ঢাকা: দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের সব থেকে ব্যয়বহুল প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প। ১ হাজার ৬২ একর জায়গার ওপর রাশান ফেডারেশনের সহযোগিতায় কাজ এগিয়ে চলেছে।
ভূমি অধিগ্রহণ পর্ব শেষ হয়ে চলছে দেয়াল নির্মাণসহ নানা অবকাঠামোগত কাজ। মাটি ভরাটের কাজও প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে।
এবার শুরু হবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে মূল প্ল্যান্ট নির্মাণের কাজ। ৫০ বছর অর্থনৈতিক জীবন বিবেচনায় দু’টি ইউনিটে ২৪শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। বিদ্যুৎ খরচা পড়বে মাত্র ৩ টাকা।
২০১৭ সালেই প্রকল্পের মূল নির্মাণকাজ শুরু হবে। প্রতিটি ১২শ' মেগাওয়াটের প্রকল্পের প্রথম ইউনিটটি ২০২৩ সালে ও ২০২৩ সালে দ্বিতীয়টির কাজ চালু হবে। এ দু’টি ইউনিট নির্মাণের লক্ষ্যে প্রকল্প প্রস্তাব করেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। মূলত এ প্রকল্পের আওতায় শুরু হতে যাচ্ছে মূল পর্বের কাজ। যেখানে দু’টি ইউনিট নির্মাণের মাধ্যমে ২৪’শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।
রোববার (০৯ অক্টোবর) পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগে প্রস্তাব পাঠিয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। স্বল্প সময়ে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হবে।
পরে প্রকল্পটি চূড়ান্তভাবে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের পর ২০১৭ সালেই মূল পর্বের প্ল্যান্ট নির্মাণ শুরু হবে। এটিই এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে সব থেকে ব্যয় বহুল প্রকল্প। দু’টি প্ল্যান্টসহ আনুষঙ্গিক কাজের মোট ব্যয় হবে ৯১ হাজার কোটি টাকা।
পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের মূল কাজ নির্মাণের প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। এ প্রকল্পের আওতায় দু’টি ইউনিট নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৯১ হাজার কোটি টাকা। এরপরে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে পিইসি সভা শেষে প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে।
রূপপুরে ৫০ বছর ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। ২০২৩ সালে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রথম ইউনিট চালুরে পরিকল্পনা রয়েছে। ২০২৪ সালে চালু করার পরিকল্পনা দ্বিতীয় ইউনিট।
মূল ইউনিট নির্মাণের পাশাপাশি দৈনিক ১৭৫০ কিউবেক মিটার পানি এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য ৮১ মিলিয়ন কিউবেক মিটার পানির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও এ প্রকল্পের আওতায় করা হবে। নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ প্লান্ট ৫০ বছর ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ফুয়েল এবং ম্যানেজমেন্টও এর আওতাভূক্ত।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এ প্রকল্পের আওতায় দু’টি ইউনিট নির্মাণ কাজ শুরু করবো। ২০২৩ সালে প্রথম ইউনিটে ১২শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাবো। পরের বছর থেকে একই পরিমাণে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ পাবো।
অন্যদিকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, মূল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১২.৬৫ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ অর্থাৎ ১১.৩৮০ বিলিয়ন ডলার দিবে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকার বেশি। এ বিষয়ে ইআরডি ও রাশিয়ার মধ্যে একটি ঋণচুক্তিসই হয়েছে।
ইআরডি‘র অতিরিক্ত সচিব ফরিদা নাসরিন বাংলানউজকে বলেন, ১১ দশমিক ৩৮০ বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি বাংলাদেশের ইতিহাসে মাইল ফলক। এতো বড় চুক্তি আর হয়নি। এ টাকা দিয়ে মূলত পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মূল কাজ ইউনিট নির্মাণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৬
এমআইএস/এসএইচ