শিলিগুড়ি বিবিআইএন এক্সপো থেকে: ঢাকাইয়া জামদানির কদর বিশ্বজোড়া। তবে পশ্চিমবঙ্গে নারীদের কাছে একটু বেশিই প্রিয় এ জামদানি শাড়ি।
বাংলাদেশের এ ঐতিহ্য নিয়ে হিমালয় পর্বতের পাদদেশ শিলিগুড়িতে এসেছেন নন্দন ক্রাফটের কর্ণধার নারী উদ্যোক্তা ফাতেমা জান্নাত নিপা। মূলত তিনি ঢাকার সোনারগাঁওয়ের জামদানি, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি এবং তার নিজস্ব ডিজাইনের কিছু শাড়ি নিয়ে এসেছেন।
বিবিআইএন বিজনেস এক্সপোতে আসার উদ্দেশ্য জানতে চাইলে ফাতেমা জান্নাত বাংলানিউজকে বলেন, দেশে অনেক মেলায় অংশ নিয়েছি, নিজেও আয়োজন করেছি। যেহেতু বিবিআইএন অনেক বড় প্লাটফর্ম, তাই এখানেও বাংলাদেশের বাজার তৈরি করতে এলাম।
‘পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে বাংলাদেশের জামদানির অনেক চাহিদা। এ চাহিদার কথা মাথায় রেখেই বিভিন্ন ডিজাইনের শাড়ি নিয়ে এসেছি। ’
সাড়া কেমন পাচ্ছেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, মনে হয় এখানকার কর্তৃপক্ষ এ এক্সপোর বিষয়ে খুব বেশি একটা প্রচার-প্রচারণা করেননি। তবুও আমরা আশাবাদী ভাল কিছু হবে।
‘নারী উদ্যোক্তা হিসেবে এখানে আসতে পেরে অনেক ভাল লাগছে। বিশেষ করে সাধারণ স্টলগুলোর চেয়ে নারীদের স্টলগুলো নিতে ভাড়া অর্ধেক দিতে হয়েছে, সেদিক থেকে আমি হ্যাপি’।
এ নারী উদ্যোক্তা বলেন, ২০০১ সাল থেকে আমি এ বিজনেস শুরু করি। তবে এখন পর্যন্ত আমার কোনো আউটলেট নেই। আমি পাইকারদের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে সরাসরি সাপ্লাই দেই। সিলেট এবং চট্টগ্রাম আমার সবচেয়ে বড় মার্কেট।
দেশের বাইরে মেলায় অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশের বাইরে এটা আমার প্রথম অংশগ্রহণ। খুব ভাল লাগছে, বিশেষ করে বিবিআইএন এর মতো এতো বড় প্লাটফর্মের মেলায় এসে স্টল দিতে পেরেছি, এটাই অনেক। তবে একটা কথা বলতেই হয়, দেশের বাইরের কোনো মেলায় অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ মালামাল ক্যারি করার যে ব্যারিয়ার তা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের ভাবা দরকার। কারণ ৩০-৪০ কেজির বেশি হলে ভ্যাট দিতে হচ্ছে। একটা মেলায় অংশ নিতে গেলেতো সামান্য মালামাল নিয়ে আসা যায় না। এটা ভাবতে হবে, যেন এ প্রক্রিয়াটা সহজ হয়।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে ফাতেমা জান্নাত বলেন, আমাদের গার্মেন্ট পণ্যের চাহিদা দেশের বাইরে অনেক। তবে দেশের বাইরে যেসব নারী থাকে তাদের জন্য থ্রি-পিস, সালোয়ার তেমন কেউ এক্সপোর্ট করে না। আমার ইচ্ছে দেশের বাইরে সেইসব নারীদের জন্য বাংলাদেশি থ্রি-পিস, সালোয়ার এক্সপোর্ট করা। আমাদের দেশীয় পণ্যের বাজার বাইরে তৈরি করা।
তিনি বলেন, চার দেশ মিলে যে বিবিআইএন বিজনেস ফোরামের যাত্রা শুরু হলো, সেটা যেন আমাদের জন্য সব প্রক্রিয়া সহজ করে। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
তিন দিনব্যাপী এ মেলায় বাংলাদেশি প্রাণ ফুডস, সাসকো গ্রুপ, কাই অ্যালুমিনিয়াম, আবাদি ন্যাচার ফার্মস লিমিটেড, ওয়েল ফুড, প্যারাগন সিরামিকসসহ বিশটিরও বেশি প্রতিষ্ঠান স্টল বসিয়েছে।
আর ভারতীয় স্টলগুলোর মধ্যে রয়েছে- সোলার প্যানেল এবং পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্রের স্টল, নির্মলিয়া, পশ্চিমবঙ্গ ট্যুরিজম বোর্ড, এবিও ইলেক্ট্রিক পাওয়ার লিমিটেড, ফাইন্যান্সিয়াল এসকট সার্ভিস, ওয়ানকার্ট ইন্টারন্যাশনালসহ ২৫টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ভুটানেরও ফুড আইটেম নিয়ে স্টল রয়েছে।
তবে এসব কিছু ছাড়িয়ে বাংলাদেশি পোশাকের স্টলগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। বাংলাদেশি কাপড়ে পশ্চিমবঙ্গের লোকদের আগ্রহ দেখে এখানে স্টল নিয়ে আসা বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরাও খুশি।
বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) কলকাতার ললিত ওবেরয় হোটেলে সার্কভুক্ত চারটি দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এ বিজনেস ফোরামের উদ্বোধন করা হয়। পারদিন (১৫ জুলাই) শিলিগুড়ির সিদ্দি বিনায়াক গ্রাউন্ডে শুরু হয় তিন দিনব্যাপী বিবিআইএন বিজনেস এক্সপো। বিবিআইএনভূক্ত ৪ দেশের ৬০টি স্টল এক্সপোতে রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৬
এসএইচ/এইচএ/
**বিবিআইএনের সফলতায় বাধা রাজনৈতিক
**বিবিআইএন’র চার দেশে হবে ইকোনমিক জোন