ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অবৈধ লেনদেনে ফেঁসে যাচ্ছে কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৬
 অবৈধ লেনদেনে ফেঁসে যাচ্ছে কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স

ঢাকা: ব্যবস্থাপনার নামে ৩৩ কোটি টাকা অবৈধ লেনদেন করে ফেঁসে যাচ্ছে বেসকারি খাতের বিমা কোম্পানি কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। কোম্পানিটির এই অনিয়ম খতিয়ে দেখতে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) বিশেষ অডিটর (বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান) নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।



আইডিআর’এ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আইডিআরএ’র কাছে তথ্য রয়েছে, কোম্পানির পরিচালনা-পরিষদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ মিলে নির্ধারিত ব্যয়ের চেয়ে এই পরিমাণ টাকা বেশি খরচ দেখিয়ে শেয়ারহোল্ডাদের টাকা লোপাট করেছে। এ কারণে আইডিআরএ’র সর্বশেষ বোর্ড সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও চেয়ারম্যান বরাবর এ সংক্রান্ত নিদের্শনা পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ একচুয়ারি বাংলানিউজকে বলেন, জীবন বিমার পাশাপাশি সাধারণ বিমা খাতের কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে নিয়ম বহির্ভূত খরচ পাওয়া গেছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্র জানায়, পুঁজিবাজারে তালিকভুক্ত কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের গত সাত বছরে (২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত) ব্যবস্থাপনা ব্যয় হয়েছে ৮৭ কোটি ৬ লাখ টাকা। অথচ নিয়ম অনুসারে প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ব্যবস্থাপনা ব্যয় ৫৪ কোটি ৩৪ লাখ করতো পারবে। সে হিসেবে গত সাত বছরের ৩৩ কোটি ৩ হাজার টাকা বেশি অবৈধ লেনদেন করেছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। যা বিমা আইন, ২০১০-এর ৬৩ ধারা ও বিমা বিধিমালা ১৯৫৮-এর লঙ্ঘন।

অবৈধ লেনদেনের মধ্যে ২০০৯ সালে ২ কোটি ৪৫ লাখ, ২০১০ সালে ৩ কোটি ২৬ লাখ, ২০১১ সালে ৩ কোটি ৪ লাখ, ২০১২ সালে ৪ কোটি ৬৯ লাখ, ২০১৩ সালে ৬ কোটি ৪৭ লাখ, ২০১৪ সালে ৬ কোটি ৬ লাখ এবং ২০১৫ সালে ৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বেশি ব্যয় দেখিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. নাজিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আইডিআরএ’র নির্দেশনা এলে অডিট করবো। আমাদের সব তথ্য আইডিআরএ’র কাছে রয়েছে। যখন ইচ্ছা তারা ব্যবস্থা নিতে পারে।

এর আগে গ্রাহকের দাবি পূরণ নিয়ে গড়িমসি করে কোম্পানিটি। এ কারণে কোম্পানির নিয়োজিত জরিপকারী সোনালি সার্ভের নির্ধারিত ২৩ হাজার টাকার বিপরীতে কোম্পানিকে বিমা দাবি ক্ষতি পরিশোধ করতে হয়েছে ১৬ লাখ ৪২ লাখ টাকা।
 
জানা গেছে, ২০০৮ সালে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানটি সর্বশেষ বছর তাদের শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে ৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। বর্তমানে প্রতিটি শেয়ারের দাম রয়েছে ১৭ টাকা ৪০ পয়সা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৬
এমএফআই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।