ঢাকা: চিনি কারখানার মালিকরা বাজারে চিনি কম ছাড়ায় খুচরা বাজারে চিনির সংকট দেখা দিয়েছে। দু’দিন আগেও খুচরা বাজারে খোলা চিনির দাম ছিলো ৭১ টাকা কেজি।
মঙ্গলবার ( ১১ অক্টোবর) রাজধানীর বাড্ডা ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭৩ টাকা প্রতি কেজি। প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭৬ টাকা কেজিতে।
কারওয়ানবাজারে চিনি কিনতে এসেছেন তৌফিক হাসান। কথার এক পর্যায়ে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, চিনির দাম কখন বাড়ে সেটা বোঝা যায় না। গত কয়েকদিন আগেও চিনির দাম ছিল ৭০ থেকে ৭১ টাকা কেজি। কিন্তু মঙ্গলবার বিক্রি হচ্ছে ৭৩ টাকা কেজি। অন্যদিকে প্যাকেটজাত চিনিতে কেজি প্রতি দাম বেড়েছে এক টাকা।
ক্রমাগত চিনির দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এভাবে যদি যখন তখন চিনির দাম বাড়ে তাহলে তো সমস্যা। বাজারগুলোতে সরকারের নজরদারির অভাব রয়েছে। যদি তাই না থাকে তাহলে হঠাৎ করে কেন নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে ?
ভারতে যদি কোনো পণ্যের ১০ পয়সা দাম বাড়ে সেখানে আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। সেখানে আমাদের দেশে কেজি প্রতি ১০ টাকা বাড়লেও আমরা নিশ্চুপ থাকি। আমাদের আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
রাজধানী বাড্ডার খুচরা ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, কিছুদিন আগে ৫০ কেজি বস্তার প্রতি বস্তা চিনির দাম ছিল ৩৩৮০ টাকা সেখানে এখন কিনতে হচ্ছে ৩৫০০ টাকায়। ফলে কেজি প্রতি মূল্য পড়ে ৭০ টাকা। এর সঙ্গে আনুসঙ্গিক খরচ যোগ করলে দাম পড়ে যায় ৭১ টাকা। তাই প্রতি কেজি ৭৩ টাকায় বিক্রি না করলে লোকসান হয়ে যায়।
এছাড়া আমদানিকারকদের সিন্ডিকেট কারসাজিসহ নানা কারণে গেল ১ বছরে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে চিনির দাম। রমজানের আগে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ছিল ৫০ থেকে ৫২ টাকা।
এছাড়া দেশে চিনির আমদানি ও স্থানীয় মজুদ চাহিদার চেয়েও বেশি। এরপরও কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ হঠাৎ করে বাড়ানো হয় নিত্য এই পণ্যটির দাম। আর আমরাই বা কি করবো বলেন? যেমন দামে ক্রয় করতে হয় তেমন দামেও বিক্রি করতে হয়,বলেন তিনি।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী আজাদ আহম্মেদ বাংলানিউজকে বলেন, দেশে বছরে চিনির চাহিদা ১৬-১৭ লাখ টন। এর মধ্যে দেশীয় চিনিকলগুলোতে উৎপাদিত হয় এক থেকে দেড় লাখ টন। তাই দেশের চিনির বাজার মূলত আমদানি নির্ভর। এছাড়া বাজারে বর্তমানে চিনি সংকট রয়েছে। এই আছে এই নেই। আর যে পরিমাণ চিনির প্রয়োজন তার চেয়ে সরবরাহ কম করা হচ্ছে ফলে দাম বাড়ছে।
এখানে যারা চিনি আমদানি বা মজুদ করছেন তারাই এই নিত্যপণ্যটির দাম বাড়িয়ে মুনাফা অর্জন করছেন। ফলে এখানে অামাদের কিছুই করার থাকছে না। অন্যদিকে চিনিবাহী ট্রাক মিল গেইটে অপেক্ষমাণ থাকার কারণেও খরচ বাড়ছে।
এছাড়া সরকারের বিভিন্ন করারোপের কারণেও চিনির দাম বেড়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৬
এসজে/এএটি/আরআই