ঢাকা: ঈদ-উল আযহায় ৫০ শতাংশ চামড়ার যোগান দেয় রাজধানীর হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্প। সেখান থেকে স্থানান্তরিত হয়ে এবারের ঈদের পশুর চামড়া সাভারের ট্যানারি শিল্পনগরীতে প্রসেসিং করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মালিকরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি স্থানান্তরের প্রস্তুতি প্রায় সম্পূর্ণ। দীর্ঘদিনের সময় দূষণ থেকে মুক্তি পাবেন হাজারীবাগের মানুষ, রক্ষা পাবে বুড়িগঙ্গা নদী।
আর্থিক সংকট থাকলেও বড় ট্যানারিগুলো স্থানান্তরের প্রস্তুতি প্রায় সম্পূর্ণ করে ফেলেছে। তবে মেশিন ও ড্রাম বসাতে একটু সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন মালিকরা।
মালিকরা বলছেন, ‘আমরাও সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই’। যারা স্থানান্তর করতে পারবেন না, তাদের ট্যানারি ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন তারা।
অ্যাপেক্স ট্যানারিতে গিয়ে দেখা গেছে, একদিকে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হচ্ছে, অন্যদিকে সাভারে বিভিন্ন ধরনের মেশিন স্থানান্তরের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
কিছু মেশিন ইতোমধ্যেই স্থানান্তর করা হয়েছে। কিছু মেশিন বিদেশ থেকে আসবে।
সব মিলিয়ে সাভারের নতুন ট্যানারিতে ঈদ-উল আযহার চামড়া প্রসেসিং করা হবে।
ট্যানারি শ্রমিক আবদুল হক জানান, চামড়ার মেশিনগুলো খুবই স্পর্শকাতর। একেকটি মেশিন বসানো ও কাজের উপযোগী করে তুলতে বেশ সময় লাগে।
অ্যাপেক্স ট্যানারি লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক এমএ মাজেদ বলেন, ‘স্থানান্তরের প্রস্তুতি প্রায় সম্পূর্ণ। এখান থেকে কিছু মেশিন যাবে, কিছু মেশিন বিদেশ থেকে আসবে। ঈদকে সামনে রেখে শুধু আমরাই নই, সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সাভারে আমাদের ভবনের কাজ শেষ, বিদ্যুতের জন্য আবেদন করা হয়েছে। যেকোনো সময় আমরা যেতে প্রস্তুত’।
ঢাকা ট্যানারি লিমিটেডের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ভবনসহ বেশ কিছু কাজ শেষ। সাভারে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট চালু করার আগেই আমরা চলে যেতে পারবো’।
আল-মদিনা লেদার কমপ্লেক্সের একজন সিকিউরিটি কর্মকর্তা বলেন, ‘সব মেশিন সাভারে নেওয়া সম্ভব নয়। কিছু মেশিন নেওয়া যাবে। সেভাবে আমরা প্রস্তুত হচ্ছি’।
হাজারীবাগের ট্যানারি ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের আগে বেশিরভাগ বড় ট্যানারি সাভারে স্থানান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে ছোট ট্যানারিগুলো।
ঈদের আগে বড় ট্যানারিগুলো স্থানান্তরিত হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফিনিক্স লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘ঈদ-উল আযহায় ৫০ শতাংশ পশুর চামড়া আসে। ঈদের আগে ট্যানারি স্থানান্তরে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। বিসিকও কাজ শেষ করার চেষ্টা করছে’।
মহিউদ্দিন আরো বলেন, ‘একেকটি ড্রাম ১০ হাজার কেজি ওজনের। মেশিনগুলো স্পর্শকাতর। এসব সরিয়ে নিয়ে ঠিকমতো বসানো বেশ কঠিন ও সময়সাপেক্ষ’।
‘আর্থিক সংকটের মধ্যেও ট্যানারি মালিকরা দ্রুত স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন। ছোট ট্যানারিগুলো আর্থিক সমস্যায় পড়বে। আমরা তাদেরকেও সহযোগিতার চেষ্টা করছি’।
এ নেতা বলেন, ‘আমরাও হাজারীবাগে থাকতে চাই না। সাভারে গেলে চামড়া শিল্প আন্তর্জাতিক দিক থেকে হারানো ইমেজ ফিরে পাবে, রফতানি বাড়বে’।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৬
আরইউ/এএসআর