ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মীনাবাজারে অনিয়ম: আসাদ এভিনিউ

সব ক্ষোভ মোবাইল কোর্টের ওপর!

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০১৬
সব ক্ষোভ মোবাইল কোর্টের ওপর! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: মাসখানেক আগে হিমায়িত গরুর মাংস বিক্রির দায়ে জরিমানা করা হয়েছিল। তবু পাল্টায়নি অবস্থা।

এখানে তো একদিন আগের মাংস হিমায়িত অবস্থায় রাখা হয়েছে। কেন বারবার জরিমানার পরও স্বাস্থ্যসম্মত পণ্য পরিবেশনে সতর্ক হচ্ছে না মীনাবাজার?
 
উপরের এই প্রশ্নের জবাবে পাল্টা প্রশ্ন মীনাবাজারের আসাদ এভিনিউ আউটলেটের ম্যানেজার আবু সালেহর: ‘‘মাংস আমি ফ্রিজে না রাখলে কোথায় রাখবো?’’
 
তার আগে ওই আউটলেটটির আরেকজন কর্মী বললেন, ‘‘ মোবাইল কোর্টের অভিযান হয়েছে। তারপরও আমরা এভাবে রেখেছি। আমাদের কিছুই করার নেই। আমরা এভাবেই রাখবো। ’’
 
‘‘শুধু কি পুরনো হিমায়িত মাংস? এদের অধিকাংশ পণ্যই বেকডেটেড (মেয়াদোত্তীর্ণ)’’—এমন অভিযোগ সেখানে উপস্থিত ক্রেতার কাছ থেকেই শোনা গেল।
 
‘‘ব্রিংগিং ফ্রেশনেস টু ইউর লাইফ’’ আর বাংলায় ‘‘জীবনে আনে সজীবতা প্রতিদিন’’—মীনাবাজারের আউটলেটের দরজার সামনে এ স্লোগান ঝুলিয়ে রাখলেও আউটলেটটি বেকডেটেড পণ্যে ঠাসা। আসাদ এভিনিউয়ের আউটলেটে রোববার দুপুরে একজন ক্রেতা একটি লিকুইড সোপ দেখিয়ে বলেন, ‘‘ওটার উৎপাদন তারিখ দেয়া আছে একবছরের বেশি আগে। তাই উৎপাদনের এক বছর পরে আমি কেন এটা কিনতে সুপারশপে আসবো। শুধু এটা নয়, প্রায়ই হাতে নিয়ে ডেট চেক করতে গিয়ে চোখে পড়ে বেশি আগের পণ্য রাখা। ’’
 
আবার কাঁচা মাল ও শাকসবজি ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়ার পরও বিক্রি চলতে দেখা গেছে আসাদ এভিনিউ আউটলেটে। সেখানে কামরাঙা ফ্যাকাশে হয়ে অন্য রঙ ধরেছে। তবু সাজিয়ে রেখে বিক্রি করা চলছে। অথচ দাম কমেনি, বরং চলছে সেই চড়া দামে বিক্রি।
 
ওই সময় সেখান থেকে একটি আইসক্রিম কিনে খাওয়ার সময় দেখা গেল, এটি ‘ড্যাম্প’ হয়ে গেছে। আইসক্রিমটি বেশ আগের অথবা ঠিকমতো সংরক্ষণ করা হয়নি।
 
এছাড়া মীনাবাজারের এ আউটলেট ঘুরে দেখা গেছে, আমদানি করা শত শত পণ্যে বিএসটিআই নির্দেশিত মাননিয়ন্ত্রিত নয়। এর কোনো পণ্যের গায়ে বিএসটিআইয়ের সিল নেই। ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানেও বিষয়টি ধরা পড়েছে। এভাবে সুপারশপ মীনাবাজারে আমদানি করা বেশিরভাগ পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণের বাইরে থেকে যাচ্ছে।
 
এ বিষযে মীনাবাজারের ম্যানেজার বললেন, ‘‘ইমপোর্ট করা প্রডাক্টে কোথাও বিএসটিআইয়ের সিল থাকে না। মোবাইল কোর্ট ইমপোর্টারদের না ধরে আমাদের ধরছে। ’’
 
মীনাবাজারের ওই আউটলেটের আরেকজন কর্মকর্তা ইনামুস শাকুর জানালেন, ‘‘মোবাইল কোর্টের জরিমানার কোনো আগা-মাথা নেই। আমরা ডেট লিখে গরুর মাংস বিক্রি করছি। এদিকে রোববার গুরু জবাই করার নিয়ম নেই। কিন্তু মোহাম্মদপুরের টাউন হল মার্কেটে গুরু জবাই হয়েছে। আমরা এটা রাখলে মামলা হয়ে যেতো। যত জরিমানা সব হয় সুপার শপে। রাস্তায় গিয়ে কোনো জরিমানা করে না মোবাইল কোর্ট। ’
 
ম্যানেজার আবু সালেহ মোবাইল কোর্টের অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘‘মোবাইল কোর্টগুলো নিজেরা স্পেশাল বেনিফিট পাওয়ার জন্য অভিযান চালায়। আমি যদি প্রতিবাদ বা তর্ক করি তাহলে আমাদের শাস্তি ডাবল হয়ে যায়। তাদের ভাবখানা হচ্ছে,  ‘আমি ম্যাজিস্ট্রেট, আমার কথার অবাধ্য হয়েছ?’। এটা তারা গায়ের জোরে করছে। ’’
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০১৬
এসএ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।