মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) নবনির্বাচিত কমিটির নেতারা বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে দেখা করে এসব প্রস্তাবনা দেন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আবুল কাশেম খান উত্থাপিত প্রস্তাবগুলো হলো- দ্রুত উন্নত অবকাঠামো নির্মাণ, সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপুল বিনিয়োগ, গ্যাস ও কয়লা খাতের উন্নয়নে বাপেক্সকে শক্তিশালী করা, ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডোরের দুই পাশে স্যাটেলাইট সিটি ডেভেলপমেন্ট, পাটকে গুরুত্বপূর্ণ খাত ঘোষণা ও ‘এক উপজেলা এক পণ্য’ লক্ষ্য স্থির, পণ্যের বহুমুখীকরণ ও তৈরি পোশাক খাতের ওপর থেকে নির্ভরযোগ্যতা কমানো, হালাল পণ্য সার্টিফিকেশন ব্যবস্থা চালু এবং এসএমই এর ওপর জোর দেওয়া।
অবকাঠামো উন্নয়নে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের যে বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে তাতে পিপিপি’র (পাবলিক-প্রাইভেট-পার্টনারশিপ) মাধ্যমে বিনিয়োগে আগ্রহী আছেন বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।
ডিসিসিআই’র সভাপতি বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঢাকা-রাজশাহী, ঢাকা-রংপুর, ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-সিলেট ফোরলেন সড়ক নির্মাণ, এলিভেটেড এক্সপ্রেস তৈরি, দ্রুতগামী এক্সপ্রেস ট্রেন চালু, নতুন বিমানবন্দর তৈরি, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হবে।
ঢাকার বাইরে শিল্প স্থাপন, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি ও স্যাটেলাইট সিটি নির্মাণে আয়কর মওকুফের উদ্যোগ নিলে ঢাকার ওপর মানুষের চাপ কমবে এবং বিকেন্দ্রিকরণ সহজ হবে বলেও মতামত দেন তিনি।
আবুল কাশেম খান বলেন, ‘পাট একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। আমরা ডিসিসিআই’র পক্ষ থেকে এক সময় পাট থেকে পাল্প (কাগজের মণ্ড) তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলাম। তখন ২০ শতাংশ পাট মণ্ড তৈরির কাজে ব্যবহার করা যেতো। এখন প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে তা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়’।
‘সরকার দেশের কাগজের বড় ক্রেতা। পরিবেশবান্ধব পাটের কাগজ সরকার ব্যবহার করলে এটি একটি বড় ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবে’।
দেশের জ্বালানি খাতের উন্নয়েনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, গ্যাস খাতের উন্নয়নে বাপেক্সকে আরো শক্তিশালী করা উচিত। একই সঙ্গে দেশের অব্যবহৃত কয়লা ব্যবহার ও ব্যবহারের উপায় নির্ধারণে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন বলেও জানান।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বে হালাল খাদ্যের গুরুত্ব রয়েছে। আমাদের দেশেও হালাল পণ্যের বাজার দেড় বিলিয়ন ডলারের। থাইল্যান্ড একটি অমুসলিম দেশ হয়েও বছরে ছয় বিলিয়ন ডলারের হালাল পণ্য মুসলিম দেশে রফতানি করে। আমরা একটি হালাল বডি তৈরি করে সার্টিফিকেশন ব্যবস্থা চালু করতে পারলেই আমাদেরও বছরে ৫ বিলিয়ন ডলারের রফতানি বাড়বে’।
ডিসিসআই সভাপতি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই পাশে বিজনেস করিডোর গড়া গেলে রফতানি কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। একইসঙ্গে বেসরকারি খাতে স্থাপিত অর্থনৈতিক জোনে বিনিয়োগে বিশেষ সুবিধা দিলে বিনিয়োগে গতি ফিরে আসবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ব্যবসায়ীদের এ প্রস্তাবগুলো বাস্তবসম্মত হওয়ায় দ্রুত বিবেচনায় নেবে সরকার। অবকাঠামো, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও জ্বালানি খাতে এরই মধ্যে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বাণিজ্য বাড়াতে সকল চেম্বার, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্রুতই একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৭
আরএম/এএসআর