রংপুর: রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার আঁকাবাঁকা মেঠোপথের দু’পাশে মাঝে মাঝেই চোখে পড়ছে সবুজ রংয়ের ধনিয়ার ক্ষেত। এবার ধনিয়ার ভালো ফলনে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে হাসি।
কৃষকরা জানান, ধান,পাট,গমসহ বিভিন্ন চাষে খরচ বেশি কিন্তু লাভ কম। অথচ কম খরচে বেশি লাভ পাওয়া যায় ধনিয়া চাষে। তাই ধনিয়া চাষ করেন কৃষকরা।
এছাড়া একই জমিতে পরপর ৪ বার ধনিয়া চাষ করা যায় বলেও জানালেন তারা। তাই এ চাষে ঝুঁকে পড়ছেন কৃষকরা।
জানা গেছে, এক বিঘা জমিতে ৩০-৩৫ মন ধনিয়া হয়। ৩০ হাজার টাকা খরচ হলেও বিক্রি করা যায় দেড় লাখ টাকায়। ধনিয়া ৪০দিনের ফসল। ৪০দিনে এর চাষ করে বিক্রি করা যায়। এক জমিতে কয়েক বার ধনিয়া চাষ করা যায়।
মিঠাপুকুর উপজেলার রানীপুকুর ইউনিয়নের দৌলত রসুলপুর গ্রামের মোজাদ্দেদ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন,‘মোর যত জমি আছে সউগ জমিতে ধনিয়া আবাদ করছো। ৫ বিঘা জমিতে ধনিয়া আবাদ করি ২ লাখ টাকা লাভ করছো। এ ধনিয়া আবাদে খরচ কম,ফলন ভাল,লাভ বেশি। ’
দৌলত রসুলপুর গ্রামের কৃষক আবদুল হামিদ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন,আমাদের এই এলাকায় রবি শস্যের আবাদ বেশি। রবি শস্য আবাদ করে কৃষক টাকার মুখ দেখছেন। ধান,পাট,গমের আবাদ করা ছেড়ে দিয়েছে এখন এলাকার চাষিরা। শত শত বিঘা জমিতে এসব রবি শস্য আবাদ করে থাকেন তারা।
তিনি আরও বলেন, চার বিঘা জমিতে বিভিন্ন রকমের রবি শস্য আবাদ করেন তিনি। এর মধ্যে ধনিয়া চাষ করে অনেক লাভবান হয়েছেন তিনি। ধনিয়া স্বল্প সময়ের ফসল। বাজারে ধনিয়ার চাহিদা অনেক বেশি তাই এর জন্য ভাল দাম পেয়ে থাকেন কৃষকরা।
প্রতিদিন এ এলাকা থেকেই ১০/১২ ট্রাক ধনিয়া ঢাকায় নিয়ে যান পাইকাররা। জমিতে পাইকাররা কেজি প্রতি ২শত টাকায় ধনিয়া ক্রয় করে থাকেন। আর তারা বাজারে এ ধনিয়া তিন থেকে সাড়ে তিনশত টাকায় বিক্রি করেন।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপপরিচালক স.ম.আশরাফ আলী বাংলানিউজকে জানান, এ অঞ্চলের মানুষ রবি শস্য চাষ করে অনেক লাভবান হয়েছেন। এক জমিতে বিভিন্ন ভাবে বছরে চার বার রবি শস্য চাষ করা যায়। এক বিঘা জমিতে ধনিয়া চাষ করে কৃষক যে লাভ পেয়ে থাকেন অন্য কোন ফসলে এত ভাল লাভ তারা পান না।
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় এসব রবি শস্য চাষ বেশি হয়ে থাকে। শুধু ধনিয়াই নয় আরও অনেক রকমের সবজি চাষ করেন ওই এলাকার কৃষকরা। জেলায় এবার ১শ‘ ৫০ হেক্টর জমিতে ধনিয়া চাষ করা হয়েছে বলে জানান স.ম.আশরাফ আলী
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪,২০১৬
আরআই