬.৬৫ শতাংশ ভ্যাট ও ৬৩.৩৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক রয়েছে।
 
গত ৪ থেকে ৬ বছরে মোবাইল অপারেটর খাত সরাসরি জিডিপিতে প্রায় ৩ শতাংশ অবদান রেখেছে। সরাসরি অবদান রাখার পরও সিগারেটসহ অন্যান্য খাতের সঙ্গে এ খাতকে মিলিয়ে ফেলা হয়। অন্যান্য খাতের সঙ্গে এ খাতেরও কর্পোরেট ট্যাক্স সমন্বয় করা হলে এ খাত সুবিধা পাবে।
 
তিনি বলেন, বাংলাদেশে খুব দ্রুত সময়ে টেলিকম খাতে অগ্রগতি হয়েছে। ১৯৯৩ সালে প্রথম বাংলাদেশে সিটিসেল মোবাইল ফোন কোম্পানি এসেছে। ১৯৯৬ সালে গ্রামীণ ও বাংলালিংক, ১৯৯৭ সালে রবি, ২০০৪ সালে টেলিটক এবং ২০০৭ সালে এয়ারটেল এসেছে।
 
এ খাতে গত ২০ বছরে ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (এফডিআই) প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশের করনীতি পরিবর্তিত হলে এ খাতে বিনিয়োগের হার আরো বেড়ে যাবে।
 
বাংলাদেশে সাড়ে ১৩ কোটি অ্যাকটিভ সিম রয়েছে। ২০০৪ সাল থেকে ৪ মিলিয়ন থাকলেও ২০১৬ সাল পর্যন্ত ১৩১ মিলিয়ন হয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০০৪ সালে ৫ লাখ হলেও ২০১৬ সালে তা ৫ কোটি ৮০ লাখে পৌঁছেছে।
 
এসডিজি, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় এ খাত অত্যন্ত বড় ভূমিকা রাখতে পারে। সেক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে উচ্চ কর। বাংলাদেশে এ খাত সর্বনিম্ন রেটে সেবা দেয় এবং বেশি রাজস্ব পরিশোধ করে।
 
অ্যামটবের একজন প্রতিনিধি আয়কর বর্ষ পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে বলেন, ব্যাংকিং খাতে আয়কর বর্ষ জুলাই-জুন থেকে পরিবর্তন করে জানুয়ারি-ডিসেম্বর করা হয়েছে। আমরা করবর্ষ নিয়ে সমস্যায় থাকি। তাই এ খাতেরও করবর্ষ পরিবর্তন করা দরকার।
 
অনাবাসী ব্যক্তির (বিদেশি) সম্পর্কে তিনি বলেন, এ খাতে অনাবাসী ব্যক্তির ক্ষেত্রে কনসালট্যান্সি পারিশ্রমিক, কারিগরি সহায়তা ও প্রশিক্ষণের পারিশ্রমিক ইত্যাদির ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ উৎসে আয়কর কর্তন করা হয়। এক্ষেত্রে অনাবাসী ব্যক্তি চুক্তির ক্ষেত্রে কোম্পানির ওপর চাপিয়ে দিতে চান। এ হার কমিয়ে আনা দরকার।
 
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় এনবিআরের সদস্য ফরিদ উদ্দিন, পারভেজ ইকবাল, ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন, তন্দ্রা শিকদার ও অ্যামটবের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৬
আরইউ/এএসআর

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।