ঢাকা: লবণের মূল্য বৃদ্ধিতে কোরবানির চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ট্যানারির মালিকরা। গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ দামে লবণের বস্তা কিনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) হাজারীবাগ ট্যানারি পল্লীতে গেলে ব্যবসায়ীরা জানান, এমনিতে চামড়া শিল্পের দুর্দিন যাচ্ছে। তার ওপরে কোরবানির সময় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে লবণের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে করে চামড়া শিল্পকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
ইব্রাহিম লেদার লিমিটেডের মালিক ইব্রাহিম বাংলানিউজকে বলেন, ‘একটা গরুর পুরো চামড়ায় ৮ থেকে ১০ কেজি লবণ লাগে। এক বস্তা (৬০ কেজি) লবণ কিনতে ১২০০ থেকে ১৭০০ টাকা পর্যন্ত লেগেছে। চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে অন্য খরচের চেয়ে লবণের দাম বেশি লেগে যাচ্ছে’।
‘গত ঈদে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় লবনের বস্তা কিনেছি। এবার ডাবলের বেশি দাম নিয়ে নিচ্ছে’।
ট্যানারি শিল্প তো এমনিতে ধ্বংসের মুখে। তার ওপরে নানা ঝামেলা চাপিয়ে দিচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মেসার্স এস এম ট্যানারির মালিক পারভেজ।
তিনি বলেন, ‘সারা বছর চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে যতো লবণ লাগে, তার ৭০ শতাংশ এ সময় লাগে। ঈদের আগে লবণের সংকট সৃষ্টি করে সিন্ডিকেট গোষ্ঠী দাম বাড়িয়ে দেয়। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় আমাদের মতো ছোট চামড়া ব্যবসায়ীদের’।
এক বছরের ব্যবধানে দ্বিগুণের বেশি দাম হবে, এটা লবণ ব্যবসায়ীদের বাড়াবাড়ি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, কোরবানিকে কেন্দ্র করে এক কোটি চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ঈদের দিন থেকে লবণের সংকট তৈরি করা হয়েছিলো। সরকার সময়মতো লবণ আমদানির পদক্ষেপ না নিলে শুরুতে লক্ষ্য অর্জনে হোঁচট খেতে হতো। এরপরও গতবার যে লবণের বস্তা ৫০০ টাকায় কিনেছি, এবার দ্বিগুণের বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে’।
‘ঈদের দিন অনেকে এক বস্তা লবণ ১ হাজার ৮শ’ টাকা দিয়েও কিনেছেন। চামড়া শিল্পের স্বার্থে ঈদের আগেই এ বিষয়গুলো সরকার খেয়াল রাখলে এ ধরনের সমস্যা হয় না’।
লবণের দাম বাড়ার বিষয়টি স্বীকার হাজারীবাগ ট্যানারির লবণ ব্যবসায়ী শাহাজাহান বলেন, গত বছরের চেয়ে লবণের দাম অনেক বেড়েছে। ঈদের আগেই কম ছিলো। লবণের দামের বিষয়ে মিল মালিকরা ভালো বলতে পারবেন। তারা উৎপাদন কম হওয়ায় লবণের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমরা মিল থেকে কিনে এখানে সাপ্লাই দেই। মিল মালিকেরা দাম বাড়ালে আমরাও বাড়াই’।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৬
এমসি/এএসআর