সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ): হলুদ রঙের গেন্ডারি আখ চাষ করে এবার সাফল্যের মুখ দেখছে সাটুরিয়ার আখচাষিরা। এই আখ চাষ করে লাভবান হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে।
বোম্বাই, গেন্ডারি, মিশ্রি দানা, চায়না বোম্বাই, লাল দানা জাতের আখ বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে এ বছর স্বাবলম্বী সাটুরিয়ার কৃষকরা। অল্পপুজি এবং আখের সঙ্গে অন্য ফসল চাষ করে অধিক লাভবান হওয়াতে উপজেলায় দিন দিন এ আখ চাষ বেড়েই চলছে।
সাটুরিয়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে জানান, উপজেলায় এ বছর আখের আবাদ হয়েছে ৪ হেক্টর জমিতে। উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে আখ চাষ হলেও সাটুরিয়া সদর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়।
সাটুরিয়া উপজেলা সদরের পাড়াগ্রাম ও রাধানগর গ্রামে সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষকরা ব্যস্ত জমি থেকে আখ কাটতে। এখান থেকে কাটা আখ স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়। আর বাকিগুলো সাভারের আশুলিয়ার বাইপাল আখের আড়তে বিক্রি করা হয়।
রাধানগর আখ চাষি ইউসুফ আলী বাংলানিউজকে জানান, ১৭০ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছেন তিনি। তিনিসহ আরও ৪ শ্রমিক শুধুমাত্র আখ কাটতে কাজ করছেন এখন। জমিতে চাষ করা হয়েছে বোম্বাই, গেন্ডারি, মিশ্রি দানা, চায়না বোম্বাই, লাল দানার আখ। তিনি ১৭০ শতাংশ জমিতে কয়েক বছর ধরে আখ চাষ করে আসছেন। আখের চারা রোপণের ৪/৬ মাস পর এ তা বিক্রির উপযোগী হয়। এর মধ্যে আখের চারার মধ্যেই মশুরি ডাল ও মুলা আখের সঙ্গে চাষ করেন তিনি। আখের সঙ্গে ৫০ হাজার টাকার মশুরি ডাল ও মাত্র ১৫ শতাংশ জমিতে আগাম মুলা চাষ করে ২৫ হাজার টাকা বিক্রি করছে।
তিনি বলেন, এক মৌসুমে আখ চাষে প্রতি শতাংশে খরচ হয় ১ হাজার টাকা। তার হিসাব অনুয়ায়ী ১৭০ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করে খরচ হয় এক লাখ ৭০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত বিক্রি করেছেন ৫ লাখ টাকা। আরও প্রায় ৩ লাখ টাকার আখ জমিতে রয়েছে।
আখ চাষি জাহানারা বেগম বাংলানিউজকে জানান, তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে আখ চাষ করছেন। নিজের জমি নেই স্বামী ও ছেলেকে নিয়ে জমি বর্গা নিয়ে এ বছর ৪৫ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছেন। অন্য বারের তুলনায় লাভের পরিমাণ এবার বেশি।
চর সাটুরিয়ায় আখ চাষি আবুল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, তিনি ২২ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছেন। ফলন হয়েছে ভালো, খরচ হয়েছে সব মিলিয়ে ৩০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত ১ লাখ টাকার আখ বিক্রি হয়েছে। আরও লাখ টাকার আখ জমিতে রয়েছে।
আখ চাষি জাহানারা বেগম, ইউসুফ আলী, আবুল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে আখ চাষ করলেও কোনো দিনই উপজেলা কৃষি অফিসের কোনো কর্মকর্তারা তাদের আখ চাষের পরামর্শ দেন নি। আখে পোকা ধরলে নিজেদের অভিজ্ঞতা দিয়েই কীটনাশক কিনে তা প্রয়োগ করেন। সরকারি বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৬
পিসি/