নাটোর: নাটোরের গোপালপুর নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল ও নাটোর চিনিকলে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) থেকে ২০১৬-২০১৭ মৌসুমের আখ মাড়াই শুরু হবে।
মিল দু’টিতে এবার চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩২ হাজার মেট্রিক টন।
এ বছর আখ ক্রয় কেন্দ্রগুলোতে ডিজিটাল যন্ত্রের (ওজন কাঁটা) সাহায্যে চাষিদের কাছ থেকে পাওয়া আখের ওজন দেওয়া হবে। মিলজোন এলাকায় এবার অবৈধ পাওয়ার ক্রাশারের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে অভিযান চালানো হচ্ছে।
নাটোর চিনিকল সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৬০ হাজার টন আখ মাড়াই করে ১২ হাজার টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৮ অক্টোবর উদ্বোধনের পর ১০৭ দিবস এ মাড়াই কার্যক্রম চলবে।
এবার আখ থেকে চিনি আহরণের হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭.৫ শতাংশ। মিলগেট ছাড়াও চিনিকলের ৫১টি কেন্দ্রে কৃষকদের কাছ থেকে ১১০ টাকা মণ দরে আখ ক্রয় করা হবে।
আখ সংকটের কারণে গত মৌসুমে চিনিকলটি ১ লাখ ৭ হাজার টন আখ মাড়াই করে মাত্র ৭ হাজার ৪৪ টন চিনি উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছিল। তবে চলতি মৌসুমে কৃষকদের আখ চাষে সহযোগিতার জন্য নাটোর চিনিকল এলাকার প্রায় ৫ হাজার আখ চাষিকে সাড়ে ৬ কোটি টাকার বীজ, সার ও সেচ খাতে ঋণ প্রদান করা হয়েছে।
চিনিকল এলাকায় জমিতে বর্তমানে দুই লাখ ৫০ হাজার টন পরিমাণের আখ রয়েছে। উৎপাদিত এসব আখের বেশির ভাগ চিনিকলে যাবে। এর বাইরে বীজ হিসেবে ব্যবহার ছাড়াও উৎপাদিত আখের একটি অংশ গুড় উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়।
গুড় উৎপাদনে ব্যবহৃত অবৈধ পাওয়ার ক্রাশার বন্ধে প্রশাসনের সহযোগিতায় ইতোমধ্যে দুইটি অভিযান পরিচালনা করে ৩১টি পাওয়ার ক্রাশার জব্দ করা ছাড়াও ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযুক্তদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় ও কারাদণ্ড দিয়েছেন।
চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহিদুল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে এলাকায় বিদ্যমান ৯০টি পাওয়ার ক্রাশার বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আখের জমির জলাবদ্ধতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হলে চলতি মৌসুমে নাটোর চিনিকলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।
অপরদিকে, গোপালপুর নর্থ বেঙ্গল চিনিকল সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ১৪৭ কার্য দিবসে ২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ২০ হাজার ৬২৫ মেটিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
চিনি আহরণের হার ধরা হয়েছে শতকরা ৮.২৫ শতাংশ। এ বছর মাঠে ২১ হাজার ২৮৮ একর জমিতে আখের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের নিজস্ব জমিতে আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৩৩৮ একর এবং আখ চাষিদের ১৮ হাজার ৯শ’ আখের আবাদ হয়েছে।
এ থেকে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬৮৯ মেট্রিক টন আখ উৎপাদন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এছাড়া নর্থ বেঙ্গল চিনিকল এলাকার প্রায় ৭ হাজার কৃষককে ৭ কোটি টাকা ইক্ষু ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
নর্থ বেঙ্গল চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. আব্দুল আজিজ বাংলানিউজকে জানান, এ বছর চিনিকল এলাকায় কোন পাওয়ার ক্রাশার কার্যক্রম পরিচালনা করছে না। আখ ক্রয় কেন্দ্রগুলোতে ডিজিটাল ওজন যন্ত্রে আখের ওজন দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, গত মৌসুমে ১ লাখ ৬৮ হাজার টন আখ মাড়াই করে ১০ হাজার ৬৩৫ টন চিনি উৎপাদন করে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়েছিল। তবে চলতি মৌসুমে চিনিকলটি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সক্ষম হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৬
আরএ