ঢাকা: রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলো ভরে উঠেছে শীতের সবজিতে। সবজির সরবরাহ বাড়ায় কমছে সবজির দাম।
নতুন সবজি বাজারে আসায় স্বাভাবিক দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান বাজার করতে আসা ক্রেতারা।
শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে এ চিত্র লক্ষ্য করা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, শীতকালীন সবজিসহ বিভিন্ন সবজির দাম গত সপ্তাহে যে দাম ছিলো তা স্থিতিশীল রয়েছে। দুই একটি সবজিতে কেজিতে ৫ টাকা করে কমতে দেখা গেছে। বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান বিক্রেতারা।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতকালীন নতুন সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, বেগুনসহ প্রতিটি সবজির দাম গত সপ্তাহে যা ছিল তাই রয়েছে। কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা কমেছে। তবে কাঁচামরিচের দাম আরো কমেছে। প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকা।
ফুলকপি, বাঁধাকপি ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুলা ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। সিম ৫০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহেও এই দামে বিক্রি হয়েছে। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা করে।
এছাড়া বাজারগুলোতে অন্যান্য ঢেঁড়স, রেখা, ঝিঙা, জালি, করলা, বরবটি, ধুন্দল ও পটল বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা করে।
বেগুন প্রতি কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কচুরমুখি ৩০ টাকা, ধনেপাতা ২৫০ টাকা,পেঁপে ২০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, কাঁচাকলা ৩০ টাকা হালি লেবু ২৫ টাকা হালি, মিষ্টিকুমড়া (ছোট) ৩০ টাকা পিচ।
এ সবজিগুলোতে গত সপ্তাহে ৫ থেকে ১০ টাকা করে কমেছে বলে বিক্রেতারা জানান। তবে বাজারে নতুন আলু আসলেও দাম কমেনি। পুরান আলু প্রতিকেজি আলু ৩০-৩২ টাকা। নতুন আলু বাজারে পাওয়া যাচ্ছে ১০০ টাকা করে।
পেঁয়াজ-রসুনের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি পেঁয়াজ (দেশি) ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। আমদানি পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৫ টাকা। রসুন ১২০ থেকে ১৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া, বাজারে শীতের শাকের দাম একটু বেশি দেখা যায়। লাল শাক, পালং শাক, সরিষা শাক, মুলা শাক ও লাউ শাক পাওয়া যাচ্ছে। শাকের আঁটি ১৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা করে পাওয়া যাচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা খোকন বাংলানিউজকে জানান, কয়েকদিন আগে নিম্নচাপের কারণে শীতের সবজি সরবরাহ কম ছিল। এ জন্য বাজারে দুই দিন সবজির দাম বেশি গেছে। এখন আবার ঠিক হয়ে গেছে। দিন দিন এ দাম আরো কমতে থাকবে বলে জানান তিনি।
সবজিতে এক সপ্তাহ আগের দাম স্থিতিশীল রয়েছে জানান এই বিক্রেতা।
বাজার করতে আসা ক্রেতা আসাদুল হক খান বাংলানিউজকে বলেন,বাজারে সবজির দাম স্বাভাবিক আছে আমার কাছে কম মনে হচ্ছে না। প্রথম প্রথম সবজি যখন উঠলো ৮০ টাকা ১০০ টাকার নিচে সবজিতে হাত দেওয়া যেত না। এখন ফুলকপি,বাঁধাকপি ও সিমের দাম কমেছে। তবে নতুন আলুর দাম ১০০ টাকার নিচে আসছে না জানান তিনি।
এদিকে,বাজারে মোটা চালের দাম কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা কমেছে বলে ক্রেতারা জানান।
কারওয়ান বাজারের চালের আড়তদার দোলোয়ার হোসেন জানান, মোটা চালের দাম বস্তা প্রতি (৫০ কেজি) ৮০ থেকে ১০০ টাকা কমেছে। গুটি স্বর্ণ, হ্যাচকা নাজির, পাইজাম ও আটাশ ১ হাজার ৯০০ টাকা। যা কয়েকদিন আগে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া বাজারে সাদা গুটি ১৭০০ টাকা বস্তা বিক্রি হচ্ছে। চিকন মিনিকেট ও নাজিরশাইল ২২'শ থেকে ২৪ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে বয়লার ও লেয়ার মুরগির দাম ১০ টাকা কমেছে। ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে বয়লার, লেয়ার ১৬০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিলো ১৪০ ও ১৭০ টাকা করে।
এছাড়া আকারভেদে দেশি মুরগি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৪০ টাকা। পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ১৫০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা।
গরু ও খাসির মাংসের অপরিবর্তিত রয়েছে। (বাজারভেদে) ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭২ টাকা। মসুর ডাল (দেশি) মানভেদে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, (আমদানি) মানভেদে ১০০ থেকে ১৩০ টাকা। মুগ ডাল (মানভেদে) ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানান বিক্রেতারা।
বাজারে মাছের দাম কমেছে বলে দাবি করেছে বিক্রেতারা। তবে ক্রেতাদের দাবি না কমলেও স্বাভাবিক রয়েছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, রুই মাছ (ছোট) ১৮০ টাকা, রুই (বড়) ২২০ টাকা কেজি। ছোট কাতলা ১৪০-২৫০ টাকা। চিংড়ি (ছোট) ৪০০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ইলিশ ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৬
এমসি/বিএস