মিষ্টি খাওয়ানো বাঙালির সংস্কৃতি। কোথাও কেউ ভালো কিছু করলেই বাঙালি মিষ্টি খেতে চায়, খাওয়াতেও চায় ।
ফাস্টফুড কালচারে অনেকের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন কিছুটা এলেও মিষ্টির সংস্কৃতি পাল্টায়নি। তবে অপ্রীতিকর হলেও সত্যি পাল্টে গেছে মিষ্টির স্বাদ।
এত যে মিষ্টি খাওয়া, তার মধ্যে একটা আক্ষেপ কিন্তু প্রায়শঃই শোনা যায়, ‘সেই আগের স্বাদ আর নেই’।
সাধারনের এই খেদ মেটাতে এসেছে ‘মিঠাই’। ‘স্বাদে ঐতিহ্য’ এই স্লোগান নিয়ে।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ দুগ্ধজাত পণ্য বাজারে এনেছে আগেই। আর নতুন এনেছে মিষ্টি। মানুষের মুখে মুখে ঐতিহ্যের সেই স্বাদ ফিরিয়ে দিতে চায় তারা।
যারা খেয়েছে তারা বলছে, বাড়িয়ে বলা নয়, প্রাণের মিষ্টিতে স্বাদ আছে, অতীতেরই স্বাদ, ঐতিহ্যের স্বাদ।
নাম হিসেবে ‘মিঠাই’ও অনেকের পছন্দ। মন্ডা-মিঠাই সেতো মিষ্টিরই আরেক নাম।
চেখে দেখতে চান? হাতের কাছেই কোথাও থেকে ‘মিঠাই’ নামের দোকানটি খুঁজে নিন। সেখানে পাবেন চমচম, কালোজাম, লালমোহন, রসগোল্লা, কাচাগোল্লা, কাচা সন্দেশ, ক্ষীর টোস্ট, মালাইকারি, লাড্ডু, হালুয়া, বরফি, আমৃত্তি। দধির যেমন টক-মিষ্টি দুইই রয়েছে অন্যান্য মিষ্টিরও রয়েছে হরেক রকমফের। স্বাদে আর গুনে আলাদা।
মিঠাইয়ের উদ্দেশ্য একটাই, কাউকেই অতৃপ্ত রাখা নয়। মুখে মুখে যেমন ভিন্ন স্বাদ, তেমনটাই তাদের ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের মিঠাই।
আরেকটি কথা মিঠাইয়ের মিষ্টি কিন্তু সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই।
দেখতে দেখতে প্রাণ-আরএফএল’র ‘মিঠাই’ যাত্রা দুই বছর পার করেও ফেলেছে। ২০১৪ সালের মে মাসে রাজধানী ঢাকায় ৭টি আউটলেট দিয়ে যাত্রা শুরু করে। নগরে জনপ্রিয়তা পেতে সময় লাগেনি। ফলে দ্রুতই মিঠাইয়ের আউটলেট বাড়তে থাকে। প্রথমে ছিলো মোহাম্মদপুর, মিরপুর-১০, কাজিপাড়া, রামপুরা, নারিন্দা, আশকোনা ও মালিবাগে। এই সেপ্টেম্বরে হাতিরপুল, বনশ্রী, মহাখালীসহ আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মিঠাইয়ের আউটলেট বসেছে।
দেশের বাজারে স্বাদের মিষ্টি সরবরাহ করছে ঠিকই কিন্তু মিঠাইয়ের প্রতিযোগিতা আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে। কেবল দেশের মানুষের জন্য নয়, বিদেশেও বাঙালির মুখে মিষ্টি তুলে দিতে চায় মিঠাই। এজন্য তাদের চোখ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, আরব-আমিরাত মালয়েশিয়ায়। সবচেয়ে বড় চোখ পাশের দেশ ভারতের দিকে। স্বাদের মিষ্টি তৈরিতে ভারতের নাম রয়েছে, রয়েছে বড় বড় প্রতিষ্ঠান। তাদেরকেই প্রধান প্রতিযোগী ভেবে বাজার বাড়াচ্ছে মিঠাই।
প্রাণ-আরএফএল’র বেশ দায়িত্ব নিয়েই বলছে, তাদের এই মিঠাই সম্পূর্ণ হাইজেনিক, নন-ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে তৈরি। ফলে আরও অনেক পণ্যের মতো মিষ্টিতেও আন্তর্জাতিক বাজারে তারা প্রতিযোগিতায় জয়ী হতে পারবে।
দেশের বাজারেও চলবে একই মিঠাই। কেউ চাইলে এক কেজি যেমন কিনতে পারবেন, ২০ কেজিরও অর্ডার করলে তাও সরবরাহ করা হবে। আর সে অর্ডার দেওয়া যাচ্ছে অনলাইনে।
অনলাইনে ফিডব্যাক নেওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে ক্রেতার ইচ্ছা-অনিচ্ছা, স্বাদ-পছন্দেরও দাম থাকছে মিঠাইয়ের মিষ্টিতে। মিঠাইয়ের ফেসবুক ফ্যান পেজে এরই মধ্যে রয়েছে তিন লাখ মিষ্টিপ্রেমি।
ক্রেতা যাতে সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় করতে পারে সে কারণে বিক্রির প্রক্রিয়ায়ও আনা হয়েছে উদারতা। কেউ চাইলে যাতে একটি মিষ্টি কিনেও খেতে পারেন তার সুযোগ রাখছে মিঠাই। তাছাড়া ছোট্ট প্যাকেটে করে একটি-দুটি মিষ্টিও করা হচ্ছে হাতের কাছে সহজলভ্য।
সব মিলিয়ে মিঠাই, দেশের মিষ্টিজগতে একটি পরিবর্তন এনে দিতে চায়। তবে তাতে অবধারিতভাবে ধরে রাখা হবে স্বাদের ঐতিহ্য।
বাংলাদেশ সময় ১৭২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৬
এমএমকে