ঢাকা: শুধু রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, জঙ্গি তৎপরতা ও গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটই নয়, বিনিয়োগ বোর্ড আইন, শুল্ক আইন, ও বিনিয়োগে সরকারি অনুমোদনে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক বাধাই বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সমস্যা সৃষ্টি করছে। কাঠামোগত পরিবর্তন ও সরকারের দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণই এসব সমস্যা কাটাতে পারে।
বুধবার (১২ মে) সচিবালয়ে ‘ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)-বাংলাদেশ বিজনেস ক্লাইমেট ডায়ালগ’- এ এসব সমস্যার কথা উঠে আসে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের (১১-১২ মে) দু’দিনব্যাপী এ ডায়ালগ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
সকালে ডায়ালগের শুরুতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের প্রধান পিয়ারে মায়াদুন বলেছিলেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, জঙ্গি তৎপরতা ও গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটই বড় বাধা। তবে পুরো ডায়ালগ অনুষ্ঠানে সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক বাধাই বড় বলে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা তাদের মতামতে তুলে ধরেন।
সকালে ডায়ালগে যোগ দিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। পৃথিবীর সব দেশেই এখন ওষুধ রফতানি হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ হারে এগোচ্ছে। অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছে সরকার। দেশে ১০০টি ইকোনোমিক জোন তৈরি করেছি। এসব জোনে বিদেশিদের বিনিয়োগের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ইইউ প্রতিনিধিরা যেসব বাধার কথা বলেছেন, সেহুলোর সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা বিনিয়োগে উৎসাহী করতে স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক বিনিয়োগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
ডায়ালগ শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের প্রধান পিয়ারে মায়াদুন (Pierre Mayudon) বলেন, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে। তবে, এ ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলোকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি অনুমতি পেতে দীর্ঘসূত্রতা, লভ্যাংশ পাঠাতে জটিলতা ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করছে। আমদানি শুল্ক ছাড়, কাস্টমস নীতি, লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন, সার্ভিস সেক্টরে বৈদেশিক বিনেয়োগে উচ্চ আদালতের মামলা জটিলতা, ট্যাক্স আদায় ও নির্ধারণ জটিলতাসহ অন্যান্য কারণে বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে।
এসব বিষয়ে সমধানের কথা উল্লেখ করে প্রেস ব্রিফিংয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, ওষুধ শিল্পে বিনিয়োগে বাধা দূর করার পরামর্শ দিয়েছেন ইউ প্রতিনিধিরা।
ডায়ালগে আমদানি শুল্কসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসব বাধা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব সমস্যা চিহ্নিত করে পরিপূর্ণভাবে সমাধানেরও পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
বিনিয়োগ পরিবেশের জন্য কাঠামোগত পরিবর্তন ইতোমধ্যে করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। বিদ্যুত ও গ্যাস সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিনিয়োগ সহজীকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত ওয়ার্কিং গ্রুপ করা হয়েছে।
৫টি বিষয় নিয়ে দু’দিনব্যাপী ডায়ালগে আলোচনা হয়। সেগুলো হচ্ছে- ওষুধ শিল্প খাত, আমদানি শুল্ক, লাইসেন্স ও সাভিস সেক্টরে বৈদেশিক বিনেয়োগে সমস্যা, স্বচ্ছ বিনিয়োগ উৎস নির্ধারণ এবং ট্যাক্স পলিসি নির্ধারণ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৬
এসএমএ/এএসআর
** রাজনৈতিক অস্থিরতা ও জঙ্গিবাদ বিনিয়োগবৃদ্ধিতে বড় বাধা