ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাম্পার ফলনেও হতাশ মানিকগঞ্জের মরিচ চাষিরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫২ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৬
বাম্পার ফলনেও হতাশ মানিকগঞ্জের মরিচ চাষিরা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মানিকগঞ্জ: এবার বাম্পার ফলনে মুখে হাসি ফুটেছিল মানিকগঞ্জের মরিচ চাষিদের। কিন্তু মৌসুমের মাঝপথে এসেই তাদের সে হাসি রূপ নিয়েছে গভীর হতাশায়।

উত্তম পরিচর্যা ও অনুকূল আবহাওয়ায় মানিকগঞ্জে কাঁচা মরিচের বাম্পার ফলন হলেও তাই হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন কয়েক হাজার মরিচ চাষি।

স্থানীয় পাইকার‍ী বাজারগুলোতে মরিচের তেমন চাহিদা না থাকা ও বিদেশে মরিচ রফতানি প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবার উল্টো উৎপাদন খরচ তোলা নিয়েই কপালে ভাঁজ পড়েছে তাদের।

শনিবার (১৮ জুন) দুপুরে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার বরংগাইল মরিচের হাটে বাংলানিউজের কাছে এমনটাই জানালেন হাটে আসা একাধিক মরিচ চাষি।

খেতের মরিচ নিয়ে হাটে এসেছেন শিবালয় উপজেলার উলাইল ইউনিয়নের দারোগা আলীর ছেলে বরকত আলী।

তিনি জানান, এবার ৫ বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ করেছেন। জমি তৈরির পর চারা রোপণ থেকে শুরু করে ফলন আসা পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে প্রায় লক্ষাধিক টাকা। এছাড়া খেত থেকে মরিচ তুলতে শ্রমিকের পারিশ্রমিক দিতে হয় প্রতিকেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা করে। এরপর মরিচ হাটে আনতে প্রতিকেজি হিসেবে ভ্যান ভাড়া দিতে হয় এক টাকা হারে।

তিনি জানান, খেত থেকে মরিচ তুলে তা বাজার পর্যন্ত আনতেই কেজিপ্রতি খরচ ৫ থেকে ৬ টাকা। কিন্তু এখন স্থানীয় বাজারগুলোতে মরিচের দাম যাচ্ছে ৪ টাকা থেকে ৫ টাকা কেজি। এ অবস্থায় অনেকটা দিশেহারা অবস্থা তার।

ঘিওর উপজেলার বইন্যা গ্রামের ঈমান আলীর ছেলে লোকমান মিয়া সায় দেন বরকত আলীর কথায়। জানান, এখন খেত থেকে মরিচ তুলে বাজারজাত করাতেই মণপ্রতি অন্তত ৫০ টাকা করে লোকসান যাচ্ছে।

এ পড়তি দামেও কেন মরিচ বাজারে তুলছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, এখন গাছ থেকে মরিচ না তুললে গাছগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। কয়েকদিন পর যদি দাম একটু বাড়ে সে আশায় খেত থেকে মরিচ তুলে আনা হচ্ছে।

বরংগাইল হাটের মরিচ ব্যবসায়ী আলিম শেখ জানান, মানিকগঞ্জের বরংগাইল, ঝিটকা ও বাঠইমুড়ি এলাকায় মরিচের হাট রয়েছে। এসব হাট থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫০ ট্রাক মরিচ ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী, বাইপাইল, ফরিদপুর ও মাগুরাসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় যায়।

এছাড়া মানিকগঞ্জের মরিচ মালয়েশিয়া, আরব আমিরাত ও সিঙ্গাপুরসহ ১০টির মতো দেশে রফতানি হয়। কিন্তু এবার চাহিদা কম থাকার কারণে মরিচ কিনতে আগ্রহ নন অন্যান্য জেলার পাইকারী ক্রেতারা। সেইসঙ্গে বিদেশে রফতানির পরিমাণও অনেক কমে এসেছে। ফলে মরিচের দাম একেবারেই কমে গেছে।

তবে দাম পড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে বরংগাইল মরিচ আড়তের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক বলেন, চাহিদার চেয়ে বেশি ফলনের জন্যেই এবার মরিচের দাম অনেকটা কম। এছাড়া মরিচে দ্রুত পচন ধরে নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে বিদেশে এবার রফতানি হচ্ছে নামমাত্র।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী উপ পরিচালক আব্দুল কাদের বাংলানিউজকে বলেন, চলতি মৌসুমে মানিকগেঞ্জ সাতটি উপজেলায় এবার প্রায় ৭ হাজার ৭৫ হেক্টর জমিতে কয়েক হাজার কৃষক মরিচ আবাদ করেছেন। তবে শিবালয়, হরিরামপুর ও ঘিওর উপজেলায় মরিচের আবাদ হয়েছে বেশি।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩০ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৬
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।